ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিবছরই কোটিপতি বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

প্রতিবছরই কোটিপতি বাড়ছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ বর্তমানে দেশে তফসিলি ব্যাংকে কোটি টাকা রয়েছে এমন ব্যক্তির সংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার। সেই অনুযায়ী প্রতিবছরই কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে। সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী সংসদকে জানান, বাংলাদেশে তফসিলি ব্যাংকে কোটি টাকার হিসাব সংখ্যা (আমানত+আগাম) গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১ লাখ ১৪ হাজার ২৬৫টি। ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৭৮ হাজার ১৫০। ২০১২ সালে ৯০ হাজার ৬৫৫, ২০১৩ সালে ৯৮ হাজার ৫৯১, ২০১৪ সালে ১ লাখ ৮ হাজার ৯৭৪ এবং ২০১৫ সালে ১ লাখ ১৪ হাজার ২৬৫টি কোটি টাকার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট রয়েছে। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হাজী মোঃ সেলিমের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নোট জালকারী কিছু চক্রের অপতৎপরতায় বাজারে জাল টাকার প্রাদুর্ভাব রয়েছে। এদের কারণে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। তবে তা ব্যাপক নয়। অর্থমন্ত্রী জানান, জাল টাকার প্রাদুর্ভাব রোধে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো বিবেচনায় এনে জালনোট প্রতিরোধে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারী দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চলতি ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রাপ্ত বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ গত অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে। গত অর্থবছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক সহায়তার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫০১ দশমিক ৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ১ হাজার ৫৯২ দশমিক ৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রাপ্ত বৈদেশিক সহায়তার মধ্যে অনুদানের পরিমাণ ২৯৮ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ঋণ সহায়তার পরিমাণ ১ হাজার ২৯৩ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়েছে। সরকারদলীয় অপর সংসদ সদস্য মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে লাভজনক করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ অডিটেড ব্যালেন্স শীট (৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪) অনুযায়ী রাষ্ট্র মালিকানাধীন ৬টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী, বেসিক এবং বিডিবিএল) মধ্যে শুধু বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের লোকসান রয়েছে। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরভিত্তিক কোন ব্যাংকেরই ব্যালেন্স শীট চূড়ান্ত করা হয়নি। সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী জানান, বিদায়ী ২০১৫ সালে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মুনাফার পরিমাণ ২২ হাজার ৮৪৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে চারটি ব্যাংক লোকসানে রয়েছে। গত এক বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক বেসিক ব্যাংক লিমিটেড ২৩৪ কোটি এবং কৃষি ব্যাংক ১৫৮ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। মন্ত্রীর দেয়া তথ্যানুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মধ্যে গত এক বছরে সর্বাধিক মুনাফা অর্জন করেছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটির ২০১৫ সালে মুনাফার পরিমাণ ১ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। এরপরে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক (১ হাজার ৬৫০ কোটি), জনতা ব্যাংক (১ হাজার ১৫২ কোটি), এইচএসবিসি ব্যাংক (১ হাজার ৯০ কোটি), অগ্রণী ব্যাংক (১ হাজার ১০ কোটি) ও সোনালী ব্যাংক ৮৬৩ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে।
×