ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এস এম ইমরান হোসেন

৫ বছরে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগ

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

৫ বছরে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগ

২৪ জানুয়ারি। টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী দিন। সকাল থেকেই টান টান উত্তেজনা। বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা মিলে সকাল থেকেই নানা ধরনের প্লাকার্ড এবং বেলুন নিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালির জন্য প্রস্তুত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এলেই শুরু হবে র‌্যালি। যথাসময়ে এলেন মাননীয় উপাচার্য এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ফরিদ উদ্দীন আহমেদ এবং বিভাগের চেয়ারপার্সন প্রফেসর ড. এজেএম শফিউল আলম ভূইয়া। শুরু হলো আনন্দ র্যালি। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে র‌্যালিটি শেষ হয় টিএসসিতে এসে। বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। মূল অনুষ্ঠানের শুরুতেই ফুল দিয়ে বিদায় জানানো হয় সদ্যসমাপ্ত মাস্টার্স দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এবং সেই সঙ্গে ফুলেল অভ্যর্থনা জানানো হয় সম্মান তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষাথীদের। এরপর প্রধান অতিথি এবং বিশেষ অতিথিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ক্রেস্ট উপহার দেন বিভাগীয় চেয়ারপার্সন প্রফেসর ড. এজেএম শফিউল আলম ভূইয়া। প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তাঁর প্রধান অতিথির ভাষণে বলেন, ‘দেশের ক্রমবর্ধমান টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির জন্য দক্ষ এবং প্রশিক্ষিত পেশাজীবী তৈরির জন্য এই বিভাগটি তৈরি হয়েছে। আমি আশা করি তরুণ ছাত্ররা এই বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখবেন।’ সভাপতির বক্তব্যে বিভাগের চেয়ারপার্সন প্রফেসর ড. এজেএম শফিউল আলম ভূইয়া বলেন, ‘আমাদের বিভাগটি ক্রমান্বয়ে উন্নতি করছে। বিভাগ থেকে পাশ করে ছেলেমেয়েরা মূল ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে এবং অনেকেই বিভিন্ন দেশী এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন এই বিভাগেরই কোন এক শিক্ষার্থী প্রথম দেশের জন্য বয়ে আনবে অস্কার জয়ের গৌরব।’ এরপর বিভাগের ছাত্রদের পরিচালনায় নির্মিত ১৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রতিটি প্রদর্শনী শেষে বিপুল করতালির মাধ্যমে চলচ্চিত্রগুলোকে স্বাগত জানিয়েছেন দর্শকরা। সন্ধ্যায় ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিভাগের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে জমকালো এক সন্ধ্যা উপভোগ করে টিএসসিতে আগত দর্শকরা। সবার শেষে টিএসসির লন থেকে উড়িয়ে দেয়া বেশ কয়েকটি ফানুস। পরের দিন টিএসসির গেমস রুমে অনুষ্ঠিত হয় ‘ক্যারিয়ার ফেয়ার’। সেখানে বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা ছাড়াও ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের হেড অব নিউজ এবং হেড অব প্রোগ্রাম। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক মুন্নি সাহা, সাংবাদিক শাহনাজ মুন্নি, বাংলাভিশনের অনুষ্ঠান বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শামীম শাহেদ, এশিয়ান টিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান আমিনুল ইসলাম খোকন, চ্যানেল নাইনের অনুষ্ঠান প্রধান তানভীর খান প্রমুখ। সাংবাদিক এবং অনুষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে ক্যারিয়ার নিয়ে প্রাণবন্ত আড্ডায় মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। অতিথিরা ক্যারিয়ার বিষয়ক মূল্যবান পরামর্শ দেন শিক্ষার্থীদের। এরপরই শেষ হয়ে যায় বিভাগের দুই দিনব্যাপী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা। বর্তমানে বিভাগটিতে স্নাতক সম্মান শ্রেণীর তিনটি ব্যাচ এবং মাস্টার্স শ্রেণীর দুটি ব্যাচ অধ্যয়নরত। প্রতি ব্যাচে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৩০ জন। বর্তমানে বিভাগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অত্যাধুনিক রিসোর্স সেন্টার কাম সেমিনার লাইব্রেরী। যেখানে রয়েছে অত্যাধুনিক নানা ধরনের হাই রেজুলেশন ক্যামেরা এবং এডিটিং প্যানেলসহ দেশ বিদেশের টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র বিষয়ক নানা বিদেশী বইয়ের এক বিশাল আর্কাইভ। নির্মাণ কাজ চলছে একটি এনিমেশন ল্যাব এবং পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন স্টুডিওর। এই বিষয়ে বিভাগের চেয়ারপার্সন প্রফেসর ড. এজেএম শফিউল আলম ভূইয়া বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা খুব দ্রুতই আমাদের এই অত্যাধুনিক টিভি স্টুডিওর নির্মাণ কাজ শেষ করে বিভাগের তত্ত্বাবধানে একটি আইপি টিভি চালু করতে চাই। যেখানে বিভাগের শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে একটি টিভি স্টেশনের যাবতীয় কাজ শিখতে পারবে, যেটি পরবর্তীতে তাদের পেশাগত জীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।’ শুভকামনা রইল টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের প্রতি। বিভাগটি এগিয়ে যাক তার কাক্সিক্ষত সমৃদ্ধির লক্ষ্যে।
×