ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জয়নুল গ্যালারিতে বিজ্ঞাপন উপজীব্য করে শিল্পকর্ম প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৫:২৪, ২৯ জানুয়ারি ২০১৬

জয়নুল গ্যালারিতে বিজ্ঞাপন উপজীব্য করে শিল্পকর্ম প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যে কোন পণ্যেরই প্রচারের মূল কৌশল হচ্ছে বিজ্ঞাপন। তবে এই চটকদারি বিজ্ঞাপনে থাকে নানা ছল-চাতুরি। ভোক্তাকে পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট করতে অনেক সময় নেয়া হয় নানা অপকৌশলের আশ্রয়। আর এমন বিষয়কে উপজীব্য করে ছবি এঁকেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের চারুশিক্ষার্থীরা। বিজ্ঞাপনের প্রচার কীভাবে জীবনকে প্রভাবিত ও বিঘিœত করছে- সে সব দিক রয়েছে এসব শিল্পকর্মে। বিজ্ঞাপনের সুবাদে কীভাবে পণ্যের প্রতি ভুল ধারণা তৈরি হয়Ñ শিল্পকর্মের মাধ্যমে এই বার্তা দিয়েছেন শিক্ষার্থী শিল্পীরা। অনুষদের সমাপনী সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্ম নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো প্রদর্শনী। জয়নুল গ্যালারিতে চলমান এ দলীয় প্রদর্শনীর শিরোনাম বিজ্ঞাপন। ‘আলোর বিজ্ঞাপন আজ সময়ের দাবি’ সেøাগানে শুরু হয়েছে ১৮তম ব্যাচের এই প্রদর্শনী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন ছাড়াও অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ৮টি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। ভাস্কর্য, সিরামিক, ক্রাফটসহ নানা মাধ্যমে সৃজিত ৭৩টি শিল্পকর্ম প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে। প্রদর্শনীটি উৎসর্গ করা হয়েছে চারুকলার চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের। জয়নুল গ্যালারির প্রবেশ মুখেই নজর কাড়ে পাপড়ি বাড়ৈ রাতের আঁকা ‘এক্সিসটেন্স’ শীর্ষক চিত্রকর্মটি। হাতের করতালুতে তুলে ধরা নবজাতকের ছবিটি যেন বলে যায়, জন্মের সূচনাতে সে পড়েছে বিজ্ঞাপনের খপ্পরে। তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনীটি শেষ হবে ৩০ জানুয়ারি। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উš§ুক্ত থাকবে। শিশু চলচ্চিত্র উৎসবের ষষ্ঠ দিন ॥ ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন সেøাগানে চলছে নবম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ আয়োজিত উৎসবের ষষ্ঠ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। এদিন তিনটি মিলনায়তনে প্রদর্শিত হয়েছে ৩৫টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র। এ ছাড়া ষষ্ঠ দিনের উৎসবে ক্ষুদে নির্মাতাদের চলচ্চিত্র নির্মাণ বিষয়ক কর্মশালা পরিচালনা করেন নির্মাতা অমিতাভ রেজা। বিকেলে শিশু প্রতিনিধিরা আড্ডা দিয়েছেন সোসাইটি বাংলাদেশের সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবালের সঙ্গে। আড্ডার শেষে ক্ষুদে নির্মাতাদের হাতে সনদ তুলে দেন তাদের এই প্রিয় লেখক। এদিন উৎসবের মূল ভেন্যু সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে প্রদর্শিত হলো কুড়িটি চলচ্চিত্র। এগুলো হলোÑ সালাম (নেদারল্যান্ডস), গারুদা-ডি-ডিডাকা (ইন্দোনেশিয়া), বাংলাদেশের দুই ছবি কুতকুত ও দ্য দাম্ব বার্ড, ক্যাপ্টেন ফিস (ফ্রান্স), এ বয়’স প্রায়ার, শ্যামে এ্যান্ড গ্লাসসেস, মার্চপলিস (ইতালি), ডোন্ট লিভ মি (দুবাই), আরকন্দা (স্পেন), দ্য রোপ, নিউজ ফিড, বি পজিটিভ, নিয়ার টু সউল, সাম অব অবলিভিওন এ্যান্ড মি, সিকিউরিটি, ফাঞ্চি অব জাঙ্কি, দ্য মিরর, সিøপ (ম্যানিলা), ওয়াটার পাথ (কলম্বিয়া) ও হলিডে (আর্জেন্টিনা)। এ ছাড়া ষষ্ঠ দিনে আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ মিলনায়তনে ৮টি, শিল্পকলা একাডেমিতে চারটি এবং জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে দেখানো হয় ৩টি শিশুতোষ চলচ্চিত্র। আজ শুক্রবার শেষ হবে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব। বিকেল ৫টায় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে সমাপনী ও পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। সংস্কৃতিমন্ত্রীর একুশে গ্রন্থমেলা পরিদর্শন ॥ বৃহস্পতিবার অমর একুশে গ্রন্থমেলা এলাকা পরিদর্শন করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো মেলা সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে নিয়ে আসা হয়। এরপর অনেকেই আবেগতাড়িত হয়ে বলেছিলেন, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। কিন্তু এখন মেলায় যে পরিমাণ লোকসমাগম হয়, তা বাংলা একাডেমির ধারণক্ষমতার বাইরে। এর মানে আমাদের ওই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। গত দুই বছরের সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আসন্ন মেলা আয়োজন করতে যাচ্ছি। গত দুই বছরের ভুল-ত্রুটি কাটিয়ে এবারের মেলা অনেক পরিকল্পিতভাবে হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার পর সংস্কৃতিমন্ত্রী মেলার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান অংশ পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলা একাডেমির সচিব মোঃ আনোয়ার হোসেন, মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ, জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির ওসমান গনি এবং নির্বাহী পরিচালক কামরুল হাসান শায়কসহ প্রকাশকরা। এবারের মেলায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমরা দফায় দফায় এই বিষয়ে বৈঠক করেছি। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে মেলায়। পর্যাপ্ত আলোর পাশাপাশি সিসি টিভি ক্যামেরা থাকবে ভেতরে-বাইরে পুরো এলাকায়। এ ছাড়াও পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যরা সর্বক্ষণিক মেলা নজরদারিতে রাখবেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে অনেকেই বলেন ই-বুকের দাপটে হারিয়ে যাবে ছাপা বই। তবে আমি মনে করি, ই-বুকের প্রসার যতই হোক না কেন ছাপা বইয়ের কদর কখনও কমবে না। যদি কখনও ই-বুকের প্রসার অনেক বেড়ে যায় তাহলে সেক্ষেত্রে আমরা ই-বুক যারা প্রকাশ করেন তাদের মেলায় জায়গা দেব। তবে বইয়ের কদর কমার কোন সম্ভাবনা নেই। মঞ্চনাটকও এখন আমরা টেলিভিশনে দেখি কিন্তু সে জন্য কিন্তু টিকেট কেটে মঞ্চনাটক দেখতে আসা দর্শকের সংখ্যা কমেনি বরং বেড়েছে। ভিন্ন মাধ্যমগুলো বিকশিত হবে তার পাশাপাশি পুরনো ঐতিহ্যের চর্চাও চলতে থাকবে। গোপালগঞ্জে শেখ ফজলুল হক মণি সাংস্কৃতিক উৎসব ॥ গোপালগঞ্জে তিন দিনব্যাপী শেখ ফজলুল হক মণি সাংস্কৃতিক উৎসব শুরু হলো। জনকণ্ঠে গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় গোপালগঞ্জ শহরের শেখ ফজলুল হক মণি স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) শেখ জাহিদুল ইসলাম ও নবনির্বাচিত পৌর মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু। জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) এএনএম মঈনুর ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার এহিয়া খালেদ সাদী। অতিথিদের বক্তব্য শেষে ৫ গুণী ব্যক্তিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক-২০১৫ প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথি গুণী ব্যক্তিদের সম্মাননা স্মারক ও ১০ হাজার করে টাকার চেক তুলে দেন। পদকপ্রাপ্ত গুণীজনরা হলেনÑ বিপুল কুমার দাস (সঙ্গীত), সুকলাল ভক্ত (যাত্রাশিল্প), সনোজ কু-ু নাট্যকলা), এ্যাডভোকেট তপন কুমার সরকার (যন্ত্রসঙ্গীত) ও মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সেলিম (আবৃত্তি)। শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চলবে এ উৎসব। এতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঢাকাসহ স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনা উপস্থাপিত হবে। নেত্রকোনায় উদীচীর ‘ঢাকা বিভাগীয় নাট্যোৎসব’ ॥ ‘জাগাও নাটক, সাজাও দেশ’ সেøাগানে বৃহস্পতিবার থেকে নেত্রকোনা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ‘ঢাকা বিভাগীয় নাট্যোৎসব’। জনকণ্ঠের নেত্রকোনা সংবাদদাতা জানান, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নেত্রকোনা জেলা সংসদের ব্যবস্থাপনায় ঢাকা বিভাগীয় নাট্যোৎসব উদযাপন কমিটি এ উৎসবের আয়োজক। বিকেলে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর পায়রা উড়িয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন নেত্রকোনার প্রবীণ নাট্যশিল্পী বিমল চক্রবর্তী। উদ্বোধন শেষে বের করা হয় বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা। এরপর উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় উদ্বোধনী আলোচনা সভা। আলোচনা করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন আকন্দ, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার, নাট্যকার গোলাম সারওয়ার, বিমল চক্রবর্তী, উদীচীর কেন্দ্রীয় সদস্য সারওয়ার কামাল রবীন, নেত্রকোনা জেলা শাখার সভাপতি মোজাম্মেল হক বাচ্চু প্রমুখ। সন্ধ্যায় দলীয় নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে উৎসবের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। সন্ধ্যা সাতটা থেকে পর পর মঞ্চস্থ হয় দুটি নাটক। প্রযোজনাগুলো হলো জামালপুর জেলা উদীচীর ‘মৃত্যুঞ্জয়’ ও ময়মনসিংহ জেলা উদীচীর ‘দেয়ালের লিখন’। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উদীচীর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ মঞ্চস্থ করবে ‘পলাশের রং’ এবং কেন্দ্রীয় সংসদ পরিবেশন করবে ‘কাক চরিত্র’। সমাপনী দিন শনিবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হবে তিনটি নাটক। এর মধ্যে রয়েছে কিশোরগঞ্জ জেলা উদীচীর ‘অতঃপর সাধু’, শেরপুর জেলা উদীচীর ‘বর্ণচোর’ এবং নেত্রকোনা জেলা উদীচীর ‘চোরাকাহিনী’। নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল ও কেন্দ্রীয় উদীচীর শিল্পী এবং কলাকুশলীরা এ উৎসবে অংশ নিচ্ছেন। খুলনায় পিঠা উৎসব ও হস্তশিল্প মেলা ॥ খুলনায় তিন দিনব্যাপী শীতের পিঠা উৎসব ও হস্তশিল্প মেলা শুরু হলো। নগরীর খান জাহান আলী রোডের মহিলা সমিতি প্রাঙ্গণে যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ ও খুলনা মহিলা সমিতি। জনকণ্ঠের খুলনা সংবাদদাতা জানান, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনিছুর রহমান বিশ্বাস প্রধান অতিথি হিসেবে মেলা উদ্বোধন করেন। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন কেসিসির প্যানেল মেয়র রুমা খাতুন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহিলা সমিতির সভানেত্রী মাজেদা হক, সাধারণ সম্পাদক বেগম মাজেদা আলী, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বারের খুলনা বিভাগীয় প্রধান শামীমা সুলতানা শীলু ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফুন হক পিয়া।
×