বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা মুখোমুখি আজ

মিথুন আশরাফ ॥ আজ শুরু হতে যাওয়া অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা যুব দল দুটি সিরিজ খেলে। দুটি সিরিজই সাত ম্যাচের হয়। একটি সিরিজ হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। আরেকটি হয় বাংলাদেশে। দুটি সিরিজেই বাংলাদেশ অনায়াসে জেতে। আজ সেই দক্ষিণ আফ্রিকা যুব দলটির বিপক্ষে খেলেই অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট দল। সকাল নয়টায় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে। ১৬টি দল চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে এই টুর্নামেন্ট। ১৪ ফেব্রুয়ারির ফাইনালসহ ম্যাচ হবে সর্বমোট ৪৮টি। এই টুর্নামেন্ট একাধিক চ্যানেলে সম্প্রচার করা হবে। বাংলাদেশের বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল গাজী টিভিতে আইসিসি অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ম্যাচগুলো সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। বাংলাদেশের ম্যাচগুলো, সেমিফাইনাল ও ফাইনাল সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন। এ ছাড়া যুব বিশ্বকাপের খেলা দর্শকরা দেখতে পাবেন স্টার স্পোর্টস-১, সুপার স্পোর্টস-২ ও স্কাই স্পোর্টস-২ চ্যানেলে। আবারও বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বড় একটি আইসিসি ইভেন্ট, অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ২০০৪ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজন হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এবারের আসরটি ১১তম আসর। ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক এবং ২০১৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপের একক আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে মাত্র ১৯ দিনে ঢাকা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও সিলেটের মোট ৮ ভেন্যুতে খেলাগুলো হবে। উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ড ও ফিজি চট্টগ্রামে মুখোমুখি হবে। অবশ্য এর আগেই ২২ জানুয়ারি থেকে প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে যুব বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। এবার মূল পর্বের পালা। বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দল ‘এ’ গ্রুপে দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও লড়বে নামিবিয়া ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ থেকেই মূলত পরবর্তী সময়ের ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপানো তারকারা বেরিয়ে আসেন। এর আগে যুব বিশ্বকাপ থেকে যেসব তারকা উঠে এসেছেন তাদের মধ্যে ব্রায়ান লারা, মাইক আথারটন, ক্রিস গেইল, সনাথ জয়সুরিয়া, ইনজামাম-উল-হক, মুশতাক আহমেদ, গ্রায়েম স্মিথ, যুবরাজ সিং, ক্রিস কেয়ার্নস, এ্যালিস্টার কুক, সুরেশ রায়না, শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, টিম সাউদিদের মতো ক্রিকেটাররা আছেন। ১৯৮৮ সালে প্রথমবার অনুষ্ঠিত ছোটদের এ বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত ১০ আসর আয়োজিত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক তিনবার করে শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া (১৯৮৮, ২০০২ ও ২০১০) ও ভারত (২০০০, ২০০৮ ও ২০১২)। পাকিস্তান ২০০৪ ও ২০০৬ সালে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা (২০১৪) ও ইংল্যান্ড (১৯৯৮) একবার করে যুব বিশ্বকাপ জয় করে। যুব বিশ্বকাপের ফরমেটটা একটু আলাদা। চার গ্রুপে বিভক্ত ১৬ দলের মধ্যে শীর্ষ দুটি করে দল সুপার লীগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। আর বাকি আট দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় প্লেট চ্যাম্পিয়নশিপ। বাংলাদেশ যুবদল ১৯৯৮ সালে প্রথমবার প্লেট চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়া ২০০৪ সালের ঘরের মাঠে এবং ২০১০ ও ২০১৪ সালেও প্লেট চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত মাত্র তিনবার গ্রুপ পর্ব পেরিয়ে সুপার লীগ খেলতে পেরেছে বাংলাদেশের যুবারা। সেরা সাফল্য ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত যুব বিশ্বকাপে পঞ্চম স্থান অর্জন। ১৯৯৮ সালে প্রথম কোন আইসিসি ইভেন্ট হিসেবে নকআউট বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ। তবে পূর্ণ বিশ্বকাপ হিসেবে ২০০৪ সালে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপের আয়োজক হয়। ১২ বছর পর আবারও সেই বিশ্বকাপ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এর আগে অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড দুইবার করে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ আয়োজন করে। এবার ৯ টেস্ট খেলুড়ে দেশ স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুইয়ে ছাড়াও ৭ সহযোগী সদস্য দেশ অংশ নেবে। সহযোগী দেশগুলো হচ্ছেÑ আফগানিস্তান, কানাডা, ফিজি, নামিবিয়া, নেপাল, স্কটল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়া শেষ মুহূর্তে নিরাপত্তার অযুহাত দেখিয়ে নাম প্রত্যাহার করে নেয়। অস্ট্রেলিয়াকে ছাড়াই এবার হবে অনুর্ধ-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্ট শুরু হবে আজ। প্রথমদিনেই দক্ষিণ আফ্রিকা অনুর্ধ-১৯ দলের বিপক্ষে লড়াই করবে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৯ দল।