ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

তুমি যে সুরের আগুন ছড়িয়ে দিলে... ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬

তুমি যে সুরের আগুন ছড়িয়ে দিলে... ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছায়ানট ভবনের প্রবেশদ্বারে রাখা সঙ্গীতজ্ঞ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব প্রয়াত ওয়াহিদুল হকের ছবি ফুলে ফুলে শোভিত। সম্মুখভাগে জ্বল জ্বল করছে প্রদীপের শিখা। ভবনজুড়ে সম্মেলক কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের গান ‘তুমি যে সুরের আগুন ছড়িয়ে দিলে মোর প্রাণে।’ প্রধান মিলনায়তনে প্রবেশ করে দেখা যায় নিবিড় চিত্তে দর্শক শুনছে সে গান। বুধবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অঙ্গনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ওয়াহিদুল হকের নবম প্রয়াণবার্ষিকীতে ছায়ানট আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুটা ছিল এমনই। অনুষ্ঠানে ওয়াহিদুল হক স্মারক বক্তৃতা করেন অধ্যাপক নুরুল আনোয়ার। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আনাম শাকিল। তিনি বলেন, ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ওয়াহিদুল হক। তাঁর দর্শন ও মনন বিশ্বাসের সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি রেখে গেছেন দুর্লভ কিছু যোগসূত্র। আমরা তার সেই আদর্শ নিয়ে পথ চলছি। এরপর বক্তব্য রাখেন ছায়ানটের সহ-সভাপতি ডাঃ সারওয়ার আলী। তিনি বলেন, শিল্প, সঙ্গীত ও সংস্কৃতি বিষয়ে গভীর জ্ঞানলব্ধ মানুষ ছিলেন ওয়াহিদুল হক। তিনি এর চর্চা আপন ভুবনে না রেখে বিস্তৃত করার মানসে দেশব্যাপী গড়ে তুলেছিলেন এক আন্দোলন। বলা যায় সঙ্গীতের তিনি ছিলেন ফেরিওয়ালা। স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক নুরুল আনোয়ার বলেন, ওয়াহিদুল হক ও রবীন্দ্রনাথের গানই আজকের বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছি। ওয়াহিদুল হক এই রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখার মধ্য দিয়ে সকলকে সজাগ করে দেয়ার চেষ্টা করতেন উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে। তার মতে, উচ্চাঙ্গসঙ্গীতের চর্চা যার ভেতর বেশি, সে রবীন্দ্রনাথের গানকে খুব সহজেই রপ্ত করে নিতে পারে। আমি ওয়াহিদুল হককে বলে থাকি ক্ষুদে রবীন্দ্রনাথ। তাঁর বক্তব্যের পর একক গান পরিবেশন করেন শিল্পী ইফফাত আরা দেওয়ান। এরপর ব্রতচারী ও সরোজ সংস্কৃতি বৃত্তের সংগঠনের শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনায় ছিল নৃত্য। সম্মেলক কণ্ঠে ‘আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে’ ও ‘কবে আমি বাহির হলেম’ গান দুটি পরিবেশন করেন সরোজ সংস্কৃতি বৃত্তের শিল্পীরা। নালন্দার শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনায় ছিল গল্প বলা, শ্রুতিনাটক ও একক পাঠ। একক পাঠ করেন দেবারতি রায় মৌলি। কণ্ঠশীলনের শিল্পীদের দলীয় পরিবেশনায় ছিল ‘গান্ধারীর আবেদন’। ব্রতচারী সংগঠনের শিল্পীদের দলীয় নৃত্যের পর দুটি সম্মেলক গান পরিবেশন করেন জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের শিল্পীরা। তাদের পরিবেশনায় ছিল রবীন্দ্রনাথের গান ‘বাজাও তুমি কবি’ ও ‘অরূপ তোমার বাণী’। সবশেষে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে ওয়াহিদুল হক স্মরণানুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। এর আগে এদিন সকালে ছায়ানট ভবনের নিচ তলায় ওয়াহিদুল হক অনুসারীরা সম্মেলক কণ্ঠে ২০টি রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন। জাতীয় জাদুঘরে গান কবিতার ছায়াতলে অনুষ্ঠিত ॥ সময়ের ধারাবাহিকতায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালীর অস্তিত্বে প্রবহমান। এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় ‘গান কবিতার ছায়াতলে’ শিরোনামের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আমরা সূর্যমুখী। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী অনিমা রায়, আবৃত্তি করেন শিমুল মুস্তাফা ও কলকাতার তারাবাংলা টিভির বাচিকশিল্পী রতœা মিত্র। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম। সংগঠনের সমন্বয় সম্পাদক শফিকুল ইসলামের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। আলোচনানুষ্ঠানের পর শিল্পীরা একে একে গান, কবিতা ও পাঠে দর্শকদের মুগ্ধ করেন।
×