ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সেচ সঙ্কট

প্রমত্তা বলেশ্বর এখন নালা

প্রকাশিত: ০৩:৩২, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬

প্রমত্তা বলেশ্বর এখন নালা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ এক সময়ের প্রমত্তা বলেশ্বর নদী এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। নাব্য সঙ্কটের কারণে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে অথৈ বলেশ্বর এখন নালা। দ্রুতই শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে চিতলমারী, কচুয়া, নাজিরপুরসহ বলেশ্বরের দু’পাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকার কৃষি কাজে সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে। সেচ মৌসুমের শুরুতে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। নৌ-চলাচল ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। ভরাটি চর দখল নিয়ে সামাজিক অস্থিরতা, সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে। বাগেরহাটের চিতলমারী, কচুয়া ও পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে বলেশ্বর। বাগেরহাট ও পিরোজপুরের সীমান্ত রেখা এ নদীর পাড়ে নাজিরপুর উপজেলায় বর্তমান কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর পিতৃালয়। বলেশ্বরের দু’পাড়ে হাজার হাজার মানুষের কৃষি কাজ ও নৌযাগাযোগের একমাত্র ভরসা এ নদী। খরস্রোতা বলেশ্বর এখন নাব্য সঙ্কটের কারণে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নদীর দু’পাড়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চর জেগে উঠেছে। চরের জমি স্থানীয় প্রভাবশালী ও লাঠিয়াল বাহিনী যে যার মতো দখল করে নিচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও বাঁধ দিয়ে নদী ভরাট করে ফেলছে ভূমিদস্যুরা। ফলে নদীতে এখন জোয়ার-ভাটার পানি ওঠা-নামা করতে না পারায় সেচ মৌসুমের শুরুতেই হাজার হাজার কৃষক সেচ সঙ্কটে দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। পাশাপাশি নৌযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পণ্য পরিবহন ও চলাচলে অসহনীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। নদীর দু’পাড়ের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। কৃষি নির্ভরশীল এ অঞ্চলের মানুষ দ্রুত এ নদীটি খনন করার দাবি জানিয়েছেন। বলেশ্বর পাড়ের বাসিন্দা রুইদাস মজুমদার ও স্থানীয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা প্রফুল্ল কুমার বালা জানান, এক সময় এই নদী দিয়ে লঞ্চ-স্টিমার-জাহাজ চলত। রাজধানীসহ দেশ-বিদেশের লোকজন নৌপথে এখান থেকে যাতায়াত করত। তাছাড়া বলেশ্বর নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করত হাজার হাজার মানুষ। প্রচুর ইলিশ-চিতলসহ নানা প্রকার মাছে ভরপুর ছিল অথচ মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে নদীর অস্তিত্ব এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে এলাকায় সেচ মৌসুমের শুরুতেই পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত নদীটি খনন করা প্রয়োজন। চরবানিয়ারী ইউপি চেয়ারম্যান মুকুল কৃষ্ণ ম-ল জানান, এলাকায় চাষাবাদের জন্য এই নদীই একমাত্র ভরসা অথচ বর্তমানে নদীতে কোন পানি নেই। ফলে চরডাকাতিয়া, কৃষ্ণনগর, গরীবপুর, খলিশাখালী, বোয়ালিয়াসহ গোটা এলাকায় সেচ সঙ্কটে কৃষিতে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। নৌযোগাযোগ ও পরিবেশের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তিনি দ্রুত এ নদীটি খননের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাসান জানান, বলেশ্বর পাড়ের জমিতে ‘সোনাফলে’। বছরে এক জমিতে ৩ থেকে ৪টি ফসল হয়। ধান, গম, আখ, সূর্যমুখী, বাদাম, কলাই, সবজিসহ নানা প্রকার ফসল এখানকার জমিতে ১২ মাস ফলে। এখানে চাষীদের সেচ কাজের জন্য এ নদীর পানিই এক মাত্র ভরসা। ফলে বলেশ্বর খনন করা ছাড়া চাষাবাদের এখানে বিকল্প নেই। ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে নারীর মৃত্যু নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা, ২৭ জানুয়ারি ॥ নেত্রকোনায় ইজিবাইকে ওড়না পেঁচিয়ে বেদেনা আক্তার (৩৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের মহিষাটি গ্রামের বাচ্চু মিয়ার স্ত্রী। মঙ্গলবার রাত ন’টার দিকে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কের ইসবপুর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে বেদেনা আক্তার ইজিবাইকে (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) চড়ে ময়মনসিংহে মেয়ের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা সড়কের ইসবপুর এলাকায় এলে ইজিবাইকের চাকার সঙ্গে তার ওড়না পেঁচিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় চালক তাকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসেন। পরে বেদেনা ও তার সঙ্গে থাকা দুই বছরের ছেলে সন্তানকে হাসপাতালে রেখে ওই চালক পালিয়ে যান।
×