ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

ঢাকার দিনরাত

আবহাওয়ার পরিবর্তন টের পায় মানুষ হাড়ে-মাংসে। শুক্রবার থেকেই বুঝি ঢাকায় এবার প্রকৃত শীতকাল শুরু হলো। অথচ এরই মধ্যে পার হয়ে গেছে মাঘের এক-তৃতীয়াংশ! বৃষ্টিই মনে হলো আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এলো শীতকালকে। কনকনে ঠা-া হাওয়া কি মানুষের পিঠের খিদেকে উস্কে দেয়। তা দিতেও পারে। ছেলেবেলায় কিছুকাল খুলনার গ্রামে ছিলাম, তখন ভাবতাম শীতে খেজুরের রস মেলে তাই রসের পিঠের ধুম পড়ে। শহুরে বহু বালক আমার মতোই ভাববে- বছরভরই পিঠা খাওয়া চলে, তবে শীতে তা খেতে ভারি মজা! অথচ পিঠাপুলির মৌসুমই হলো নবান্নের পরে শীতের আগমনীতে সে কথা রাজধানীর হালের নবাবপুত্তুররা বুঝবে কী করে? বেশ একটা কাকতালীয় বলা যায়, ঢাকার জমিয়ে ঠা-া পড়তে শুরু হলো শুক্রবার, আর সেদিনই কিনা রাজধানীতে উদ্বোধন হলো জাতীয় পিঠা উৎসবের। অবশ্য মহানগরীতে বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে কয়েকটি পিঠা উৎসব হয়ে গেল পৌষজুড়ে। এবারের জাতীয় পিঠা উৎসবে দেড় শ’ রকমের পিঠা এসেছে। সব কি চাখা সম্ভব? দেশের সব জেলার ঐতিহ্যবাহী পিঠার সমাহার ঘটলে তা যে ওই সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যেত সেটা পিঠা-গবেষকরা নিশ্চয়ই মানবেন। এর আগে এ রকম আটবার জাতীয় পিঠা উৎসব হয়েছে। এবারের উৎসবটি শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, সেখানে মঞ্চও করা হয়েছে। চলছে সঙ্গীত ও নৃত্য। বেশ একটা জমজমাট ব্যাপার। রসনা তৃপ্ত করার জন্য এ ধরনের উৎসবে বরাবরই ভিড় লেগে থাকে। ভাবছিলাম বাংলার নিজস্ব খাদ্যসংস্কৃতি কি এ থেকে কোন সুফল তার ভা-ারে তুলতে পারে? নাগরিক চোখ ও জিহ্বা এতে তুষ্ট ও তৃপ্ত হয় বৈকি, তার প্রয়োজনও খাটো করে দেখছি না। কিন্তু যারা উৎসাহ বোধ করেন এ ধরনের পিঠা তৈরির, তাদের জন্য তো কিছু করা চাই। পিঠার রন্ধনপ্রণালি জানার কী উপায়? এই মাল্টিমিডিয়ার যুগে পর্দায় প্রদর্শনের মাধ্যমে পিঠার রেসিপি তুলে ধরায় কোন সমস্যা দেখি না। আগামীতে আয়োজকরা কথাটি ভেবে দেখবেন, আশা করি। আবদুল্লাহপুর : গন্তব্যের সূচনায় মহানগরীতে যেসব গণপরিবহন চলাচল করে তার যেমন একটি সূচনা স্টপেজ থাকে, তেমনি থাকে সর্বশেষ গন্তব্য। ঢাকার উত্তর প্রান্তের সূচনা স্থানটিই আবার দক্ষিণ প্রান্তের যাত্রীদের কাছে সর্বশেষ গন্তব্য। তাই সূচনা ও গন্তব্যÑ দুটোরই রয়েছে পক্ষবিশেষে অভিন্ন বা যুগল পরিচয়। ঢাকার উত্তর প্রান্ত অর্থাৎ টঙ্গীর কাছাকাছি আবদুল্লাহপুর বাস স্টপেজ থেকে একমাত্র এসি সার্ভিস বিআরটিসির বাস যাত্রা শুরু করে মতিঝিলের গন্তব্যে। তাই আবদুল্লাহপুরের বা ছাড়ার স্থানটি কিছুটা বিশেষত্ব দাবি করে। সেখানে একটি যাত্রী ছাউনি থাকবে, বহু যাত্রী যাতে সুস্থিরভাবে বাসের অপেক্ষা করতে পারেন সেজন্য সুবন্দোবস্ত থাকবে। এমনও দেখা যায় অফিস আওয়ারে পঞ্চাশ-ষাটজনও বাসে ওঠার লাইনে দাঁড়িয়ে যান। কোথায় দাঁড়ান তারা? বাধ্য হয়ে খোলা নর্দমার পাশেই তাদের দাঁড়াতে হয়। কী রোদ কী বৃষ্টি- এর কোন ব্যতিক্রম নেই। যেহেতু সেখানে কোন যাত্রী ছাউনি নেই। খোলা নর্দমা পেলে বাঙালী কি আর সেখানে কেবল জলবিয়োগই করে? অন্য কিছু কি সারে না! সারে বৈকি। ফলে জায়গাটায় মাছি ভনভন করতে থাকে। অপেক্ষারত দ-ায়মান লোকদের পোশাকে উড়ে এসে বসে। অথচ জায়গাটা বেশ সুপরিসর, সাধারণত প্রধান সড়কের পাশে এতখানি জায়গাজুড়ে খালি স্থান পাওয়া যায় না। সেদিক দিয়ে বিচার করলে এই সুযোগকে খুব ভালমতোই কাজে লাগিয়ে জমজমাট করে তোলা যায়। তবে সবার আগে লম্বা খোলা নালাগুলো ঢাকা চাই। একটা শহর তো এমনি এমনি অভব্যতা অসুস্থতা এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর ও দৃষ্টিনন্দন হয়ে ওঠে না। হিরণ¥য় পুনর্মিলনী শনিবার ছিল ঢাবি এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের ‘হিরণ¥য় এ্যালামনাই মেলবন্ধন-২০১৬’। নাম যাই হোক, এ হলো সাবেক শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র কথাসাহিত্যিক হামিদ কায়সার ভারি মজা করে এই পুনর্মিলনীর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পুরোটাই তুলে দিচ্ছি: ‘‘শৈশবে একবার হারিয়ে গিয়েছিলাম। মোহাম্মদ আলীকে দেখতে গিয়ে। একুশে ফেব্রুয়ারির গভীর রাতে মোহাম্মদ আলী আসবেন শহীদ মিনারে ফুল দিতে। আমি খালার বাসা উর্দুরোড থেকে এসেছিলাম আশপাশের এক দঙ্গল ছেলেমেয়ে আর আমার এক ছোটমামার সঙ্গে। আলীকে দেখার জন্য অস্বাভাবিক ভিড়। একে ঠেলে ওকে ধাক্কিয়ে সবাই আগে থাকার চেষ্টা করছিল। বোধহয় মেডিক্যাল কলেজের মোড়েই আমিও মেতে উঠেছিলাম সমান প্রতিযোগিতায়। তারপর আলী যখন এলো ঠেলাঠেলিও বাড়ল। আমি ঠিকই খোলা গাড়ি দিয়ে যাওয়া আলীকে দেখতে পেলাম, কিন্তু হারিয়ে ফেললাম, যাদের সঙ্গে এসেছিলাম, সেই দলটিকে! এখন বাসায় ফিরব কিভাবে? বাসার নাম্বারও মনে ছিল না। আতঙ্কে ভয়ে এক চোখ মেঘনা তো আর এক চোখ যমুনা। তখনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক তরুণ ছাত্র আমাকে ঘিরে ধরল। আমাকে নানা রকম অভয় বাণী দিতে লাগল, মন ভাল করার কত চেষ্টা! আমাকে নিয়ে খুঁজতে লাগল আমার সেই দলটিকে। তারপর প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর দলটিকে তারা খুঁজে পেল রোকেয়া হলের সামনে। আমার ছোটমামা এবং তার বন্ধুরা তখন কৈশোর থেকে মাত্র নতুন যৌবনে পা দিয়েছেন! সেই থেকে আমার ইচ্ছে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হব। সে বছরেই যখন জহির রায়হানের আরেক ফাল্গুন উপন্যাস পড়লাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি প্রেম আরও গাঢ় হলো। তারপর তো আব্বার প্রেরণা ছিলই! যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ দিয়ে নানা উপলক্ষে যাওয়া হতো আমার একটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক বাবা আবদুর রহমান খান বলতেন, এখানে দেশের শ্রেষ্ঠ ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করে বুঝেছো! তুমিও কি এখানে পড়তে চাও? আমি স্বভাবতই লাজুক ছিলাম, কোন জবাব দিতাম না, কিন্তু মনে মনে ততক্ষণে শুধু কী পড়া, চত্বরে বসা ছেলেমেয়েদের জুটির মধ্য থেকে ছেলেটিকে সরিয়ে দিয়ে নিজেকে বসিয়ে দিতাম! তারপর জীবনে সত্যি সত্যি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া হলো। চত্বরে কারও সঙ্গে বসা হয়নি ঠিকই কিন্তু অনেক মানুষের হৃদয়ে ঠাঁই পেয়েছি। এটাই বড় অর্জন বলে মনে করি। গতকাল হিরণ¥য় মেলবন্ধনেও সেই আঁচ পেলাম। বন্ধুবান্ধব, বড় ভাইবোন ছোট ভাইবোনদের হৃদ্যতায় ভেসে তো গিয়েছিই, যারা অপরিচিত, হ্যা হ্যা, অবাক হয়েছি, কী আন্তরিক সৌজন্য, যেন মোহাম্মদ আলীকে দেখার সেই একুশে ফেব্রুয়ারি রাতের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই। সবার মধ্যে ফিরে এসেছে, চেনা নেই জানা নেই একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে হাসছেন, কুশল বিনিময় করছেন, আমি যখনই এমন হাসি উপহার পেয়েছি, মন আমার ভরে গিয়েছে! তখনই স্বপ্নতাড়িত হয়ে উঠেছি- ইসস! এই হাসিটা যদি সংক্রমিত হয়ে যেত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ ছাড়িয়ে, রাজধানী ঢাকা পেরিয়ে সমস্ত দেশের আনাচে কানাচে, একজন আরেকজনের দিকে, যতই অপরিচিত হোক, উপহার দিচ্ছেন মুখের অম্লান নির্মল হাসি, কী অপূর্ব দৃশ্য হতো, তাই না! বাসের জানালা নিয়ে দখল হতো না, স্কুটারে বসে একজন আরেকজনের পা ঠেলত না, জমির আইল নিয়ে মাথা ফাটাফাটি হতো না, কন্সট্রাকশনের কাজ নিয়ে গোলাগুলি হতো না; শুধু জোরাজুরি লেগেই থাকত, ‘আরে আপনি আগে, আগে আপনে!...” ফ্লাইওভারে মাত্র চল্লিশ মিনিট! গত সপ্তাহে ফ্লাইওভার সংক্রান্ত বড় খবরটি ঢাকাবাসীর জানতে বাকি নেই। বিশেষ করে যেসব সড়কে ফ্লাইওভার নির্মিত হচ্ছে তার আশপাশের মানুষের মাথায় হাত পড়ার মতোই অবস্থা। ভুল নকশার কারণে মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওয়ারের ৬০টি পিলার ভেঙে ফেলা হচ্ছে। তার মানে বছরের পর বছর ধরে চলমান ধারাবাহিক যন্ত্রণা আরও প্রলম্বিত হলো। যাক, আমি সেকথায় যাচ্ছি না। বলছিলাম মহাখালী ফ্লাইওভারের কথা। না, সেটি ঠিকই আছে, কিন্তু সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে অফিস আসতে গিয়ে সেখানে ঠায় অবস্থান করতে হলো পাক্কা চল্লিশ মিনিট। সহযাত্রী বললেন, শোকর করুন যে ঘণ্টা পার হয়ে যায়নি। সত্যিই তো! পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, সপ্তাহের কমপক্ষে দুটো দিন ওই ফ্লাইওয়ারের জন্য এক ঘণ্টা বাড়তি ধরে রাখা লাগে। ঢাকায় যানজটে সবচেয়ে বেশি যেসব জায়গায় সময়ের অপচয় হয়, মহাখালীকে তার শীর্ষ তালিকায় নির্ঘাত রাখা লাগবে। অথচ যানজট হ্রাসের জন্যই সেটি নির্মাণ করা হয়েছিল! দু’কোটির ভ্রুকুটি ঢাকা ভারাক্রান্ত নানা কারণে। উপচেপড়া মানুষের কারণেও ঢাকা অনেকখানি বিপর্যস্ত। বাংলা পিডিয়া ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সূত্রে জানতে পারি প্রায় ১২৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ঢাকা মহানগরীর বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি। আয়তন অনুপাতে সারাদেশে জনবসতি প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে ১.৪ শতাংশ হারে আর ঢাকার জনবসতি বাড়ছে ৬ শতাংশ হারে। ১৮৭২ সালে ঢাকার জনসংখ্যা ছিল ৬৯ হাজার ২১২ জন। ১৯১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ২৫ হাজারে। ১৯৫১ সালে জনসংখ্যা হয় ৩ লাখ ৩৬ হাজার। তখন আয়তন ছিল প্রায় ৩৪ বর্গকিলোমিটার। ১৯৭৪ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ঢাকার জনসংখ্যা ছিল ১৬ লাখের ওপরে। ১৯৯১ সালে এই জনসংখ্যা ফিগার পুরোটাই উল্টে যায়, ১৬-এর উল্টো হলো ৬১। তখন জনসংখ্যা দাঁড়ায় ৬১ লাখ ৫০ হাজারে। বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, ২০০৭ সালে ঢাকার জনসংখ্যা ছিল ১ কোটি ২০ লাখ। অর্থাৎ গত ৫০ বছরে ঢাকার জনসংখ্যা বেড়েছে ৩৫ গুণ আর আয়তন বেড়েছে ১৮ গুণ। সোজা কথায় প্রতিবছর ঢাকায় যোগ হচ্ছে প্রায় ৯ লাখ মানুষ। বর্তমানে ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৩৪ হাজার লোক বসবাস করেন। এটাকে শুধু ঘনবসতি বললেও পুরোটা স্পষ্ট হয় না। দুরবস্থা বোঝানোর জন্য বলতে পারি, ভিড়াক্রান্ত পাবলিক বাসের ভেতর গায়ে গা লেগে দাঁড়ানোর মতো পরিস্থিতি এই ঢাকা শহরের। দু’কোটির ভ্রুকুটি কিভাবে যে সহ্য করে যাচ্ছে রাজধানী! বিদেশী ছবির দর্শক ঢাকায় এখন চলছে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। আর সদ্য সমাপ্ত হলো নয় দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। আটটি বিভাগে দেখানো হয়েছে বাংলাদেশসহ ৬০টি দেশের ১৮০টি চলচ্চিত্র। বিশাল আয়োজন! একসঙ্গে চারটি ভেন্যুতে চলেছিল উৎসব। শাহবাগেই ছিল দুটি ভেন্যু, যদিও জাতীয় জাদুঘরের নিচতলা ও তিন তলা মিলিয়ে দুটি মিলনায়তনে চলচ্চিত্র পরিবেশিত হয়। উইকএন্ড বৃহস্পতি ও শুক্রবার সন্ধ্যায় পরপর দুদিন গিয়েছিলাম শাহবাগে ছবির দুটি ভেন্যুতে। বিদেশি ছবি দেখার অভিজ্ঞতা চমৎকার, কিন্তু বাকি সব উৎসাহব্যঞ্জক নয়। দর্শকের সংখ্যা যথেষ্ট কম। টিকেটের মূল্য মাত্র ৫০ টাকা। বোঝা গেল টাকাটা বড় নয়, দেখার ইচ্ছেরই ঘাটতি ছিল। নাকি ঢাকার মানুষ এখন ঘরে বসে ডিভিডি প্লেয়ারেই সিনেমা দেখে নিতে বেশি পছন্দ করছে? এটা ভাববার মতো। তবে একটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই। টিকেট বিক্রয়কেন্দ্রে বসে থাকা বিক্রেতা তরুণ-তরুণীরা আগ্রহী দর্শকদের প্রশ্নের জবাব দিতে তেমন ইচ্ছুক ছিলেন না, অথচ এরা প্রত্যেকেই চলচ্চিত্রপ্রেমী, কেউবা চলচ্চিত্রকর্মী। এটা কেন হবে? তাছাড়া জাদুঘরে যে ছবি প্রদর্শনের কথা বলে টিকেট বিক্রি করা হলো সেখানে সে ছবি শুক্রবার প্রদর্শিত হয়নি। তার মানে ফিক্সচারেই ভুল টাইপ করা ছিল। সেক্ষেত্রে টিকেট বিক্রির সময় দর্শকদের সেটা জানানো কি কর্তব্য ছিল না? ফেসবুকে ঢাকার কড়চা ঢাকা আমাদের জন্য আকস্মিকভাবে বিস্ময় নিয়েও উপস্থিত হয়। আজ শিল্পপতি হারুন আল রশীদের পোস্ট তুলে দিচ্ছি। তিনি লিখেছেন : ‘দুপুরে পান্থপথ অতিক্রম করার সময় তোলা ছবিটি দেখে অনেকেরই চিনতে সমস্যা হবে না যারা কিনা নিয়মিত টিভি সংবাদ দেখেন। হ্যাঁ ইনি সেই বয়োবৃদ্ধ মহিলা যিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দাসিয়ারছড়ার গুচ্ছগ্রামে সফরের সময় তাকে নিয়ে গান গেয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। সেদিন মুগ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী তাকে বুকে টেনে নিয়েছিলেন পরম মমতায়। আজ তাকে কাছ থেকে দেখে গাড়ির গ্লাস নামিয়ে ইশারা করতেই কাছে এসে বিক্রির উদ্দেশ্যে হাতে থাকা লুছনি দুটো এগিয়ে দিলেন। ঐ দুটো নিয়ে ১০০০ টাকার একটা নোট দিলাম, তিনি বলেন, ‘এটার ভাংতি নেই। আমারে ২০ টাকা ভাংতি দেন।’ বললাম ফেরত দিতে হবে না। উত্তর পেলাম, স্যার আমি বেশি টাকা নিমু না।’ তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি ছিটমহলবাসী না? উত্তরে বলেন ‘আমি এই দেশের মানুষ।’ তাকে বললাম আপনি যে গানটা গেয়েছিলেন শেখের বেটিকে নিয়ে ওটা একটু শোনাবেন? বৃদ্ধা শুরু করলেন গান, কিন্তু দুর্ভাগ্য ট্রাফিক সিগন্যাল ছেড়ে দেয়ার কারণে আর শোনা হয়নি। সশ্রদ্ধ সালাম বোন, তোমাকে লোভ তাড়া করে না, লোভের উর্ধে উঠে পরিশ্রমের ন্যায্য বিনিময়মূল্য পেয়েই তুমি তুষ্ট। তাই বলি এ দেশের মানুষ সোনার মানুষ, এই সোনার মানুষগুলোকে কাজে লাগাতে পারলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ আর বেশি দূরে নয়।’ ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ [email protected]
×