ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সৈয়দ মাজহারুল পারভেজ

শিরোপার অপেক্ষায় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

শিরোপার অপেক্ষায় বাংলাদেশ

১১তম অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে ২৭ জানুয়ারি আর ১৪ ফেব্রুয়ারি ফাইনাল ম্যাচের মধ্যে দিয়ে টুর্নামেন্টের সমাপ্তি ঘটবে। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার ও নারায়ণগঞ্জসহ ৮ স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের ৪৮ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। স্টেডিয়ামগুলো হচ্ছে- ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী ও এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, সিলেটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও ডিস্টিকস স্টেডিয়াম, কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ২৭ জানুয়ারি উদ্বোধনী দিনে ২ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টায় এ গ্রুপে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে চ্যাম্পিয়ন দ. আফ্রিকার এবং একই সময়ে ‘সি’ গ্রুপে ‘এ’ গ্রুপে একই শহরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে ফিজির মোকাবেলা করবে ইংল্যান্ড। খেলা হবে রাউন্ড রবিন লীগ ও নকআউট পদ্ধতিতে। অংশগ্রহণকারী ১৬ দল গ্রুপ পর্বে রাউন্ড রবিন লীগে ৪ গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এরপর শুরু হবে নকআউট পর্ব। গ্রুপ পর্ব শেষে প্লেট কোয়ার্টার ফাইনাল, প্লেট সেমিফাইনাল ও প্লেট ফাইনাল এবং মূল টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালবাসা দিবসে ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের একাদশ আসরের শিরোপা লড়াই অনুষ্ঠিত হবে। এবারও ১৬ দল খেলবে। অস্ট্রেলিয়া নাম প্রত্যাহার করে নেয়ায় কপাল খুলেছে ইউরোপীয় দল আয়ারল্যান্ডের। আইসিসির সহযোগী সদস্য এই দেশটি অস্ট্রেলিয়ার পরিবর্তে মূলপর্বে খেলার সুযোগ পেয়েছে। টেস্টভুক্ত ৯ দেশ (অস্ট্রেলিয়া বাদে) দ. আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে ২০১৪ সালের অনুর্ধ ১৯ এসিসি কাপজয়ী আফগানিস্তান, ২০১৫ সালের অনুর্ধ ১৯ আফ্রিকা কাপজয়ী নমিবিয়া, ২০১৫ সালের অনুর্ধ ১৯ আমেরিকা কাপজয়ী কানাডা, ২০১৫ সালের অনুর্ধ ১৯ ইএপি কাপজয়ী ফিজি, ২০১৫ সালের অনুর্ধ ১৯ ইউরোপ কাপজয়ী স্কটল্যান্ড, ২০১৫ সালের অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়িং চ্যাম্পিয়ন নেপাল এবং ২০১৫ সালের অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়িং রানার্সআপ আয়ারল্যান্ড এ টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। ১৯৮৮ সালে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের প্রথম আসর বসে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম অসরে চ্যাম্পিয়ন হয়। এর আগের ১০ আসরে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত ৩ বার করে, পাকিস্তান ২ বার এবং ইংল্যান্ড ও দ. আফ্রিকা ১ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়। ২ বছর পরপর আসর বসার কথা থাকলেও প্রথমবারের পর দ্বিতীয় আসর বসে ঠিক ১০ বছর পর ১৯৯৮ সালে। এ বছর দ্বিতীয় আসরে বাংলাদেশ প্রথম এ টুর্নামেন্টে অংশ নেয় এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্লেট পর্বে চ্যাম্পিয়ন হয়। যদিও ২০০০ ও ২০০২ সালে এর পরের দুই আসরে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের দেয়ালই টপকাতে পারেনি। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের আয়োজক হওয়ার গৌরব অর্জন করে। শক্তিশালী অস্টেলিয়াকে হারিয়ে প্লেট পর্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। তবে এর পরের আসরে এ টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান, শক্তিশালী নিউজিল্যান্ড ও উগান্ডাকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো কাপ পর্বে খেলার সুযোগ পায়। তবে কাপ পর্বে হেরে যায় ইংল্যান্ডের কাছে। তবে ব্যর্থতার রেশ কাটিয়ে সুপার লীগ প্লে অফে হারিয়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে। এ বছর অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপে খেলেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহীম, তামিম ইকবালদের মতো তারকা খেলোয়াড়েরা। তাদের নৈপুণ্যে এ বছর বাংলাদেশ অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপে পঞ্চম স্থান পায় বাংলাদেশ। ২০১২ সালে দ্বিতীয়বারের মতো কাপ পর্বে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে দ. আফ্রিকার কাছে হেরে গেলেও ২৫ রানে শ্রীলঙ্কা ও ৭ উইকেটে নমিবিয়াকে হারিয়ে দেয়। তবে কাপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫ উইকেটে হেরে শেষ চারে স্থান করে নিতে ব্যর্থ হয়। সুপার প্লে অফে পঞ্চম স্থান নির্ধরণী ম্যাচে আবার ৪ উইকেটে হেরে যায় ইংল্যান্ডের কাছে। তবে সপ্তম ও অষ্টম স্থান নির্ধরণী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সপ্তম স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। আর ২০১৪ সালে রান রেটে পিছিয়ে থাকার কারণে কাপ পর্বে খেলতে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ক্রিকেটচিত্র এখন অনেক বদলে গেছে। আগের সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই। সব ম্যাচে জেতার ক্ষমতা আমাদের ছেলেদের আছে। এবারে নিজের দেশের মাটিতে চেনা দর্শকদের সামনে বুক চিতিয়ে খেলবে বাংলাদেশের ছেলেরা। বিশ্বকাপের মতো এ টুর্নামেন্টে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বে বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা শিরোপা লাভের জন্য লড়বে। যদিও ইতিহাস বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলবে না তবু খেলাটা ক্রিকেট বলে কথা। ক্রিকেটে সব কিছু সম্ভব। বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা দেশের মাটিতে কাপ জিতবে এ প্রত্যাশা সবার। জিতলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আমাদের ছেলেরা দেশের মাটিতে শিরোপা ঘরে তোলার ক্ষমতা রাখে এমনটাই বিশ্বাস করে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ। সেটা পারবে কি না তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বাংলাদেশ দল ॥ মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), জাকের আলি আশিক, সালেহ আহমেদ শাওন, সাঈফ হোসেন, জাকির হাসান, শফিউল হায়াত, মেহেদী হাসান, আবদুল হালিম, জয়রাজ শেখ ইমন, আরিফুল ইসলাম জনি, সঞ্জিত সাহা, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাইদ শিকদার ও শরীফ উদ্দিন। কোচ : মোহাম্মদ মিজানুর রহমান লেখক : ক্রীড়ালেখক, কথাসাহিত্যিক e-mail : [email protected]
×