ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষকের বিরূপ মন্তব্যে পাঁচ শিক্ষার্থীর স্কুল বন্ধ

প্রকাশিত: ০৪:১২, ২৪ জানুয়ারি ২০১৬

শিক্ষকের বিরূপ মন্তব্যে পাঁচ শিক্ষার্থীর স্কুল বন্ধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৩ জানুয়ারি ॥ নবম শ্রেণির রাখাইন শিক্ষার্থী খেন খেনসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়াসহ নিজস্ব মনগড়া উক্তি করেছেন একই বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আফজাল হোসেন। এমনকি রাখাইন ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মুসলমান ছাত্রছাত্রীকে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করে দিয়েছেন। এ ঘটনায় কেউ স্বাক্ষ্য দিলে তাকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করারও হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অপমানিত হয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রী খেন খেনসহ তুলাতলী রাখাইন পাড়ার পাঁচ শিক্ষার্থী। কোন উপায় না পেয়ে খেন খেন রাখাইন ছাত্রীর মা মায়া রাখাইন বিষয়টির সুষ্ঠু ফয়সালা চেয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) দীপক কুমার রায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ২১ জানুয়ারি এ অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। খবর লিখিত অভিযোগসহ বিভিন্ন সূত্রের। অভিযোগে মায়া রাখাইন উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে খেন খেন বালিয়াতলী ইউনিয়নের তুলাতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। গত ১০ জানুয়ারি ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আফজাল হোসেন তার মেয়ে খেন খেনকে ক্লাস চলাকালীন বলেন, ‘তোমরা অপবিত্র। তোমাদের ধর্মও অপবিত্র। তোমরা বিভিন্ন ধরনের কু-খাবার ভক্ষণ কর। তোমরা জাহান্নামবাসী।’ কোন মুসলিম ছাত্রছাত্রী কোন রাখাইন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে বন্ধুত্ব না করে এমন কথাও বলেন মাওলানা আফজাল। বিষয়টি প্রধান শিক্ষককেও জানানো হয় বলে মায়া তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন। কোন প্রতিকার না পেয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি ইসলাম ধর্মের হালাল-হারাম বিষয় পড়াচ্ছিলাম। ও (খেন খেন) যে ক্লাসে ছিল তাও খেয়াল করিনি। কাউকে ইনডিকেট করে কিছু বলা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে রঙ দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন।’ প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন জানান, এ বিষয়ে মাওলানা আফজাল হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি ইসলাম ধর্মের বিধানে কি কি খাওয়া হালাল ও হারাম তা পড়াচ্ছিলেন। রাখাইনদের উদ্দেশে কটাক্ষ করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবিএম হুমায়ুন কবির জানান, বিষয়টি তার কাছে রাখাইন অভিভাবকরা জানালে তিনি প্রধান শিক্ষককে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। কলাপাড়া থানার ওসি জিএম শাহনেওয়াজ জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে একজন এসআইকে বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) দীপক কুমার রায় জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়ে তিনি সঙ্গে সঙ্গে কলাপাড়া থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
×