ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আটক চার

ভৈরবে মিটার টেম্পারিং করে বিদ্যুত চুরি

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ২৭ জানুয়ারি ২০১৬

ভৈরবে মিটার টেম্পারিং করে বিদ্যুত চুরি

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব, ২৬ জানুয়ারি ॥ সড়ক, রেল ও নৌ পথের যোগাযোগ সমৃদ্ধ ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল বন্দরনগরী ভৈরব। ফলে এ শহরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মিল, কল-কারখানাসহ শিল্প প্রতিষ্ঠান। এসব মিল ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের অন্যতম চালিকাশক্তি হচ্ছে বিদ্যুত। কল-কারখানায় বিদ্যুত ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাইরে এক ! ভিতরে আরেক ! বাইপাস ও মিটারে টেম্পারিং বা কারসাজির কারণে শহরে প্রতি মাসে চুরি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার বিদ্যুত। ফলে প্রভাবশালী অসাধু ব্যবসায়ীদের লাখ টাকার বিদ্যুত বিল আসে হাজার টাকায়। লোকসান পুষিয়ে নিতে অতিরিক্ত বিলের বোঝা পড়ে সাধারণ গ্রাহকের ঘাড়ে। সোমবার দিনভর অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে বেরিয়ে আসে এসব তথ্য। বিদ্যুত অফিস সূত্রে জানা গেছে, শহরের কমলপুর, চ-িবের, জগন্নাথপুর, ঘোড়াকান্দা, ভৈরব বাজারে একাধিক গ্যারেজ, মিল, কল-কারখানা ও ছোট বড় বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে অবৈধ বিদ্যুত সংযোগের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিদ্যুত চুরি হচ্ছে। কোথাও কোথাও বাইপাসের মাধ্যমে বিদ্যুত ব্যবহার করছে মিলাররা। উপজেলার শিমুলকান্দি, আগানগর ও শ্রীনগরে অফিসের অসাধু কর্মচারীদের কারসাজিতে কতিপয় ব্যক্তি বিভিন্ন পন্থায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বিদ্যুত ব্যবহার করছে। ফলে বিদ্যুতখাতে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা গচ্ছা যাচ্ছে। ভৈরব বিদ্যুত অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুত চুরি বন্ধে ইতোমধ্যে শহরের বেশ কয়েকটি স্থানে একাধিক চেকিং মিটার স্থাপন করা হয়েছে। এরপরও বিদ্যুত চুরি থামছে না। এরই প্রেক্ষিতে অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলে। শহরের কমলপুর এলাকায় অভিযান চালায় বিদ্যুত আদালতের স্পেশাল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট রুবিরা পারভিন। এ সময় আবুল কাসেম সিএনজি ও অটোরিক্সা গ্যারেজে অবৈধভাবে মিটার টেম্পারিং এবং বাইপাসের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুত ব্যবহারের অভিযোগে প্রথমে তার সংযোগ বিছিন্ন করেন। পরে তল্লাশি চালিয়ে গ্যারেজ থেকে অর্ধশতাধিক ব্যাটারি চার্জার, ৫টি সিঙ্গেল মিটার, একটি থ্রি ফেইজ মিটার এবং বিদ্যুত লাইনের তারসহ সরাঞ্জামাদি জব্দ করেন। গ্যারেজ মালিক আবুল কাসেম মিয়াকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। দুর্জয় মোড়ে অবস্থিত হোটেল জনতা খাবার দোকানে অভিযান চালিয়ে মিটার টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারের কারণে সংযোগ বিছিন্ন ও হোটেল মালিক ওয়াহিদ জামানকে আটক করা হয়। অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারকারী হিসেবে ভৈরব বাজারে অবস্থিত এবাদতুল্লাহ মিয়ার কয়েল ভূষি মিলে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ মিলে অবৈধ বিদ্যুত চুরিরোধে ট্রান্সফারমারে রিডিং চেকিং মিটার স্থাপন করা হয়। ভৈরবপুর এলাকার হাজী সিরাজ মিয়ার অটো গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে অর্ধশতাধিক ব্যাটারির চার্জারসহ অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারের মালামাল জব্দ ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারের অভিযোগে মোজাম্মেলকে আটক করেন ম্যজিস্ট্রেট। চ-িবের এলাকায় বাসা-বাড়িতে অভিযান চালায় আদালত। অবৈধ বিদ্যুত ব্যবহারের অভিযোগে শাহিন মিয়াকে আটক ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। আটককৃত চারজনকে বিদ্যুত আইনের মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়।
×