ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশের মাদক মামলা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর বিরুদ্ধে পুলিশের মাদক মামলা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ প্রবাসী যুবককে আটক করে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে হেরোইনসহ মিথ্যা মামলায় ঝুলিয়ে হয়রানি করছে পুলিশ। মামলার ক্ষেত্রে পুলিশের ওই সদস্য যশোর সদর ফাঁড়ি ইনচার্জের অনুপস্থিতিতে তার স্বাক্ষর জাল করেছে। যশোর সদর উপজেলার তপসিডাঙ্গা গ্রামের ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেন, তার একমাত্র ছেলে মিকাইল হোসেন চলতি মাসের ১০ তারিখে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরে। দুই বছর পর মিকাইল দেশে এসেছে মাত্র ১ মাসের ছুটিতে। গত ২২ জানুয়ারি সদর ফাঁড়ির এএসআই বাবুল আকতার শহরতলীর পুলেরহাট বাজার থেকে মিকাইল হোসেনকে সদর ফাঁড়িতে ধরে এনে এক লাখ ২০ হাজার টাকা দাবি করে। এ সময় তাকে মারপিটও করা হয়। মিকাইল তার ওপর বাবুলের নির্যাতনের কথা মোবাইল ফোনে তার বাবাকে জানালে মিকাইলের বোন ফাতেমা পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে এসে এএসআই বাবুলকে দেন। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। মিকাইলের ওপর নির্যাতন চলতে থাকে। কোন উপায় না পেয়ে মিকাইলের পিতা ইসমাইল হোসেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ আলী রেজা রাজুসহ সাংবাদিকদের কাছে যান। সাবেক সাংসদসহ সাংবাদিকরা বাবুলকে ফোন দেয়া শুরু করলে বাবুল সোমবার দুপুরে মিকাইলকে একশ’ গ্রাম হেরোইনসহ কোতোয়ালি থানায় হাজির করে মামলা দেয়। এই মামলার বাদী করা হয় ঢাকায় অবস্থানরত সদর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই রফিকুল ইসলামকে তার স্বাক্ষর জাল করে। এদিকে এ খবর জানতে পেরে সোমবার সন্ধ্যায় নভোএয়ারের দ্বিতীয় ফ্লাইটে ঢাকা থেকে যশোরে ফেরেন এসআই রফিক। স্বাক্ষর জাল করে থানায় মামলা নথিভুক্ত করার বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গনি মিয়া বিষয়টি চেপে যাবার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। অপরদিকে ফাঁড়ি ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ঢাকাতে ছিলেন। সোমবার নভোএয়ারের দ্বিতীয় ফ্লাইটে যশোরে আসেন। তিনি ঢাকায় অবস্থানকালে কী ভাবে তার স্বাক্ষরে মামলা নথিভুক্ত হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তিনি খোঁজ নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ কে এম আরিফুল হক বলেন, এসআই রফিক সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে যশোরে ফিরেছেন। তবে বাবুলের এই মামলার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি দেখছি। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ আলী রেজা রাজু বলেন, ছেলেটির পরিবার আমার পরিচিত। বিদেশ থেকে এসেছে। টাকার লোভে পুলিশ তার পিছনে লাগে। আমি বিষয়টি থানার ওসি গনি শেখকে জানিয়েছিলাম, কিন্তু সে সুবিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে।
×