ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আজ পটুয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে দাফন

চলে গেলেন বিএফইউজে নেতা আলতাফ মাহমুদ, শ্রদ্ধা ভালবাসায় সিক্ত

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬

চলে গেলেন বিএফইউজে নেতা আলতাফ মাহমুদ, শ্রদ্ধা ভালবাসায় সিক্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে-একাংশ) সভাপতি আলতাফ মাহমুদ (৬৫) আর নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। ১৪ জানুয়ারি স্পাইনাল কর্ডের (মেরুদ-ের হাড়) সমস্যা, মাথার পেছনে ও ঘাড়ে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন প্রবীণ এ সাংবাদিক। এরপর ২১ জানুয়ারি সকালে তার স্পাইনাল কর্ডের অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পরপরই আইসিইউতে নেয়া হয় তাকে। ২২ জানুয়ারি তার জ্ঞান ফেরে। পরে আবার তার অবস্থার অবনতি হলে আইসিউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি ভোরে মারা যান। তার মেয়ে আইরিন মাহমুদ বলেন, অস্ত্রোপচারের পর থেকে তার বাবাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শনিবার রাত ৩টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও জাতীয় প্রেসক্লাবে জানাজার পর রবিবার দুপুরেই আলতাফ মাহমুদের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে পটুয়াখালীর গলাচিপায় তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। আজ সকালে গ্রামের বাড়িতেই মরহুমের শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পরে তাকে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় রবিবার সকালেই সাংবাদিক, মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ ছুটে আসেন সাংবাদিকদের এই প্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি এবং প্রেসক্লাবে সাবেক সহকর্মী, রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত হন সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা আলতাফ মাহমুদ। বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংসদ হাছান মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আফজাল হোসেন, তথ্যসচিব মরতুজা আহমদ, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান ও পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জানাজায় অংশ নেন। সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সাংবাদিক ইউনিয়ন নেতা রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, আমানউল্লাহ কবির, শাহজাহান মিয়া, মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আবদুল জলিল ভুইয়া, ওমর ফারুক, কুদ্দুস আফ্রাদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক স্বপন সাহা, স্বপন দাশগুপ্ত, কার্তিক চ্যার্টাজি, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সভাপতি নাসিমুন আরা হকসহ অনেকেই এসেছিলেন আলতাফ মাহমুদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। প্রেসক্লাবে জানাজা শেষে মরহুমের মরদেহ গ্রামের বাড়ি গলাচিপায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, রেলপথমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ডেপুটি স্পীকার মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া, সমবায় প্রতিমন্ত্রী মোঃ মসিউর রহমান রাঙ্গা, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেকেই শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে-একাংশ) সভাপতি আলতাফ মাহমুদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বঙ্গভবনের ফেসবুক পেজে রাষ্ট্রপতির শোক প্রকাশের বিষয়টি জানানো হয়েছে। সাংবাদিক আলতাফ মাহমুদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা ও অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এক শোক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে তিন দশক আলতাফ মাহমুদ সাংবাদিকতা জগতে নিজের কর্ম ও প্রতিভা দিয়ে সকলের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছিলেন। পেশাগত অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি ছিলেন আপোসহীন ও অগ্রগামী সাংবাদিক নেতা। ’৭৫-এর আগস্ট ট্র্যাজেডির পর সামরিক জান্তারা এদেশে জাতির পিতার নাম নেয়ার ক্ষেত্রে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলেন। তখন সাপ্তাহিক খবর ও দৈনিক খবর পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর কথা তুলে ধরে তিনি অসীম সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছিলেন। আলতাফ মাহমুদ দীর্ঘদিন সাপ্তাহিক খবরের প্রতিবেদক ছিলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বড় বড় সমাবেশের সংবাদ সংগ্রহ করেছেন তিনি। বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশোতেও তাকে দেখা গেছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে। অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আলতাফ মাহমুদ। তিনি ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের পাঁচবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর এ অকালে চলে যাওয়ায় সাংবাদিক জগতে যে শূন্যতা তৈরি হলো, তা সহজে পূরণ হবার নয়। দেশ জাতি তাঁকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। কর্মের মাঝেই তিনি বেঁচে থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। আলতাফ মাহমুদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএফইউজের (একাংশ) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুদ্দিন হারুন, মহাসচিব এম আবদুল্লাহ এবং ডিইউজের (একাংশ) সভাপতি আবদুল হাই শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান। বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান এক শোক বার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। দৈনিক ডেস্টিনির নির্বাহী সম্পাদক আলতাফ মাহমুদ সাংবাদিকতায় আসেন গত শতকের সত্তরের দশকে। তিনি দীর্ঘদিন সাপ্তাহিক খবরের প্রধান প্রতিবেদক ছিলেন। সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচনগুলোতে বিপুল ভোটে জয়ী হতেন বলে তাকে বলা হতো ‘সাধারণ সাংবাদিকের নেতা’। মৃত্যুর আগে হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও সাংবাদিকদের জন্য মঙ্গল কামনা ছিল আলতাফ মাহমুদের কণ্ঠে। সার্ভিক্যাল কম্প্রেসিভ মাইলো রেডিকিউলোপ্যাথিতে আক্রান্ত এই সাংবাদিকের স্পাইনাল কর্ডে অস্ত্রোপচার করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা। অস্ত্রোপচারের আগের দিন গত বুধবার বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের বিছানায় শুয়ে আলতাফ মাহমুদ আবেগমাখা কণ্ঠে তাঁকে দেখতে আসা সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিকরা ভাল থাকুক- এটাই আমার প্রত্যাশা। সবাইকে বলবেন আমার কথা। বিএফইউজে’র আওয়ামী লীগ সমর্থিত অংশের সভাপতি হওয়ার আগে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন আলতাফ। ১৯৯১ সালে অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। জীবনভর সাংবাদিকদের পক্ষে লড়াই করে এলেও শেষ জীবনে এই সাংবাদিকের চিকিৎসা চালাতে গিয়ে অর্থ সঙ্কটে পড়তে হয় তার পরিবারকে। আলতাফ মাহমুদের স্ত্রী তাহমিনা মাহমুদ বুধবার বলেন, আমার কেন যেন মন টানছে, ব্যাংকক কিংবা সিঙ্গাপুরে নিয়ে অস্ত্রোপচার করলে ভাল হতো। আমার কেন যেন মন ছটফট লাগছে। বিদেশে নিতে বহু টাকার দুশ্চিন্তাও আছে। সেজন্য কিছুই করতে পারছি না। এই প্রেক্ষাপটে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান দেয়া হয় আলতাফের পরিবারকে। বৃহস্পতিবার অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তারা আশাবাদী। কিন্তু শনিবার রাতে হঠাৎ তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। সকালে চিকিৎসকরা লাইফ সাপোর্ট খুলে নিয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জীবনভর সাংবাদিকদের দুঃসময়ে পাশে ছিলেন আলতাফ মাহমুদ। তার এভাবে চলে যাওয়ায় সাংবাদিক সমাজে নেমে আসে শোকের ছায়া। দৈনিক ডেস্টিনির নির্বাহী সম্পাদক আলতাফ মাহমুদের সাংবাদিকতার শুরু সত্তরের দশকে, দৈনিক স্বদেশে। এরপর সাপ্তাহিক থবর, দৈনিক খবর, সাপ্তাহিক চিত্রবাংলা, দৈনিক কিষানসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেছেন তিনি। সহকর্মীরা জানান, সাংবাদিকদের রুটি-রুজির আন্দোলনে সব সময় প্রথম কাতারে ছিলেন আলতাফ মাহমুদ। কোন পত্রিকায় বেতন আটকে থাকলে, কোথাও ছাঁটাই হয়েছে শুনলে তিনি নিজে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন। সাংবাদিকতায় থিতু হওয়ার আগে কিছুদিন চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন আলতাফ মাহমুদ। মৃত্যুর আগেও তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, পটুয়াখালী থেকে আলতাফ ঢাকায় এসেছিলেন নায়ক হবেন বলে। আমি তাকে দোস্ত বলে ডাকি। সরদার জাহাঙ্গীরের পরিচালনায় ‘জীবন’ নামের একটি ছবিতে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ও করেছিলেন। অবশ্য নানা জটিলতায় সেই ছবিটি আর মুক্তি পায়নি। দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সূচনা, চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠের জনসভায় শেখ হাসিনার ওপর গুলিবর্ষণসহ অনেক ঘটনার সাক্ষী ছিলেন আলতাফ মাহমুদ। একবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ১৯৭৫ সালে যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপতে গণমাধ্যম ভয় পেত, তখন আমি বঙ্গবন্ধুর ছবি বুকে নিয়ে সাহস করে সাপ্তাহিক খবরে প্রকাশ করেছিলাম। গলাচিপা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাফ মাহমুদের লাশ সোমবার দুপুরে দাফন হবে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া গ্রামের নিজস্ব বাড়ির কবরস্থানে বাবা-মায়ের সমাধির পাশে। আলতাফ মাহমুদের শেষ ইচ্ছানুযায়ী এ দাফন হবে। পারিবারিক ভাবে ইতোমধ্যে তাঁর লাশ দাফনের সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রবিবার বিকেল বেলা সাড়ে চারটায় ইমপ্রেস এ্যাভিয়েশনের হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে আলতাফ মাহমুদের মরদেহ গলাচিপা নিয়ে আসা হয়। মরদেহের সঙ্গে মরহুমের স্ত্রী, ছেলে, ভাই ও স্থানীয় এমপি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন আসেন। স্থানীয় হেলিপ্যাডে আলতাফ মাহমুদের লাশ গ্রহণের জন্য স্থানীয় সাংবাদিক, প্রশাসন ও রাজনীতিকসহ বিভিন্ন স্তরের হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মরহুমের লাশ প্রথমে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় প্রাঙ্গণে নেয়া হয়। বিভিন্ন সংগঠনসহ সেখানে সর্বস্তরের হাজারো মানুষ আলতাফ মাহমুদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। সন্ধ্যায় মরহুমের লাশ গলাচিপা পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রূপনগর আবাসিক এলাকার বাড়িতে নেয়া হয়। সেখানেও সর্বস্তরের মানুষ মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সোমবার সকাল দশটায় উপজেলা শহরের জৈনপুরী খানকা মাঠে মরহুমের জানাজা হবে। পরে ডাকুয়া গ্রামের বাড়িতে আরেকবার জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হবে। এদিকে পটুয়াখালী ও গলাচিপা প্রেসক্লাব আলতাফ মাহমুদের মৃত্যুতে তিন দিনের শোক কর্মসূচী ঘোষণা করেছে। উভয় প্রেসক্লাবে কালোপতাকা উত্তোলন, কালোব্যাজ ধারণ, দোয়া-মোনাজাত কর্মসূচী পালিত হচ্ছে। সাংবাদিক সমাজের সংগ্রামী নেতা ও গলাচিপার সর্বজনশ্রদ্ধেয় প্রিয় এই ব্যক্তিত্বকে শেষ বিদায় জানাতে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গলাচিপা শহরের এক সময়ের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম সুন্দর আলী খানের চতুর্থ সন্তান আলতাফ মাহমুদ ছিলেন স্থানীয় সকল পর্যায়ের মানুষের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধাপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তাঁর মৃত্যুতে এলাকাবাসী বিশেষ করে সংবাদকর্মীরা একজন অভিভাবক হারালেন। চট্টগ্রামে শোকের ছায়া ॥ স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, আলতাফ মাহমুদের মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সাংবাদিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন শোক প্রকাশ করেছে। এই সাংবাদিক নেতার মৃত্যুতে পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বিএফইউজে সহসভাপতি শহীদ উল আলম, যুগ্ম মহাসচিব তপন চক্রবর্তী, কার্যনির্বাহী সদস্য নওশের আলী খান ও আসিফ সিরাজ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি এজাজ ইউসুফী, সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হায়দার, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী প্রমুখ। নেতৃবৃন্দ মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
×