ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অগ্রিম টাকা নিয়ে না খেলায় শেখ জামাল ধানম-ির এন্তার অভিযোগ

ডুবন্ত সূর্য মামুনুলের লম্ফঝম্প

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

ডুবন্ত সূর্য মামুনুলের লম্ফঝম্প

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সত্য-মিথ্যার লড়াইয়ে জয় সবসময় সত্যেরই হয়। মামুনুল ইসলাম এবং শেখ জামাল ধানম-ির মধ্যে এখন সেই লড়াই-ই চলছে! আর এতে জয়লাভ করার সম্ভাবনা বেশি দ্বিতীয় পক্ষেরই। মামুনুল এখন ডুবন্ত সূর্য। শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাব লিমিটেডের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত এবং ওই ক্লাবের হয়ে আসন্ন মৌসুমে খেলতে না চেয়ে তিনি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। শেখ জামাল ধানম-ির অভিযোগ পাওনার তৃতীয় কিস্তির টাকা নেয়ার পাশাপাশি আসন্ন মৌসুমের প্রথম কিস্তির টাকাও অগ্রিম নিয়েছেন মামুনুল ইসলামসহ ৯ ফুটবলার। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে শেখ জামালের এই বক্তব্যের সপক্ষে দালিলিক প্রমাণও উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মামুনুল। এ নিয়ে এখন পাল্টাপাল্টি অবস্থানে মামুনুল-শেখ জামাল। অবৈধভাবে চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছ থেকে যে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছিলেন মামুনুল সেটা তিনি ৪ জানুয়ারি ফেরত দেন বাফুফেকে, সেটার প্রমাণও দিয়েছে শেখ জামাল ক্লাব ব্যাংক স্টেটমেন্টের মাধ্যমে। এছাড়া তিনি শেখ জামালের খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের কাছ থেকে অগ্রিম যে ১৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেছিলেন তার জন্য ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠিও লিখেছেন বাফুফে বরাবর। সেখানে তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি শেখ জামাল ধানম-ির খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন, যা ছিল অবৈধ প্রক্রিয়া। এ জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কোন ভুল আর করবেন না। চিঠিতে এ ধরনের কথা লিখে বাস্তবে এর উল্টোটি বলে বেড়াচ্ছেন এই মিডফিল্ডার! যা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তির। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি তার সই জাল করার অভিযোগ এনেছেন শেখ জামালের বিরুদ্ধে। ফুটবলবোদ্ধাদের এ প্রসঙ্গে অভিমত, এ নিয়ে মামলা-মোকাদ্দমা হলে অবশ্যই ফেঁসে যাবেন মামুনুল। এতে করে তার ক্যারিয়ারই শেষ হয়ে যেতে পারে। আবার অনেকেই বলেছেন, সাফ ফুটবল এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে মামুনুলের খেলার মান ছিল জঘন্য। অথচ তার মতো এমন পড়তি মানের ফুটবলারকে নিয়ে বিভিন্ন ক্লাব টানাটানি করেছে নিজেদের তাঁবুতে, যা ছিল জাতির জন্য লজ্জাজনক। জামালের কাছ থেকে বকেয়া টাকা আদায় করে এবং আসন্ন মৌসুমের জন্য অগ্রিম টাকা নিয়ে তিনি যে মিথ্যাচার করে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাচ্ছেন, সেটা তো দিবালোকের মতোই পরিষ্কার। চট্টগ্রাম আবাহনীর টাকার প্রলোভনের ফাঁদে পা দিয়ে এখন মামুনুল পুরো বিষয়টাকে শেখ জামালের ওপর চাপিয়ে দিয়ে পার পাবার অপচেষ্টায় রত। তার মতো পড়তি ফর্মের ‘বাতিল ঘোড়া’ কিভাবে মোটা অংকের অর্থে অন্য ক্লাবে পাড়ি জমাতে পারে সেটাই এখন সবার কাছে আলোচনার খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবশ্য মামুনুলের মতো এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা এর আগে এদেশের ফুটবলে হয়েছে। তবে মামুনুলের ঘটনাটি বেশি রঞ্জিত হয়ে গেছে। সেটা মামনুলের দোষেই। এখন দেখার বিষয়, শেষ পর্যন্ত মামুনুলের ভাগ্যে কি ঘটে। উল্লেখ নতুন মৌসুমের জন্য চুক্তির ৫০ লাখ টাকা এবং অগ্রিম হিসেবে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে শেখ জামাল যে অভিযোগ করেছে সে প্রসঙ্গে মামুনুল বলেছিলেন তিনি কোন চুক্তি করেননি। নতুন মৌসুমের জন্য যদি কিছু দেখানো হয়ে থাকে, তাহলে তার সই নাকি জাল করা হয়েছে! নতুন মৌসুমে থাকার জন্য ও ক্ষমা চাওয়ার জন্য জোর করে একটা কাগজে তার কাছ থেকে সই নিয়েছে শেখ জামাল- মামুনুলের এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শেখ জামাল কর্র্তৃপক্ষ। এর সপক্ষে তারা সব কাগজপত্র এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টও সংবাদ মাধ্যমের কাছে উপস্থাপন করেছে। তাতে দেখা যায়, গত ৩ জানুয়ারি মামুনুল শেখ জামালের কাছ থেকে মোট ২৮ লাখ ১৬ হাজার ৬৬৭ টাকার চেক নিয়েছেন ইউসিবি ব্যাংকের মাধ্যমে। একইদিন তিনি ১৩ লাখ টাকা ইউসিবি ব্যাংক থেকে নিজে সই করে উত্তোলন করেছেন।
×