ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে মাদ্রাসাছাত্র হত্যা

বলাৎকার থেকে রক্ষা পেতে গিয়েই খুন হয় সালমান

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬

বলাৎকার থেকে রক্ষা পেতে গিয়েই খুন হয় সালমান

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট অফিস ॥ সিলেটের বিশ্বনাথে মাদরাসা ছাত্র সালমান হত্যা নিয়ে পুলিশের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এই ঘটনায় গ্রেফতার মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ও নিহত সালমানের সহপাঠীর বাসা থেকে সোফাসেট ও জুতো উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, ‘নিজে ও অন্য শিক্ষার্থীদের বলাৎকারের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা করতে গিয়েই খুন হয়েছে সালমান। হত্যার একদিন পর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদ ও নিহতের সহপাঠী মহসিন উদ্দিন নাঈমের বাসা থেকে রক্তমাখা সোফাসেট ও নিহত সালমানের ব্যবহৃত জুতা উদ্ধার করা হয়েছে। ‘মাদ্রাসা ছাত্র সালমান হত্যা’র ঘটনা সম্পর্কে থানার অফিসার ইনচার্জ আবদুল হাই স্থানীয় সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে এসব তথ্য উৎঘাটন করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, খুব শীঘ্রই হত্যাকা-ের পুরো রহস্য উন্মোচন করা হবে। তিনি জানান, প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদ ও তাঁর সৎভাই মহসিন উদ্দিন নাঈম নিহত সালমানকে দিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী আরেক ভাইয়ের (ফখরুল) এ্যাকাউন্ট থেকে ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করিয়ে আত্মসাত করেছেন বলেও প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, মাদ্রাসার শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রদের বলাৎকার করা ও ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের ভিডিও ফুটেজ পুলিশের হাতে রয়েছে। হত্যাকা-ে ৩/৪ জন খুনী জড়িত থাকতে পারে। শাবল ও ছুরি দিয়ে আঘাত করে সালমানকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। মোবাইলের কললিস্ট ধরে অন্য খুনীদের বের করার চেষ্টা চালনো হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদকালে মাদ্রাসার ছাত্রদের বলাৎকার করার সত্যতা থানা পুলিশের কাছে মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা বশির আহমদ স্বীকার করেছেন বলেও জানায় পুলিশ। তিনি বলেন, তদন্তে আরও কিছু স্পর্শকাতর বিষয় পাওয়া গেছে, যা অধিকতর তদন্তে জন্য বলা যাচ্ছে না। উল্লেখ্য, সালমান আহমদ সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার পূর্বগাঁও গ্রামের বাক প্রতিবন্দী ছোটন মিয়ার সন্তান। দীর্ঘদিন ধরে সে মাদ্রাসার বোডিং-এ থেকে লেখাপড়া করে আসছিল। ৩০ ডিসেম্বর সকালে উপজেলার নতুন বাজার এলাকার তফজ্জুল আলী কমপ্লেক্স ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপালের বাসার মধ্যবর্তী সড়কে সালমান আহমদের লাশ পাওয়া যায়। পরদিন ৩১ ডিসেম্বর সালমানের মা বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২০ (তাং ৩১/১২/২০১৫ইং)। মামলার লিখিত অভিযোগে বাদিনী উল্লেখ করেন, তিনি ধারণা করছেন মরহুম মাওলানা আশরাফ আলীর ছেলে ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা শিব্বির আহমদের ছোট ভাই মহসিন উদ্দিন নাঈম অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীদের যোগসাজশে তাঁর ছেলে সালমানকে হত্যা করেছে।
×