ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শাহরিয়ার কবির

বাংলাদেশে ব্লগার হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশে ব্লগার হত্যা

সভ্যতার ইতিহাসে যখন থেকে ধর্মের আবির্ভাব হয়েছে, নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী মানুষ ঈশ্বর, অলৌকিকতা, আত্মা, পরকাল, পুনর্জন্ম, স্বর্গ-নরক ইত্যাদি আস্তিক্যবাদী বিশ্বাস নির্মাণ করেছে- তখন থেকে এসব বিশ্বাস নাকচ করে ইহ জাগতিক নাস্তিকতার চর্চাও মানবসভ্যতার অন্তর্গত। ভারতবর্ষে সনাতন হিন্দু ধর্মের আদিগ্রন্থ ঋগবেদের সময়কাল থেকে ঈশ্বর-ভূত-প্রেত-পরকালে অবিশ্বাসীদের অস্তিত্বের প্রমাণ রয়েছে ঋষি বৃহস্পতির লুপ্তপ্রায় কিছু রচনায়। বৃহস্পতির অনুসারীদের চার্বাক বলা হতো। চার্বাক নামে একজন ঋষিরও উল্লেখ রয়েছে প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে। চার্বাক শব্দের মূল অর্থ হচ্ছে- চারু+বাক, অর্থাৎ যারা ভাল বা সুন্দর কথা বলেন। বৈদিক যুগ থেকে আস্তিক-নাস্তিকের যে দ্বন্দ্ব আমরা দেখেছি তার চূড়ান্ত রূপ ছিল শঙ্করাচার্যের অনুসারীদের নাস্তিক নির্মূল অভিযান। চার্বাকদের লোকায়ত দর্শন শুধু ভারতবর্ষ নয়, সমগ্র বিশ্বের জ্ঞান ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে। লোকায়ত দর্শনের প্রভাবে বাংলাদেশে এবং ভারতবর্ষেও ধর্মবিশ্বাস কীভাবে ইহ জাগতিক ও বস্তুবাদী হয়েছে সে বিষয়ে অধ্যাপক আহমদ শরীফের গবেষণা প্রণিধানযোগ্য। এ বিষয়টি আমার ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে’ গ্রন্থে (প্রকাশক : চারুলিপি, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১৫) বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে। এই গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছিলাম- ‘মানুষের জানার আগ্রহ যেমন ঈশ্বর বা ধর্ম সৃষ্টি করেছে, একইভাবে অর্জিত জ্ঞান মানুষকে যুক্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ধর্মবিশ্বাস থেকে মুক্ত থাকতে সাহায্য করেছে। আস্তিক ও নাস্তির এই দ্বন্দ্ব প্রথম বিধৃত হয়েছে ঋগবেদের যুগে। সর্ব সিদ্ধান্তসমগ্রে ঋষি বৃহস্পতি দেবপূজার সমালোচনার পাশাপাশি মন্দির নির্মাণেরও সমালোচনা করেছেন। বেদের বহু সূত্র তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। বৃহস্পতির শিষ্য চার্বাক মুনি ঈশ্বর, পরকাল, স্বর্গ, নরক, পাপ, পুণ্য, প্রার্থনা সবকিছু প্রত্যাখ্যান করে যে লোকায়ত দর্শন সূত্রায়ন করেছেন এটিই বিশ্বের প্রথম নাস্তিক বা ইহ জাগতিক ধারণা। ... ‘চার্বাকের অনুসারীরা প্রতিনিয়ত ধর্মের ধ্বজাধারীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের মূল রচনা ধ্বংস করা হয়েছে, তারপরও শ্রুতি থেকে দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ শতকে সঙ্কলিত সূত্রগুলো ইহ জাগতিকতা অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। আবুল ফজলের ‘আইনী আকবরি’তে মুঘল সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে চার্বাকপন্থীদের প্রশাসনিক ও বিচারিক দক্ষতার উল্লেখ রয়েছে।’ ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারকারীরা সামরিকভাবে পরাজিত হলেও রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে যে পরাজিত হয়নি তার প্রমাণ হচ্ছে- মুক্তিযুদ্ধোত্তর ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ অধিকাংশ সময় শাসিত হয়েছে ধর্মব্যবসায়ী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দ্বারা। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ নিছক স্বাধীনতার যুদ্ধ ছিল না। স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি কী হবে তাও নির্ধারিত হয়েছিল সেই সময়, যা ’৭২-এর সংবিধানে রাষ্ট্রের চার মূলনীতি হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। ১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর জেনারেল জিয়ার শাসনকাল থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ শক্তির বিভাজন বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রকট হয়েছে। ১৯৯২-এ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে সূচিত মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী নাগরিক আন্দোলন ছিল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের বিভাজনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ। আমরা বলেছি, বাংলাদেশে সরকার বা বিরোধী দলে যারাই থাকুক তাদের দায়বদ্ধ থাকতে হবে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের স্বীকৃত ইতিহাস ও চেতনার প্রতি। মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করতে না পেরে জামায়াত-বিএনপির নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি ধর্মের প্রতি সাধারণ মানুষের দুর্বলতাকে পুঁজি করে আস্তিক-নাস্তিকের বিভাজন অবলম্বন করেছে। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের প্রধান সহযোগী জামায়াতে ইসলামী মুক্তিযুদ্ধের সময় যেভাবে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী বাঙালীদের ‘ইসলামের দুষমন’, ‘কাফের’, ‘ভারতের এজেন্ট’, ‘দুষ্কৃতকারী’ ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে হত্যা করেছে- জাহানারা ইমামের আন্দোলনের পুরোগামী নেতাদেরও মৌলবাদী দুর্বৃত্তরা একই ভাষায় হত্যার প্ররোচনা দিয়েছে। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাহানারা ইমামের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বেড়ে ওঠা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের তরুণ লেখকরা যাদের ‘ব্লগার’ বলা হয় তাদের এ্যাক্টিভিস্টদের নেতৃত্বে সূচিত গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক ও সমর্থকদের মৌলবাদী ঘাতকরা ‘নাস্তিক’, ‘মুরতাদ’, ‘কাফের’ বলে হত্যা করছে। ২০১৫ সালে তারা হত্যা করেছে অভিজিত, বাবু, অনন্ত, নীলাদ্রি ও দীপনকে। এই নিহত তরুণ লেখক-প্রকাশকদের প্রধান ‘অপরাধ’ ছিল তারা মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানের চর্চা করতেন, সকল মানুষের সমান অধিকারের কথা বলতেন, ’৭১-এর গণহত্যাকারী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছিলেন এবং মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাঘা যতীনের মৃত্যুশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য যখন কলকাতা গিয়েছিলাম তখন দুজন বাংলাদেশী ব্লগারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, যারা জঙ্গী মৌলবাদীদের হুমকি ও আক্রমণের কারণে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছে। এদের একজন আবদুল্লাহ ছিল মানবাধিকার সংগঠন ‘মাসুম’-এর আশ্রয়ে। রানার তখন পর্যন্ত কোন আশ্রয় মেলেনি। আবদুল্লাহ লেখে ভাল, ওর কবিতার বইও বেরিয়েছে। দুজনের ‘অপরাধ’ ছিল তারা অভিজিত হত্যার নিন্দা করেছিল, ধর্মের নামে ভণ্ডামির বিরুদ্ধে লিখেছিল। আবদুল্লাহর একটি লেখা তসলিমা নাসরিন ‘লাইক’ দিয়েছিলেন, তারপর থেকেই ওকে হুমকি দিয়ে অনুসরণ করছিল ঘাতকরা। বাবা-মার একমাত্র ছেলে আবদুল্লাহ মায়ের অনুরোধে ওর লেখার জন্য ক্ষমাও চেয়েছিল। তারপরও ঘাতকরা ওকে ছায়ার মতো অনুসরণ করেছে। আবদুল্লাহ কলকাতায় গিয়েও ভয়মুক্ত হতে পারেনি। শেষবার গত নবেম্বরে আমাকে জানিয়েছিল সেখানেও নাকি জামায়াতীরা ওকে নজরে রেখেছে। গত ডিসেম্বরে (২০১৫) স্টকহোমে পেন ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের আমলে মুক্তচিন্তার ওপর মৌলবাদীদের উপর্যুপরি হামলায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সুইডিশ পেন ক্লাব গত বছর বাংলাদেশের চারজন ব্লগারকে রাজনৈতিক আশ্রয় পেতে সহযোগিতা করেছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের ১০-১২ জন ব্লগার প্রাণহানির আশঙ্কায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করেছেন, যা সরকারের ‘জঙ্গীবাদের প্রতি শূন্য সহিষ্ণুতা’র অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমি সব সময় বলি দেশ ছেড়ে চলে গেলে সমস্যার সমাধান হবে না, দেশের ভেতরে থেকে একজোট হয়ে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়তে হবেÑ কিন্তু ব্লগাররা যখন হুমকি প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে যায়, বেশিরভাগ সময় তাদের বলা হয় ‘কেন এসব লেখেন?’ থানা উল্টো গ্রেফতারের ভয় দেখায়। ২০১৩ সালে হেফাজতের অভিযোগের কারণে ব্লগারদের গ্রেফতার করা হয়েছে অথচ আমাকেসহ অধ্যাপক অজয় রায়, মুনতাসীর মামুন, জাফর ইকবাল ও ইমরান সরকারকে হেফাজতের যেসব নেতা হত্যার হুমকি দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ নিয়ে ২০১৩ সালেই লিখেছিলাম- ‘ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে সরকার ব্লগারদের গ্রেফতার করেছে। আমি মনে করি এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটা আমাদের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার যেমন বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বিবেকের স্বাধীনতার পরিপন্থী। আমরা বার বার বলে আসছি ব্লাশফেমির ধারণাটি এসেছে ইহুদী, খ্রীস্টান ধর্ম থেকে। ইসলাম ধর্মানুযায়ী কেউ যদি আল্লাহ, রসুল বা ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করেন তার কোন জাগতিক শাস্তি কুরআনের কোথাও রাখা হয়নি। স্বয়ং আল্লাহ তাকে সেই শাস্তি দেবেন। তাহলে আল্লাহ যে শাস্তি দেবেন সেটা যদি বান্দা নিজের হাতে তুলে নেয় সেটাই তো ধর্মের অবমাননা! কতগুলো শাস্তি আছে যেগুলো জাগতিক শাস্তি, কুরআনে তার উল্লেখ আছে। কিন্তু ধর্ম অবমাননার অভিযোগের শাস্তি আল্লাহ নিজের হাতে রেখে দিয়েছেন। আমি অন্তত দুই শ’ আয়াত দেখাতে পারব যেখানে পবিত্র কুরআনে অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীলতা এবং ধর্ম অবমাননার শাস্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে। ব্লাশফেমির ধারণাটি ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের ফৌজদারি দ-বিধিতে আছে কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে যদি আঘাত দেয়া হয় তাহলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সেই অভিযোগে সরকার কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে, কিন্তু কাউকে রাতের অন্ধকারে গ্রেফতার করা এবং তাদের টেলিভিশনের সামনে হাজির করাটা একেবারে নজিরবিহীন। পাকিস্তানে আমরা দেখেছি ব্লাশফেমির আইনে যাদের গ্রেফতার করা হয় তাদের ক্যামেরার সামনে হাজির করা হয় না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা না গেলে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। তাই সেখানে নিয়ম হয়েছে গ্রেফতারের পর তাদের চেহারা দেখানো যাবে না। কিন্তু আমাদের এখানে উল্টোটা করা হয়েছে। ‘ব্লগারদের গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে সরকার মৌলবাদীদের দাবির কাছে নতিস্বীকার করেছে। কারণ তাদের গ্রেফতারের জন্য হেফাজতে ইসলাম সরকারকে চাপ দিয়েছিল। তাদের এসব দাবি উঠেছে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা সাঈদীর গ্রেফতারের পর থেকে। সরকার তাদের সন্তুষ্ট করার জন্য এটা করেছে। মৌলবাদের সঙ্গে আপোস করলে তার ফল কখনও শুভ হয় না। আস্কারা দেয়া হলে তাদের ধৃষ্টতা বেড়ে যায়। এখন তো তারা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে নাস্তিক বলছে। গ্রেফতার করা উচিত ছিল সেই হেফাজতের নেতাদের যারা বাংলাদশে বসে আমাদের সংবিধানের বিরুদ্ধে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে বেলাগাম কথা বলছেন। রাষ্ট্রের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোন অবস্থান নিয়েছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা তোফায়েল আহমেদও বলেছেন, সরকার দুই নৌকায় পা রেখে চলতে পারে না। ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা সংবিধানে রয়েছে কতগুলো বিধিনিষেধ সাপেক্ষে। কেউ কেউ বলছেনÑ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা যাবে না। তেমনি আমিও বলতে পারি আমার রাজনৈতিক স্বাধীনতাকে আঘাত করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যদি হয় আমার আদর্শ ও রাজনৈতিক অনুভূতি এটাকে আপনি কিভাবে আঘাত করবেন? কিন্তু যুদ্ধাপরাধীরা সেটাই করছে। কাজেই যদি ব্যবস্থা নিতে হয় তাহলে সবার বিরুদ্ধে নিতে হবে। আল্লাহ রসুলের সমালোচনা যদি নিন্দনীয় হয়, অন্য ধর্মের সমালোচনাও সমান নিন্দনীয়, কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণার দাবিও নিন্দনীয়। এসব নিন্দনীয় কাজের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনের বিধান অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। পাকিস্তানে আমরা এমনও দেখেছি জামায়াতের বিরুদ্ধে কথা বলাটাই তারা ব্লাশফেমি বলে ধরে নিয়েছে। জামায়াত বলে তারা আল্লাহর দল, কাজেই তাদের বিরুদ্ধে কথা বলা মানেই আল্লাহর বিরুদ্ধে কথা বলা। আমরা পরিষ্কারভাবেই বলি এগুলো ইসলামবিরোধী আকিদা। আমাদের কথা হচ্ছে- রাষ্ট্রকে ধর্মীয় ব্যাপারে একেবারেই নিরপেক্ষ থাকতে হবে।’ অভিজিতদের যারা ‘নাস্তিক’ আখ্যায়িত করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তারা নিজেদের ‘আস্তিক’ দাবি করলেও তাদের একমাত্র পরিচয় হচ্ছে- মৌলবাদী সন্ত্রাসী ঘাতক। জামায়াত-হেফাজতের মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা ইসলামের নামে নিরীহ মানুষদের হত্যা ও সন্ত্রাসসহ রাষ্ট্রবিরোধী যাবতীয় অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে অক্ষমতা বাংলাদেশ ও বাঙালী জাতির পাঁচ হাজার বছরের সভ্যতার ইতিহাস ও মানবিকতার ঐতিহ্যকে বিপন্ন করে তুলেছে। ৩১ জানুয়ারি ২০১৬
×