ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্নীতির অভিযোগ

১৮ বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৯ জানুয়ারি ২০১৬

১৮ বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ উদ্বোধনের ১৮ বছর পরও পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রের রূপ পায়নি বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র। ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ নিয়ে চট্টগ্রামের শিল্পী সমাজ, সংস্কৃতি কর্মী ও দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আশার সঞ্চার হলেও এর কোন উন্নতি তো ঘটেইনি, বরং অবনমন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা থাকলেও কর্তা ব্যক্তিদের দায়িত্ব জ্ঞানহীনতা, দুর্নীতি এবং নানা অনিয়মকেই দুষছেন শিল্পী সমাজ। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অনিয়মের তদন্ত দাবি করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বেতার ও টেলিভিশন শিল্পী কল্যাণ সংস্থার ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সীমাহীন অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ আনা হয় বিটিবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের মহাব্যবস্থাপক জাঁ নেসার ওসমানের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন তাহের। উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সভাপতি কায়সারুল আলম, সহসভাপতি শেখ শহিদুল আনোয়ার, মোস্তফা কামাল, সহসাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মাহমুদ খান, উপদেষ্টা নাজমুল আবেদিন চৌধুরী, মৃনাল ভট্টাচার্য, জয়নাল আবেদিন, ফাহিম উদ্দিন প্রমুখ। সেখানে চট্টগ্রামের শিল্প সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সমাগম ঘটে। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতা থাকলেও শুরু থেকেই চক্রান্ত, কর্তা ব্যক্তিদের দায়িত্বহীনতা এবং দুর্নীতির কারণে এই কেন্দ্র চট্টগ্রামবাসীর আকাক্সক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ বেতারে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের শিল্পীরা ঢাকায় অনুষ্ঠান করতে পারলেও বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের শিল্পীরা ঢাকায় কোন অনুষ্ঠান করতে পারছেন না। চট্টগ্রাম কেন্দ্রের শিল্পীদের নির্বাচনী পরীক্ষা সরাসরি বিটিভি ঢাকা কেন্দ্র থেকে সম্প্রসারিত হয়েছিল। কিন্তু দেড় দশক অতিবাহিত হওয়ার পরও এখনও শিল্পীদের তালিকাভুক্তির জন্য অডিশন হয়নি। শুধু তাই নয়, সম্মানি পরিশোধের ক্ষেত্রেও একটি নির্দিষ্ট কাঠামো থাকলেও ঢাকা-চট্টগ্রামের শিল্পীদের সম্মানিতে ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনিয়ম দুর্নীতি অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। গত চার মাস ধরে সুরকার, শিল্পী, সঙ্গীত পরিচালকদের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওই অর্থ দিয়ে বেতন দেয়া হচ্ছে মহাব্যবস্থাপকের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রযোজক, এডিটর সহযোগীদের। সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন তাহের আরও জানান, স্বতন্ত্র চ্যানেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও সে টাকা হরিলুট হয়েছে। বর্তমান মহাব্যবস্থাপক এ পদে যোগদান করেছেন গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর। তার যোগদানের পর থেকে তালিকাভুক্ত কোন গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালকদের যুক্ত করে কোন সঙ্গীতানুষ্ঠান ধারণ করা হয়নি। গত চার মাসে ভাল মানের কোন অনুষ্ঠান নির্মাণ করে প্রচার করতে পারেনি বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র। পুনঃপ্রচার করা হচ্ছে অতীতের পুরনো অনুষ্ঠান। শুধু তাই নয়, কিছু অনুষ্ঠানের পরিকল্পনাকারী ও টেলপে নাম পরিবর্তন করে প্রচার চলছে সরকারী নীতিমালা না মেনেই। পরিচিত হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পীকে ডেকে ১০টি পর্যন্ত গান রেকর্ড করে রাখা হয়। অথচ সুরকার ও পরিচালকদের সম্মানি দেয়া হয় না।
×