ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কোকোর কবর জিয়ারত পঞ্চদশ সংশোধনী মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা ॥ খালেদা

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬

কোকোর কবর জিয়ারত  পঞ্চদশ সংশোধনী মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা ॥ খালেদা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রয়াত ছোট ছেলে কোকোর কবর জিয়ারত করতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। রবিবার দুপুরে কোকোর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আত্মীয়-স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে বনানী কবরস্থানে গিয়ে ছেলের কবরের পাশে বসে দোয়া-কালাম পাঠ ও মোনাজাতকালে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা তিনি সেখানে অবস্থান করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান, মেয়ে জাফিয়া রহমান, জাহিয়া রহমান, কোকোর শ্বশুর ও শাশুড়ি, খালেদা জিয়ার ছোট বোন, ভাইয়ের ছেলে ও মহিলা দলের নেতাকর্মীরা। এদিকে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাকশাল গঠনের দিনকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে এ দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘পঞ্চদশ সংশোধনী মৃত বাকশালের প্রেতাত্মা’। ‘পঞ্চদশ সংশোধনীতে প্রধানমন্ত্রীকে একচেটিয়া ক্ষমতা দিয়ে মূলত গণতন্ত্রকে সমাধিস্থ করে তার ওপর নির্দয় শাসনের ইমারত নির্মাণ করা হয়েছে। খালেদা জিয়া বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার লক্ষ্যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের গলাটিপে হত্যা করে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা বাকশাল কায়েম করে। এটি করতে গিয়ে তারা জাতীয় সংসদে বিরোধী মতামতকে উপেক্ষা করে এক প্রকার গায়ের জোরেই অমানবিক মধ্যযুগীয় চতুর্থ সংশোধনী আইন পাস করে। এমনি এক দুঃসময়ে ৭৫-এর ৭ নবেম্বর সিপাহি-জনতার সম্মিলিত স্রোতধারায় জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। তিনি গণতন্ত্রকে মুক্ত করেন। শুরু হয় বহুদলীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা। নিশ্চিত হয় মানুষের মৌলিক মানবিক অধিকার। খালেদা জিয়া বলেন, বহু চক্রান্তের চোরাগলি দিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে এখন আবারও অবৈধভাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট বাকশালী চেতনায় নতুন করে অসংখ্য প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত গণতন্ত্রকে ভূগর্ভে সমাহিত করে ফেলেছে। এদের ঐতিহ্যই হচ্ছে গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা। তিনি বলেন, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী মানুষের বাক, ব্যক্তি, চলাচল ও সমাবেশের স্বাধীনতাসহ সকল মৌলিক অধিকার হরণ করে। সব সংবাদপত্র বাতিল করে তাদের অনুগত চারটি প্রকাশনা চালু রাখার ফরমান জারি করে। এর ফলে চিরায়ত গণতন্ত্রের প্রাণশক্তিকেই তারা সেদিন নিঃশেষ করে দেয়। দেশবাসীর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফলে অর্জিত মানুষের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে তারা ভূলুণ্ঠিত করে সমাজে এক ভয়াবহ নৈরাজ্যের ঘন অমানিশা ছড়িয়ে দেয়। কোকোর মৃত্যুবার্ষিকীর অন্যান্য কর্মসূচী ॥ কোকোর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাদ আসর নয়াপল্টন ভাসানী ভবনে ও বাদ মাগরিব গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের বাসভবন ও কার্যালয়ে দোয়া মাহফিল ও কোরান পাঠের আয়োজন করা হয়। ভাসানী ভবনে দোয়া মাহফিলে অংশ নিতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ওয়ান ইলেভেনের নির্যাতনে জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তিনি বলেন, রাজনীতি না করেও কোকো জনগণের কাছে যে জনপ্রিয় ছিল তার প্রমাণ তার জানাজায় লাখ লাখ লোকের অংশগ্রহণ।
×