ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চীনে শ্লথ প্রবৃদ্ধি

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

চীনে শ্লথ প্রবৃদ্ধি

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির শ্লথ চক্র থেকে বের হতে পারছে না চীন। ২০১৫ সালে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। গত মঙ্গলবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে চীনের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে ২০১৫ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। এটি গত ২৫ বছরে দেশটির সবচেয়ে শ্লথ প্রবৃদ্ধির হার। ২০১৫ সালে চীনের জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ছিল ৭ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ না হওয়া প্রসঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেন, প্রবৃদ্ধি শ্লথ হলেও তা গ্রহণযোগ্য। কারণ, গত বছর প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৮ শতাংশের কম হলে অন্যান্য উদ্দীপকের ওপর প্রভাব ফেলবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির শ্লথ দশার কারণে চীন রফতানি ও বিনিয়োগ খাতের পর ভোগ্যপণ্য ও সেবা খাতের দিকেও ঝুঁকছে। অর্থনীতিতে শ্লথ গতি থাকলেও জাতীয় পর্যায়ে বিনিয়োগ বাড়াতে ২০১৪ সালের নবেম্বর থেকে এ পর্যন্ত চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছয়বার সুদের হার কমিয়েছে। সম্প্রতি চীনের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন বিশ্ববাজারে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। আর দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মন্দ খবর বিশ্বে আরও সঙ্কট সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক আর্থিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ফরেক্সলাইভ-এর এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলের প্রধান বিশ্লেষক ইয়ামন শেরিডান বলেন, ‘বাজারকে গতিশীল রাখতে চায়নিজ নতুন বছরের শুরুর আগে হয়ত আরও একবার সুদের হার কমানো হবে বলে আশা করছি।’ ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়, গত মঙ্গলবার দেশটির মাসিক উৎপাদন ও খুচরা বিক্রির ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে দেখা যায়, যা প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তার চেয়েও মন্দ ফল এসেছে। ওই প্রতিবেদন অনুসারে, গত ডিসেম্বরে দেশটির উৎপাদনের হার ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে এটি গত নবেম্বরের চেয়ে ৬ শতাংশ কম। আর ডিসেম্বরে খুচরা বিক্রির হার ছিল ১১ দশমিক ১ শতাংশ, যা নবেম্বরে ছিল ১১ দশমিক ৩ শতাংশ। দেশটির সম্পত্তির মূল্য আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়। দেশটির অর্থনীতিতে ১৫ শতাংশ অবদান রয়েছে আবাসন খাতের। ডিসেম্বরে এ খাতে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ইউয়ানের দুর্বল নীতি গ্রহণ করায় ডিসেম্বরে দেশটির রফতানি ২ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ে। তবে এর আগের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, দেশটির রফতানি গত মাসে ৪ দশমিক ১ শতাংশ কমবে। ডলারের বিপরীতে ইউয়ান দুর্বল হওয়ায় ডিসেম্বরে আমদানিও সঙ্কুচিত হয়েছে। ২০১৫ সালের জুনের পর ডিসেম্বরেই রফতানি বাড়ে। তবে মাঝের মাসগুলোতে রফতানি কমে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান এএমপি ক্যাপিটাল ইনভেস্টরস লিমিটেডের প্রধান অর্থনীতিবিদ শেইন অলিভার ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘চীনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি শ্লথ, তবে ধস নামেনি। নীতির পরিবর্তন দেশটির অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে পারে।’ সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া
×