পুলিশ সপ্তাহ প্যারেডে প্রথম নেতৃত্ব দেবেন নারী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গে প্রথমবারের মতো পুলিশ সপ্তাহের প্যারেডে নেতৃত্ব দেবেন একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তা। তার নেতৃত্বেই প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানাবে সহস্রাধিক পুলিশ। চলতি বছরের পুলিশ সপ্তাহকে এভাবেই অর্থবহ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার চার দিনব্যাপী শুরু হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ ২০১৬। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বর্ণাঢ্য পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধন করবেন। তিনি সারাদেশের বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত ১৩টি কন্টিনজেন্টের প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করবেন। প্যারেডে নেতৃত্ব দেবেন চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার। এ বারের পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশ পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে উল্লেখ করেছেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বাংলাদেশ পুলিশ। শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানটি জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে যা সর্বমহলে প্রশংসিত। শৃঙ্খলা-নিরাপত্তা-প্রগতি, এই মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ জনসেবা প্রদান ও জননিরাপত্তা বিধানে আরও পেশাদার এবং আন্তরিক হবেÑ এ আমার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রীর বাণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদের আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও স্থানীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ পুলিশের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। দেশের সকল প্রয়োজন ও সঙ্কটকালে বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানে দেশপ্রেম, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও পুলিশের সাফল্য ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা বাংলাদেশকে বৈশ্বিক পরি-লে অনন্য মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে। পুলিশ সপ্তাহে ২০১৫ সালে অসীম সাহসিকতা, বীরত্বপূর্ণ কাজ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ১৯ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)’, ২৩ জনকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ ও ৪০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ এ চার ধরনের পদক প্রদান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে তাদের পদক পরিয়ে দেবেন। পুলিশ সপ্তাহের অন্যান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে প্রথম দিন মঙ্গলবার উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মেলন, দ্বিতীয় দিন বুধবার উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইজিপির সম্মেলন, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা, তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার উর্ধতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, পুরস্কার বিতরণ (আইজি’জ ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র বা মাদক উদ্ধার প্রভৃতি), পুলিশ অফিসার্স মেসের বার্ষিক সাধারণ সভা এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে কর্মরত পুলিশ অফিসারদের পুনর্মিলনী। শেষদিন শুক্রবার আইন-শৃঙ্খলা ও অপরাধ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে পুলিশ সপ্তাহের নানা আয়োজন।