স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ শুরু হয়েছে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির শতবর্ষ উদ্যাপন উৎসব। বুধবার এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে চেম্বার নেতৃবৃন্দ তুলে ধরেন এ উপলক্ষে তাদের কর্মসূচী। তবে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মহলে সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বাস ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারকে কেন্দ্র করে। কেননা শুধু চট্টগ্রাম নয়, এটি দেশেরও প্রথম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার, যা নির্মিত হয়েছে সম্পূর্ণ বেসরকারী উদ্যোগে। এখানে পাওয়া যাবে এক ছাদের নিচে দেশের সকল রফতানিযোগ্য পণ্য, যা থেকে বিদেশী ক্রেতারা বেছে নিতে পারবেন তাদের পছন্দের পণ্যটি।
সংবাদ সম্মেলনে শতবর্ষ উদ্যাপন কমিটির চেয়ারম্যান, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি এমএ লতিফ এমপি বলেন, সরকারের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও দৃঢ়তায় আগামী দশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে শিল্প বিপ্লব ঘটবে। আমদানিনির্ভর দেশ থেকে বাংলাদেশ রফতানিমুখী দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ, বন্দর উন্নয়ন, ট্যুরিজমসহ সর্বক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। বিদেশীদের কাছে এদেশকে তুলে ধরতে হবে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ভূমিকা কী হবে এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিদেশী ক্রেতারা এ ভবনে এসে থাকা, বিনোদন, পণ্য বেছে নেয়াসহ সবকিছুই সম্পন্ন করতে পারবেন।
ভবনের ওপরে থাকছে হেলিপ্যাড। শুধু তাই নয়, বায়ারদের যে কোন স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেম্বারের উদ্যোগে একটি হেলিকপ্টারও কেনা হচ্ছে। দেশের অতীত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক সময় এ চট্টগ্রামে তৈরি যুদ্ধজাহাজ ইউরোপে রফতানি হয়েছে, যা এখনও জার্মানির জাদুঘরে রয়েছে। সেই গৌরবময় অতীত আমাদের ফিরিয়ে আনতে হবে। পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের মতো এত সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য পৃথিবীতে বিরল। শুধু পর্যটন শিল্প দিয়েই আমাদের দেশের বছরে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব। চিটাগাং চেম্বার বাংলাদেশের সৌন্দর্যকে তুলে ধরতে চায়। প্রথম পর্যায়ে টার্গেটে রয়েছে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার। সে কারণেই আমরা ইন্টারন্যাশনাল ট্যুরিজম সামিট করতে যাচ্ছি রাঙ্গামাটিতে।
চিটাগাং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম তাঁর বক্তব্যে চেম্বারের শতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচী তুলে ধরেন। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে একটি ‘লাইট এ্যান্ড সাউন্ড’ প্রোগ্রাম। চট্টগ্রাম বন্দর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান।
৩০ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে তিনটায় ওয়ার্ল্ড ট্রেন সেন্টার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। ৩১ জানুয়ারি সকালে হোটেল রেডিসন ব্লু চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে বিজনেস কনফারেন্স। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তুর্কীর অনারারি কনসাল ও একে খান গ্রুপের এমডি সালাউদ্দিন কাশেম খান। আলোচক হিসেবে থাকবেন কানাডীয় হাইকমিশনার পিআরএ লারামি, আইএফসি প্রতিনিধি ওলেগ তোনকোনোজেনকভ, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের উপ-কান্ট্রি ডিরেক্টর হিতোশী আরা, এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদ এবং জাপানের সাহায্য সংস্থা জাইকা, বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ভারত ও বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। একইদিন বিকেলে রেডিসন ব্লুতে অনুষ্ঠিত হবে ইয়ুথ কনফারেন্স। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সঞ্চালনা করবেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম।
উপস্থিত থাকবেন সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম, ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অব শ্রীলঙ্কার সভাপতি শারথ প্রেমাতুঙ্গা কাহাপালারচি। ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় রাঙ্গামাটিতে অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক ট্যুরিজম সামিট। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। বিকেলের সেশনে সেখানে অনুষ্ঠিত হবে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, নৌ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি, এএফএম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, জেবুন্নেসা আফরোজ এমপি, মেজর জেনারেল সোহরাওয়ার্দী, আলাউদ্দিন চৌধুরী আহমেদ নাসিম এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা।