ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খালেদা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে বিতর্কিত করতে চান ॥ সৈয়দ আশরাফ

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

খালেদা মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাকে বিতর্কিত করতে চান ॥ সৈয়দ আশরাফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজনীতির মাঠে পরাজিতরা কে কি বলল তা নিয়ে সময় নষ্ট না করে আগামী নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, অগামী জাতীয় নির্বাচনও যদি তারা বয়কট করে তবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আর থাকবে না। কারণ অনেক রাজনীতিক দলের ফালাফালি দেখেছি। ভুল সিদ্ধান্তের কারণে এখন তাদের কেউ মনে রাখে না। দেশের ইতিহাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু নিয়ে অহেতুক মন্তব্য বন্ধ না করলে বিএনপি ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। সোমবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বক্তব্য প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘এটা তিনি (প্রধান বিচারপতি) এক বাণীতে বলেছেন। এটা কোন রায় নয়। আমাদের সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের সাংবিধানিক বোর্ড আছে। ওনারাও কোন রায় দেননি। সুপ্রীমকোর্টে একক ব্যক্তির কোন রায় হয় না। অন্য কোন বিচারকও এ বিষয়ের স্বপক্ষে কোন বক্তব্য দেননি। আর এটাতো আদালতের কোন বিচারের বিষয়ও নয়।’ আগামী ২৮ মার্চ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধরণ সম্পাদক বলেন, আমাদের প্রতিটি সম্মেলনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক ৬ দফা, বাংলাদেশ স্বাধীন করার প্রত্যয় তার মধ্যে সেরা সিদ্ধান্ত। এবারের সম্মেলনেও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়ে আওয়ামী লীগ ইতিহাস সৃষ্টি করবে। আর আওয়ামী লীগ যে সিদ্ধান্ত নেয় তার বাস্তবায়ন না করে ঘরে ফিরে যায় না। সম্মেলন প্রস্তুতি সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আমাদের ৭৭টি সাংগঠনিক কমিটির মধ্যে ইতোমধ্যেই ৬৯টির সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলোতে সম্মেলনের তারিখ দেয়া হয়েছে। সময়মতো সব শাখার সম্মেলন করে আমরা এবারের টার্গেট পূরণ করতে পারব বলে আশা রাখি। তাহলে নতুন রেকর্ড হবে। এবারের সম্মেলন আমরা উৎসবমুখরভাবে জাতীয় অনুষ্ঠানের ন্যায় পালন করতে চাই। এবারের সম্মেলনে দলীয় গঠনতন্ত্রের কোন পরিবর্তন হবে কী না, এমন প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ আশরাফ বলেন, জাতীয় কাউন্সিলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন হতে পারে। তাহলে দলীয় সদস্যপদের সংখ্যাও বাড়তে পারে। তবে সম্মেলনের আগে নিশ্চিত করে সবকিছু বলা যাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা এবং সমন জারি হওয়া প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) কখনোই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিলেন না, কোনদিনই থাকবেনও না। দেশের স্বীকৃত ইতিহাস নিয়ে বিএনপির যে নেতিবাচক মনোভাব তা থেকে দলটি এক ইঞ্চিও সরবে না। তাই খালেদা স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ সর্বোপরি দেশকে বিতর্কিত করতে চান। তবে দেশের ইতিহাস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অহেতুক মন্তব্য বন্ধ না করলে বিএনপি ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ হবে। কারণ মিথ্যা এক শ’ বার, এক হাজার বার বলা যায়। তবে মিথ্যা কখনও সত্য হবে না। বিএনপির কাউন্সিলের সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বিএনপির ঢাকায় বসে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার কমিটি ঘোষণা করে। পত্র-পত্রিকায় হঠাৎ দেখা যায়, অমুক নেতা হয়েছেন। এটা আবার ফলাও করে ছাপানো হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ ছোট-খাটো কমিটিও নির্বাচন ও সম্মেলন করে ঘোষণা করে। এর আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে দলটির কেন্দ্রীয় সম্পাদকম-লীর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন দলটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।
×