ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রি-ম্যান আবুল হোসেনের চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

ট্রি-ম্যান আবুল হোসেনের চিকিৎসায় মেডিক্যাল বোর্ড

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে প্রথম ট্রি-ম্যান রোগে আক্রান্ত ( হিউম্যান পারপোরিয়াস ভাইরাস) খুলনা জেলার পাইকগাছার আবুল হোসেনের (২৬) চিকিৎসার জন্য ছয় সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ খান মোঃ আবুল কালামকে প্রধান করে এ মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন, ঢামেক বার্ন এ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়ক ডাঃ সামন্ত লাল সেন, অধ্যাপক ডাঃ সাজ্জাদ খন্দকার, অধ্যাপক ডাঃ রায়হান আওয়াল, অধ্যাপক ডাঃ খান আবুল কালাম ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ এমদাদুল হক। ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী প্রফেসর ডাঃ সামন্ত লাল সেন জনকণ্ঠকে জানান, রবিবার আবুল হোসেনের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তার চিকিৎসা করা হবে। হিউম্যান পারপোরিয়াস ভাইরাসে আক্রান্ত এ রোগীর সংখ্যা পৃথিবীতে মাত্র তিনজন। বর্তমানে তিনি ৫১৫ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন। তার হাতে ও পায়ে গাছের শেকড়ের মতো মাংসপেশী গজিয়েছে। সামন্ত লাল সেন জানান, এ রোগ সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই। এটা সাধারণত ট্রি-ম্যান নামে পরিচিত। এর আগে রোমানিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় এ রোগে আক্রান্ত মাত্র দু’জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। আর বাংলাদেশে আবুল হোসেনই প্রথম। হিউম্যান পারপোরিয়াস ভাইরাসের কারণে এ রোগ হয়। গত ১০ বছর যাবত আবুল হোসেন এ রোগে ভুগছেন বলে জানান। উল্লেখ্য, বিরল এক রোগে আক্রান্ত খুলনার পাইকগাছা থানার সরলবাতিখালি গ্রামের মানিক বাজনাদারের ছেলে আবুল হোসেনকে (২৬) ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বার্ন ইউনিটে আনেন তার মা আমেনা ও বড় বোন আদুরি। পরে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করে নেন। ট্রি-ম্যান রোগী আবুল হোসেন আট ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। ঘরে রয়েছে তাহেরা নামে এক কন্যা সন্তান। ট্রি-ম্যান রোগী আবুল হোসেন জানান, ১০ বছর আগে হাতে আঁচিলের মতো দেখা দেয়। প্রথমে এটাকে কোন গুরুত্বই দেননি। কিন্তু ক্রমেই এগুলো বড় হতে থাকলে তিনি একাই কাঁচি দিয়ে কাটতেন। পাঁচ বছর আগে এগুলো ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে থাকে। পেশায় ভ্যানচালক আবুল জানান, স্থানীয় ডাক্তারদের কাছ থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। কাজ না হওয়ায় কলকাতায়ও ডাক্তার দেখিয়েছি। ৫ থেকে ৬ বার কলকাতার এস কে বাউনি ক্লিনিকে নিয়মিত যেতাম। অবস্থার কোন উন্নতি না হওয়ায় ডাক্তাররা বলেন, ওষুধে কাজ হবে না সার্জারি করাতে হবে। এ পর্যন্ত চিকিৎসা করাতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখন আর খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আমি সুস্থ হতে চাই। খেটে খেতে চাই। অসহ্য যন্ত্রণায় ভুগছেন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এই পাঁচ বছর ধরে অন্যের ওপর নির্ভর করে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে প্রায় সকল কাজ করতে হচ্ছে। সকলের কাছে একটাই আবেদন, আমি সুস্থ হতে চাই। আপনারা আমাকে সাহায্য করুন।
×