ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইওয়াতে ভোটারদের মুখোমুখি সম্ভাব্য দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী

হিলারি, না স্যান্ডারস ॥ দ্বিধায় ডেমোক্র্যাটরা

প্রকাশিত: ০৮:২৪, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

হিলারি, না স্যান্ডারস ॥ দ্বিধায় ডেমোক্র্যাটরা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটন ও সিনেটর বার্নি স্যান্ডারসের মধ্যকার দৌড় এখন আর শুধু হোয়াইট হাউস কেন্দ্রিক নয়। এটি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নিয়ে তাদের সম্পূর্ণ ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির এক যুগান্তকারী লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে। আইওয়াতে আগামী সোমবার অনুষ্ঠেয় ভোটে হিলারি ও স্যান্ডারস ভোটারদের জন্য কঠিন বিকল্প প্রস্তুত করে রেখেছেন। ডেমোক্র্যাটরা বাস্তববাদী নীতি ও উদারনীতির মধ্যে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছেন। ১৯৮০ সালের পর ব্যাপক ভিত্তিতে ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়ে গত সপ্তাহে দলের শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছেন ভারমন্টের সিনেটর স্যান্ডারস। তিনি যুক্তি দেখান যে, একমাত্র জবরদস্তি সরকারী পদক্ষেপÑ ওয়াল স্ট্রিট নিয়ন্ত্রণ, সরকারের কর্মসংস্থান নীতি ও সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা আমেরিকার গোঁজামিলের অর্থনীতির অবসান ঘটাতে পারে। নিউহ্যাম্পশায়ারে বৃহস্পতিবার এক নির্বাচনী প্রচার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমেরিকায় কিছু মারাত্মক রকমের ভুল রয়েছে। তাই তিনি চলতি বছরের নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাকে বিপুলভাবে বিজয়ী করার জন্য তার সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানান। অপরদিকে, মূলধারার ডেমোক্র্যাট হিলারি বিচক্ষণ ও অর্জনযোগ্য এজেন্ডা দিয়ে স্যান্ডারসের সঙ্গে তার বৈপরীত্য তুলে ধরেছেন। স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক, নারী, ইউনিয়ন সদস্য ও শহরতলীর ভোটারদের কাছে সমর্থন চেয়েছেন। তিনি এমন নীতির প্রস্তাব দিয়েছেন, যা পরিবার ও ব্যবসাবান্ধব। এ নীতি ১৯৯২ সালে বিল ক্লিনটনের প্রেসিডেন্টে নির্বাচনের সময় দল নির্ধারণ করেছিল। আইওয়াতে বৃহস্পতিবার এক নির্বাচনী প্রচারে হিলারি বলেন, ট্যাক্স বৃদ্ধি নয়, মধ্যবিত্ত পরিবার তাদের আয় বাড়াতে চায়। তাই তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্যান্ডারসের আদর্শবাদকে নয়, বরং তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ওপর ভোটারদের নির্ভর করার আহ্বান জানান। এখন প্রশ্ন উঠেছে, আগামী সোমবার অনুষ্ঠেয় আইওয়া ককাশে প্রথম পরীক্ষায় স্যান্ডারস প্রেসিডেন্ট রাজনীতিতে কোনও পার্থক্য গড়তে পারবেন কিনা। জরীপে দেখা গেছে, সেখানে হিলারি ও তার মধ্যে ব্যাপক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পাতে পারে। মধ্যাঞ্চলীয় আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা ১ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। এরপরে ৯ ফেব্রুয়ারি নিউ হ্যাম্পশায়ারে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ও স্যান্ডারস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মনোনয়নের লড়াইয়ে কোন কোন জনমত জরিপে সমানে সমানে অবস্থান করছেন। তবে জাতীয় ভিত্তিতে হিলারি ব্যাপক সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। স্যান্ডারস তার উদারনীতির জন্য তরুণদের বিশাল সমর্থন পেয়েছেন। পাশাপাশি মুক্ত বাজার অর্থনীতি ও আধিপত্যবাদী পররাষ্ট্রনীতির জন্য তার ডেমোক্র্যাটিক সমর্থক অনেক সমালোচকও রয়েছেন। তবে বহু ডেমোক্র্যাট দ্বিধার মধ্যে রয়েছেন যে, স্যান্ডারসের উদারনীতি ও হিলারির বাস্তববাদী নীতি জাতীয় নির্বাচনে জয়ের জন্য যথেষ্ট কিনা। লুইজিয়ানা অঙ্গরাজ্যের সাবেক ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর জন ব্রোক্স বলেছেন, স্যান্ডারসের জন্য এই প্রাথমিক উদ্দীপনা আমাকে ম্যাকগভর্ন ও ম্যান্ডেলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। তারা দুইজনই তাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থিতায় মাত্র একটি আসনে জয়ী হয়েছিলেন। এ উদারনীতির কারণেই ১৯৭২ সালে জর্জ ম্যাকগভর্ন এবং ১৯৮৪ সালে ওয়াল্টার এফ মন্ডেলের এমন পরিণতি হয়েছিল। আবারও এমন ঘটনা ঘটুক তা চায় না ডেমোক্র্যাটিক ভোটাররা। তবে ডেমোক্র্যাটিক দলের এই দুই মনোনয়ন প্রত্যাশীর শুধু আদর্শই নয়, ২০১৬ সালের রিপাবলিকান মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে তাদের রাজনৈতিক কৌশলও রয়েছে। স্যান্ডারসের চিন্তা-চেতনা দলের ভিত্তিকে আরও সক্রিয় করবে। -ইন্টারন্যাশনাল নিউইয়র্ক টাইমস
×