ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

শিল্পের আশ্রয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদী প্রকাশ

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৩১ জানুয়ারি ২০১৬

শিল্পের আশ্রয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদী প্রকাশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশাল প্রদর্শনালয়জুড়ে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে বহুমাত্রিক শিল্পকর্ম। কোথাও বা দেখা মিলছে বিশেষ অর্থবহ স্থাপনাশিল্প। একটু নজর ফেরালেই চোখে পড়ছে রং ও রেখার সম্মিলনে বর্ণময় চিত্রকর্ম। শুধু রেখানির্ভর ড্রইংগুলোও যেন বলছে অনেক কথা। এসবের সঙ্গে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে ভিডিওচিত্র। তবে বিষয়গতভাবে সব শিল্পকর্মের মাঝে রয়েছে দারুণ মিল। মুনাফার লোভে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু ও পরিবেশের ওপর মনুষ্য সৃষ্ট নানামুখী নেতিবাচক প্রভাব মেলে ধরা হয়েছে সবক’টি শিল্পে। সব মিলিয়ে যেন বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদী প্রকাশ হয়ে উঠে প্রদর্শনীটি। শিল্পকর্মগুলো সৃজন করেছেন দুই শিল্পী জিহান করিম ও শিমুল সাহা। শিল্পীদ্বয়ের শিল্পসম্ভার নিয়ে গুলশানের বেঙ্গল আর্ট লাউঞ্জে শুরু হলো প্রদর্শনী। শিরোনাম ফ্রাগমেন্টস অব দ্য এ্যানথ্রোপোসিন। শনিবার মাঘের সন্ধ্যায় প্রায় মাসব্যাপী এ প্রদর্শনীর সূচনা হয়। যৌথভাবে প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন অধ্যাপক ড. সলিমুল্লাহ খান ও স্থপতি রফিক আজম। শিল্পীদ্বয় প্রকাশ করেন তাঁদের অনুভূতি। এ্যানথ্রোপোসিন বা মানুষের নানাবিধ কর্মকা-ে জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাবের ওপর কাজ করেছেন জিহান করিম ও শিমুল সাহা। নতুন শিল্পশৈলীতে উপস্থাপন করেছেন নবযুগের ধারণা। ঢাকা ও চট্টগ্রামের কৈশোর কাটানো দুই শিল্পী বিপন্ন দুই শহরকে ঘিরে আপন অভিজ্ঞতার বয়ান দিয়েছেন শিল্পের আশ্রয়ে। সেখানে আছে নবযুগের আবির্ভাবে মানুষের অসহায়ত্বের দৃশ্যকল্প। রয়েছে শারীরিক জীর্ণতা ও ব্যাধির ফলে জৈবিক মন্দা, আগ্রাসী নগরায়নে ঐতিহ্য ও পরিবেশের বিনাশ থেকে শুরু করে উৎকট নগরে অবিরাম খাপ খাইয়ে চলার অসঙ্গত অভিজ্ঞতা। স্মৃতিকাতরতায় বিহ্বল না হয়ে তীক্ষè অন্তর্ভেদী বিশ্লেষণের রূপটি উপস্থাপিত হয়েছে শিল্পের আলোয়। মেঝেতে প্রক্ষেপিত জিহানের কক্স শিরোনামের ভিডিওচিত্রটি তির্যক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় আগ্রাসী নগরায়নের প্রতি। কর্পোরেট ফ্যান্টাসি নামের ক্ষুদ্রাকৃতির চিত্রককর্মগুলো ইঙ্গিত দেয় অর্থলোভে অন্ধ হওয়া মানুষের পানে। টুওয়ার্ড দ্য বিয়িং শীর্ষক স্থাপনাশিল্পে লাইটবক্সে রাখা পচনশীল পাতার মাধ্যমে রোগব্যাধি, বিশেষ করে ক্যান্সার কেমন করে শুষে নেয় জীবনÑ এমন বিষয়কে উপস্থাপন করেছেন শিমুল। ক্ষয়িষ্ণু শরীরকে রূপকে ব্যবহার করে তুলে ধরা হয়েছে মানুষের বিনাশী অগ্রগতিতে বিপর্যস্ত পৃথিবীর চিত্র। সংখ্যাখচিত বৃদ্ধাঙ্গুলির বিশাল ছাপযুক্ত শিল্পকর্মগুলো প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়Ñ মানুষের শেষ পরিচয় কী নিরেট কিছু সংখ্যায় এসে সংকুচিত হবে? উভয় শিল্পীই এ্যানথ্রোপোসিন যুগের নেতিবাচক পরিণতিকে মেলে ধরেছেন। চিয়ারস শিরোনামের শিল্পকর্মে নারী-পুরুষের কিছুর অন্তরঙ্গ বস্তুর সহাবস্থান বলে যায় লিঙ্গভেদ ছাপিয়ে প্রকৃতি নির্ধারিত ভারসাম্যের কথা। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই প্রদর্শনী। প্রতিদিন বেলা ১২টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। গ্যালারি কায়ায় সমকালীন শিল্পীদের প্রদর্শনী ॥ উত্তরার গ্যালারি কায়ায় শনিবার থেকে শুরু হলো ‘২০=৪০’ শিরোনামে সমকালীন ২০ শিল্পীর যৌথ প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি সচিব আক্্তারী মমতাজ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালক জয়শ্রী কুন্ডু। শিল্পীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শিল্পী মাহমুদুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্যালারির পরিচালক গৌতম চক্রবর্তী। প্রদর্শনী চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ফারজানা মিতুর ছয় উপন্যাসের প্রকাশনা ॥ শনিবার প্রকাশিত হলো ফারজানা মিতুর ছয়টি উপন্যাস। উপন্যাসগুলো হলো- তোমাতে করিবো বাস, আমার অদৃষ্টে তুমি, কেটেছে একেলা বিরহের বেলা, ভালোবেসে রুমাল দিতে নেই, পথে যেতে যদি আসি কাছাকাছি ও যে আঁধারে তুমি নেই। উপন্যাসগুলো প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা দিব্য প্রকাশ। ঢাকা বিষয়ক বই প্রদর্শনী ॥ প্রতিষ্ঠার তিন যুগে পর্দাপণ করেছে ঢাকাবাসী নামের সংগঠন। এ উপলক্ষে শনিবার সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকা বিষয়ক বই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার হলে বিকেলে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকাবাসী ও গ্রন্থাগারের যৌথ এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন গণগ্রন্থাগার অধিদফতরের মহাপরিচালক আশীষ কুমার সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকাবাসীর উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সৈয়দ রেজাউর রহমান। ‘ইতিহাস কথা বলে-সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু’ ॥ ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনেছি, বঙ্গবন্ধুর নাম শুনেছি, বাবা-মা, দাদা-দাদির কাছ থেকে। দেখিনি মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব চিত্রই যেন ফুটে উঠেছে আজ আমাদের কলেজের সামনে ‘ইতিহাস কথা বলে-সংগ্রাম থেকে স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর মাধ্যমে। সেখানে দেখানো হয়েছে, পাক হানার বাহিনীর হিংস্রতা, লুণ্ঠন, হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিজয়ের উল্লাস। এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ঝিনাইদহ ফজর আলী গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী অন্তু জোয়ার্দ্দার।
×