ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে গত সপ্তাহে (ডিএসই) লেনদেন ২৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ বা এক-চতুথাংশ কমেছে। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমার পাশাপাশি সেখানকার সব ধরনের মূল্য সূচকও কমেছে। সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সদ্য সমাপ্ত প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনের কারণে বেশ কিছু কোম্পানির দরে ওঠানামা দেখা গেছে। একইসঙ্গে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা এবং বিভিন্ন কোম্পানির ডিসেম্বর ক্লোজিংয়ের পর লভ্যাংশ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এক ধরনের স্থিতিবস্থা দেখা গেছে। ফলে শেয়ার কেনাবেচার আগের তুলনায় কমেছে। সার্বিকভাবে গত সপ্তাহে ডিএসইতে শেয়ার লেনদেন কমেছে ৭৮৯ কোটি ৪৭ টাকার। সমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৫২ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার। সমাপ্ত সপ্তাহে ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৮৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। ‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানির লেনদেন হয়েছে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। ‘জেড’ ক্যাটাগরির লেনদেন হয়েছে ১ দশমিক ৪১ শতাংশ। আগের সপ্তাহের চেয়ে গত সপ্তাহে ডিএসইতে শেয়ার লেনদেন কমেছে ৭৮৯ কোটি ৪৭ টাকার। সমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৫২ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৯৪১ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার। গত সপ্তাহে অর্থনীতি ও খাত সংশ্লিষ্ট খবরগুলোর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের কাছে উল্লেখযোগ্য ছিল ব্যাংকিং খাতের ঋণ-আমানত অনুপাত ৭০-এ আটকে থাকা, গত অর্থবছরে বস্ত্র খাতে মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানিতে ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে সরকারের সঞ্চয়পত্র ও বন্ডের বিক্রি বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৮৮ শতাংশ পেরিয়ে যাওয়া এবং একই সময়ে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ রফতানি থেকে বাংলাদেশের আয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়ানো। খাতভিত্তিক চিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, সপ্তাহ জুড়েই শেয়ার বাজারে লেনদেনে বস্ত্র খাতের প্রাধান্য ছিল। পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে লেনদেন তালিকায় এক নম্বরে উঠে আসে এ খাতের কোম্পানি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ডিএসইর মোট কেনাবেচার ২০ শতাংশই ছিল বস্ত্র খাত ঘিরে। এ তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশই ছিল এ খাতের কোম্পানিগুলোর অবদান। এর পরই ছিল বিদ্যুত ও জ্বালানি, ১০ শতাংশ এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত, ৯ শতাংশ। গত সপ্তাহে বাজার মূলধন সবচেয়ে বেশি বেড়েছে তথ্য প্রযুক্তি খাতের, ৪ দশমিক ৫ শতাংশ এবং খাদ্য ও বিবিধ খাতের ৪ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এর বাইরে শুধু সিরামিক ২ দশমিক ৩৭ এবং পাট খাতের বাজার মূলধন ১ দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছে। বিপরীতে বাজার মূলধন কমবেশি হারিয়েছে সব খাত। বড় মূলধনী প্রায় প্রতিটি খাতই বিক্রয় চাপে ছিল। দরপতনে গেল সপ্তাহে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল বিদ্যুত-জ্বালানি ও বিবিধ খাত। গত সপ্তাহে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর গড়ে যথাক্রমে ২ দশমিক ৭৩ ও ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে কমেছে। বাজার মূলধন হ্রাসের তালিকায় এর পর সেবা-আবাসন ২ দশমিক ৬২, প্রকৌশল ২ দশমিক ১৪, বস্ত্র ২ দশমিক ১২, টেলিযোগাযোগ ১ দশমিক ৮৬ এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে গড়ে ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ দরপতন ছিল উল্লেখযোগ্য। এর বাইরে অন্যূন ১ শতাংশ হারে বাজার মূলধন কমেছে সিমেন্ট, জীবন বীমা ও চামড়া খাতের। সাপ্তাহিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইএক্স সূচক কমেছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ বা ৮৪ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএস৩০ সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ বা ২১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট। অপরদিকে শরীয়াহ বা ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ১ দশমিক ৩১ শতাংশ বা ১৪ দশমিক ৬৯ পয়েন্টে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ৩৩৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৬টি কোম্পানির। আর দর কমেছে ১৯৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি কোম্পানির। আলোচ্য সপ্তাহে ৫টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়নি। এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক কমেছে দশমিক ৯০ শতাংশ। আলোচিত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ১৫৭ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে তালিকাভুক্ত মোট ২৭৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭৭টি কোম্পানির।
×