ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরিচালকদের দ্বন্দ্বে লোকসানে সুহৃদের বিনিয়োগকারী

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২৯ জানুয়ারি ২০১৬

পরিচালকদের দ্বন্দ্বে লোকসানে সুহৃদের বিনিয়োগকারী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পরিচালক অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লোকসানে পড়ে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের বিনিয়োগকারীরা। কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্বেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির দ্বিতীয় বছরেই লোকসান গুনেছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ। ২০১৫ সালের ৩০ জুনে সমাপ্ত হিসাব বছরে কোম্পানিটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছে। শেয়ারপ্রতি এ লোকসানের পরিমাণ ৩ পয়সা। লোকসানের কারণে ২০১৫ সালের ৩০ জুনে সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ দেয়নি প্রকৌশল খাতের এ কোম্পানিটি। ২৭ জানুয়ারি বুধবার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করা হয়। এদিকে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়ায় তালিকাভুক্ত এ কোম্পানিটি ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নেমে গেছে। আগামী রবিবার থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবনমনের বিষয়টি কার্যকর হবে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা গেছে। লোকসানের বিষয়টি জানতে চাইলে কোম্পানি সচিব এস কে সাহা সাংবাদিকদের বলেন, বিরোধের জের ধরে কোম্পানির একজন পরিচালক কোম্পানির সব ধরনের তথ্য কোম্পানির লিড ব্যাংক শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের নিকট দিয়ে দেন। এ কারণে আমরা প্রায় ১০ মাস ধরে কোন ধরনের এলসি খুলতে পারিনি। তিনি আরও বলেন, আমাদের উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে প্রধান হচ্ছে ফিল্ম শীট। ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল প্যাকেজিংয়ের জন্য ওষুধ শিল্পে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি উৎপাদনে যে কাঁচামাল ব্যবহার করা হয় তা বিদেশ থেকে (থাইল্যান্ড, ইতালি, চীন) আমদানি করতে হয়। কিন্তু এলসি করতে না পারার কারণে আমরা কাঁচামাল আমদানি করতে পারিনি। আমাদের ফ্যাক্টরি বন্ধের উপক্রম হয়েছিল। এ কারণে কোম্পানিটি লোকসান গুনেছে। তিনি আরও বলেন, পরিচালনা পর্ষদের দ্বন্দ্বের জের ধরে ২০১৪ সালে কোম্পানির এজিএম নিয়েও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। এ কারণে ২০১৪ সালের এজিএম ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের অক্টোবরে এজিএম অনুষ্ঠিত হয়েছে। এজিএমে আমরা কোম্পানির সকল বিষয় শেয়ারহোল্ডারদের অবহিত করেছি। সাধারণ শেয়ারহোল্ডোরদের সম্মতিতে কোম্পানির লিড ব্যাংক পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন কোম্পানি উৎপাদেন যেতে পারছে। আশা করছি ভবিষ্যতে কোম্পানি মুনাফা করতে সক্ষম হবে। ফ্যাক্টরির উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে পণ্য বিক্রিতে সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে এস কে সাহা বলেন, আমাদের যেসব গ্রাহক রয়েছেন তারা আমদানি করে চাহিদা মেটাচ্ছেন। আমরা উৎপাদন শুরু করায় তারা আর আমদানি করবে না এবং পণ্য বিক্রিতে সমস্যা হবে না বলে জানান তিনি। এলসি করতে না পারার মতো মূল্যসংবেদনশীল তথ্য বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত অক্টোবরে অনুষ্ঠিত এজিএমে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের আমরা অবহিত করেছি। এছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষকে তা সময় সময় চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন, কোম্পানির সমস্যা সমাধানে আমরা বিএসইসির কাছে অনেকবার পরামর্শ ও নির্দেশনা চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা কোনরূপ সাড়া পাইনি। তবে ডিএসইর ওয়েবসাইটে কোম্পানির যে সব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে তাতে কোম্পানিটির এলসি করতে না পারা কিংবা উৎপাদন বন্ধের আশঙ্কার বিষয়ে কোন তথ্য নেই। এ ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ না করার কারণে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। ২০১৪ সালের ৩০ জুনে সমাপ্ত হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটি ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। ওই বছর কোম্পানিটি করপরবর্তী মুনাফা করেছিল ৫ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও শেয়ারপ্রতি আয়ের পরিমাণ ছিল ১.৬৪ টাকা।
×