নিজস্ব সংবাদদাতা, মির্জাপুর, ২৭ জানুয়ারি॥ মির্জাপুরে বসতবাড়ি উচ্ছেদের নামে রাতের আঁধারে বন বিভাগের তা-বে মহিলাসহ ১১ জন আহত হয়েছেন। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী গোড়াই-সখিপুর সড়ক ছয় ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। এলাকাবাসী বন বিভাগের রেস্ট হাউজ ভাংচুর করেছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের গায়বেতিল মৌজায় ৫০৩২ দাগে যুগ যুগ ধরে বসতবাড়ি বানিয়ে শুকুর আলী বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি ওই স্থানে তার ছেলেরা পাকা দালান নির্মাণ করছেন। এই পাকা দালানটি উচ্ছেদের জন্য নোটিস না দিয়ে বুধবার ভোরে বন বিভাগের শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলে নির্মাণাধীন ওই স্থাপনায় হামলা চালায়। তারা সীমানা প্রাচীরসহ নির্মাণাধীন দালানটি ভাংচুর করে।
গায়ারাবেতিল গ্রামের সানু মিয়া, তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম, লাভলু মিয়াসহ প্রমুখ জানান, বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তা-বের শব্দে ভোরে তাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়।
গৃহকর্তা শুকুর আলীর ছেলে বেল্লাল মিয়া জানান, তিনি যে ঘরে ঘুমিয়েছিলেন সে ঘরের বাইরে থেকে সিটকিনি আটকিয়ে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে ২০৭ ব্যাগ সিমেন্ট ও থাইগ্লাসসহ ১০ লক্ষাধিক টাকার মাল লুটে নেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। উৎকোচ না দেয়ায় বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ তা-ব চালায় বলে তিনি অভিযোগ করেন। এলাকাবাসী বন বিভাগের এ তা-ব প্রতিরোধ করতে এলে বন বিভাগের লোকজন লাঠিসোটা দিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করে এবং কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। এ সময় তাদের এলোপাতারি মারপিটে গায়রাবেতিল গ্রামের সুরুজ মিয়া, লতিফ মিয়া, তার স্ত্রী জরিনা বেগম, মোতালেব মিয়া, রেজ্জাক মিয়ার স্ত্রী রওশনারা বেগম, ওহাবের স্ত্রী মোজেদা বেগম, মজিবরের স্ত্রী আলেকজান বেগম এবং সামাদ মিয়াসহ ১০ জন আহত হন। সকালে এ খবর জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা বাঁশতৈল বাজারে জমায়েত হয়ে গোড়াই-সখিপুর সড়ক সকাল থেকে অবরোধ করে রাখে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা বাঁশতৈল রেঞ্জ অফিসের গেস্টহাউসে হামলা চালায়। এ সময় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে বন বিভাগের কর্মকর্তারা তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। উত্তেজিত জনতার হামলায় মহেন্দ্র ও আয়নাল নামে দুইজন বন প্রহরী আহত হন। তাছাড়া দুটি মোটরসাইকেলও জনতা ভাংচুর করে বলে বন বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। গোড়াই-সখিপুর সড়কে অবরোধ চলাকালে সেখানে বক্তৃতা করেন আব্দুর রাজ্জাক বিএসসি, লালমিয়া, আতিকুর রহমান মিল্টন, সামছুল আলমসহ প্রমুখ। স্থানীয় এমপি দুপুরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।