ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আসন্ন অনূর্ধ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৮:৪৫, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

আসন্ন অনূর্ধ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন অনূর্ধ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে সব ধরনের হুমকি ও আশঙ্কা মাথায় রেখে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে। এবারের নিরাপত্তায় জনবল বৃদ্ধির চেয়ে প্রযুক্তিগত বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা ছক জানার পর সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইসিসি (আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল) ও বিসিবির (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টরা। এতে ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আইসিসির নিরাপত্তা ম্যানেজার। সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত্র ব্রিফিংয়ে বলা হয়, অতীতের অন্যান্য আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের চেয়েও এবারের টুর্নামেন্ট হবে আরও নিরাপদ ও নিশ্চিত। উল্লেখ্য, আগামী ২৭ জানুয়ারি দেশের চারটি জেলার আটটি ভেন্যুতে শুরু হচ্ছে অনূর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর। এ উপলক্ষে শনিবার উত্তরার লা মেরিডিয়ান হোটেলে আসন্ন বিশ্বকাপের নিরাপত্তা নিয়ে আইসিসি ও বিসিবির সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সঙ্গে বৈঠক করেন র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা। এ সময় আইসিসির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির সিকিউরিটি ম্যানেজার শন ন্যারিস। র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, বিশ্বকাপ ক্রিকেট, এশিয়া কাপ ও টি-২০’র বড় আসর সফলভাবে আমরা আয়োজন করেছি। ইতোমধ্যে নিরাপত্তার সব বিষয় আমরা পর্যালোচনা করেছি। আইসিসি ও বিসিবির নিরাপত্তা দলের সঙ্গেও আমাদের বৈঠক হয়েছে। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ব্যাপারগুলো নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার এ ধারা অব্যাহত থাকবে টুর্নামেন্টের শেষ দিন পর্যন্ত। আমাদের বোম্ব স্কোয়াড, ডগ স্কোয়াড এবং যানবাহন স্ক্যানার দলও এর জন্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে এবার একটি মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় হোটেলে বসেই যেন সর্বক্ষণিক সবকিছু মনিটরিং করা যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এতে করে কোন টিম কোথায় যাচ্ছে সেটিও মনিটরিং করা যাবে। খেলোয়াড়রা যেখানে থাকবেন, সেই স্থান পুরো নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত আপডেট করা হবে। এ জন্য সকলের সহযোগিতাও প্রয়োজন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সব সময় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিক বিবেচনায় রাখতে হয়। সকল আশঙ্কা, হুমকি ও তথ্য বিবেচনা করে আমরা আমাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করি। এ জন্য ছোট থেকে ছোট তথ্যও আমরা বিবেচনায় রাখি। এ সময় সাংবাদিকদের দেখানো হয় কিভাবে একটি ভেহিকল স্ক্যানার কম সময়ে ২শ’ ফোর্সের চেয়ে বেশি কাজ করতে সক্ষম। র‌্যাবের ডিজি বলেন, বিশ্বকাপ উপলক্ষে হোটেল, খেলার ভেন্যুগুলো নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তা রক্ষায় জিপিএস পদ্ধতি, ভেহিকেল ট্র্র্যাকিং স্ক্যানার, ডগ স্কোয়াড, ভেন্যু অপারেশন কমান্ড স্থাপনসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন করা হয়েছে। যুব বিশ্বকাপের নিরাপত্তায় প্রযুক্তি সম্পর্কে জানা যায়, ভ্রাম্যমাণ এক্সরে মেশিন, বোমা উদ্ধারের পোশাকসহ বোমা শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয়করণের বিভিন্ন সরঞ্জামের পাশাপাশি গোয়েন্দা সরঞ্জামের মধ্যে আছেÑ রাতে দেখার চশমা, বাইনোকুলার, আর্চওয়ে গেট, মোবাইল ট্র্যাকার, লাগেজ স্ক্যানার, স্বয়ংক্রিয় যানবাহন স্ক্যানার। এছাড়া যানবাহনের মধ্যে আছে সাঁজোয়া যান, কুকুর বহনের গাড়ি, জলকামান, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রেকার, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, বাস, ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল। যোগাযোগ সরঞ্জামের মধ্যে আছে- বিভিন্ন ধরনের বেতার সরঞ্জাম, ওয়াকিটকি, ভিডিও ক্যামেরা, ডিজিটাল ক্যামেরা, সিসিটিভি ক্যামেরা, সিসিটিভি মনিটর, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নাইন এমএম পিস্তল ইত্যাদি। পুলিশের এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, পুলিশ, র‌্যাব সদস্যদের পাশাপাশি থাকবে ব্যাপক সাদা পোশাকে গোয়েন্দা তৎপরতা। স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা কিভাবে সাজানো হবে তা নিয়ে একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বিশ্বকাপের সুষ্ঠ, শান্তিপূর্ণ ও সফল আয়োজনের সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তির বিষয়টি জড়িত। বিশ্বকাপ ক্রিকেট কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনায় মানুষজনের স্বতস্ফূর্ততার আগাম আভাস পাওয়ায় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
×