ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারী কলেজ শিক্ষকদের কর্মসূচী স্থগিত

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬

সরকারী কলেজ শিক্ষকদের কর্মসূচী স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারের আশ্বাস পেয়ে বেতন কাঠামোয় বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা সরকারী কলেজের শিক্ষকরা কর্মসূচী স্থগিত করেছেন। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি মহাসচিব আ ই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং শিক্ষা সচিবের আশ্বাসের পর আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষকদের আন্দোলন কর্মসূচী স্থগিত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে মার্চ থেকে আবারও কর্মসূচীতে যেতে বাধ্য হব। দুই সচিবই অধ্যাপকদের আপগ্রেডেশনের বিষয়টি আগে সমাধান করে শিক্ষকদের অন্য দাবি পর্যায়ক্রমে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান অধ্যাপক সেলিম উল্লাহ। গত ২২ জানুয়ারি সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের কর্মবিরতি শুরু করেন ২৭০টি সরকারী কলেজ, তিনটি আলিয়া মাদ্রাসা, ১৪টি টিটি কলেজ ও ১৬টি কমার্শিয়াল কলেজের ১৫ হাজার শিক্ষক। এছাড়া আগামী ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দাবি না মানলে ৬ থেকে ১১ ফেব্রুয়ারি ক্লাস বর্জন করবেন সরকারী কলেজের শিক্ষকরা। এরপরও দাবি পূরণ না হলে ১৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছে সমিতি। বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে বিসিএস শিক্ষা সমিতির নেতারা শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসাইনের সঙ্গে বৈঠক করে। সচিবের আশ্বাস পেয়ে সমিতির সাধারণ সভায় এক মাসের জন্য আন্দোলন কর্মসূচী স্থগিতের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক সেলিম উল্লাহ। অষ্টম বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বহাল ছাড়াও শিক্ষকদের পদ আপগ্রেডেশন এবং ‘বৈষম্য’ নিরসনে সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পদোন্নতির দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষকরা। এছাড়া অধ্যাপকদের পদমর্যাদা ও বেতনক্রম অবনমনের প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি। অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পঞ্চম থেকে সরাসরি তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি দেয়া হয়। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকরা পদোন্নতি পেয়ে চতুর্থ গ্রেডে অধ্যাপক হতেন। চতুর্থ গ্রেডের অধ্যাপকদের অর্ধেক সিলেকশন গ্রেড পেয়ে তৃতীয় গ্রেড পেতেন। শিক্ষকদের অভিযোগ, নতুন বেতন কাঠামোয় সিলেকশন গ্রেড বাতিলের ফলে অধ্যাপকদের চতুর্থ গ্রেড থেকেই অবসরে যেতে হবে। ফলে মর্যাদা ছাড়াও বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মতো ১ জুলাই থেকেই পঞ্চম গ্রেডের সহযোগী অধ্যাপকদের অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে তৃতীয় গ্রেডে বেতন দিতে সরকারী আদেশ জারির দাবি জানিয়ে আসছে বিসিএস শিক্ষা সমিতি। এছাড়া নায়েম মহাপরিচালক, এনসিটিবি চেয়ারম্যান, সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং জেলা সদরের অনার্স ও মাস্টার্স কলেজের অধ্যক্ষের পদকেও গ্রেড-১ এ উন্নীত এবং মাউশি, নায়েম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের পরিচালক, অনার্স/মাস্টার্স কলেজের উপাধ্যক্ষ, শিক্ষা বোর্ডের সচিব এবং এনসিটিবির সদস্যদের পদকে দ্বিতীয় গ্রেডে উন্নীতের দাবি জানিয়েছে সমিতি। এছাড়া অনার্স ও মাস্টার্স রয়েছে এমন বিভাগে দ্বিতীয় গ্রেডের একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকের পদ সৃষ্টি, ব্যাচভিত্তিক পদোন্নতি এবং বিকল্প ব্যবস্থা চালু না হওয়া পর্যন্ত সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল বহাল রাখার দাবি রয়েছে বিসিএস শিক্ষা সমিতির। বেতন কাঠামোর বৈষম্য দূর করার দাবিতে এর আগে লাগাতার কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাসে নয় দিন পর গত ২০ জানুয়ারি শিক্ষকরা কর্মবিরতি স্থগিত করে ক্লাসে ফিরলে সচল হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো।
×