ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে বিদ্যালয়ে শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানবিজ্ঞানে হতে হবে বিশ্বমানের

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন প্রজন্মকে জ্ঞানবিজ্ঞানে হতে হবে বিশ্বমানের

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ, ২৪ জানুয়ারি ॥ ‘ভার্টির শার্দুল’খ্যাত মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বলেছেন, বর্তমান যুগ যে কোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক ও চ্যালেঞ্জিং। আর তাই নতুন প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে ও দক্ষতায় হতে হবে বিশ্বমানের। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ছাত্র সমাজের গৌরবময় ঐতিহ্যকে ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে এগিয়ে আসতে হবে। এ জন্য তিনি তাদের লোভ-লালসা বা হীনস্বার্থ চরিতার্থের মনোবৃত্তি যেন কোমল মনকে কলুষিত করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি রবিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তিতে তিন দিনব্যাপী উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন। উৎসব উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর মোঃ আবুল কাসেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু, মোঃ আফজাল হোসেন এমপি, রাষ্ট্রপতিপুত্র রেজওয়ান আহমদ তৌফিক এমপি, মোঃ সোহরাব উদ্দিন এমপি, জেলা পরিষদের প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন উৎসব কমিটির সদস্য সচিব অধ্যক্ষ ডাঃ আ. ন. ম নৌশাদ খান ও মানপত্র পাঠ করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোকাররম হোসেন শোকরানা। এ সময় রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীনসহ সামরিক বেসামরিক পর্যায়ের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে আরও বলেন, কিশোরগঞ্জে অচিরেই একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। যার প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। এটি শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে নির্মিত হবে। তিনি আজিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় সরকারীকরণের দাবির প্রেক্ষিতে বলেন, ১৯৬১ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সময় সর্বপ্রথম শিক্ষার্থীদের নিতে তিনি এখানে আসেন। তৎকালীন প্রধান শিক্ষক মরহুম মতিউর রহমানের আন্তরিকতায় এ স্কুলের ছাত্র ছিলেন না বলে নিজেকে কখনও মনে করেননি। এ জন্য স্কুল সরকারীকরণে তার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবেন বলে ঘোষণা দেন। বিদ্যালয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি এ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মুন্সী আজিমউদ্দিন আহমদসহ প্রাক্তন কৃতী ছাত্র মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণে আনেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হচ্ছে মানুষ গড়ার কারখানা, আর আপনারা তার মহান কারিগর। এ জন্য শিক্ষার্থীদের সুশিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরিত করতে আপনাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন। কেননা, দেশ ও জনগণের কাছে আমরা প্রত্যেকেই দায়বদ্ধ। এ সময় তিনি বর্তমান সরকারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ দেশব্যাপী শিক্ষা বিস্তার ও মানোন্নয়নে নানামুখী প্রদক্ষেপ গ্রহণের কথা তুলে ধরেন। এরপর রাষ্ট্রপতি দর্শক সারিতে বসে কিছুক্ষণ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করে সন্ধ্যায় সার্কিট হাউসে স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। ওইদিন রাতে তিনি শহরের খরমপট্টির নিজ বাসভবনে রাতযাপন করেন। আজ সোমবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টায় রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনের উদ্দেশে কিশোরগঞ্জ ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
×