ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্যোগে প্রাণ রক্ষায় নারীর হাতের মোবাইল

প্রকাশিত: ০৭:০২, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

দুর্যোগে প্রাণ রক্ষায়  নারীর হাতের  মোবাইল

চরআগুনমুখার মাঝ বয়সী গৃহবধূ শাহিনুর বেগমের হাতে মোবাইল ফোন ছিল বলে ঘূর্ণিঝড় সিডরে স্বামী-সন্তানদের নিয়ে বেঁচে গেছেন। মূলভূমিতে বসবাসকারী আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে তিনি প্রতি মুহূর্তে মোবাইল ফোনে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধির খবর জেনেছেন আর সেভাবে জীবন বাঁচানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে ঘূর্ণিঝড় সিডর উপকূলে আঘাত হানে। তার আগে তিনি পরিবার নিয়ে দ্বীপভূমির উঁচু গাছে আশ্রয় নেন। সে সুবাদে সবার প্রাণ রক্ষা পায়। শুধু সিডর নয়। এর পরবর্তী আইলা থেকে যতগুলো ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হেনেছে, সবগুলোতে প্রাণ রক্ষা করেছে মোবাইল ফোন। শাহিনূর বেগমের মতে তাই-হাতের মোবাইল ফোনটি সন্তানের মতোই প্রিয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এটি রক্ষা কবজের কাজ করছে। শাহিনূর বেগমের মতো উপকূলে লাখো নারী রয়েছে, যাদের বসবাস বিচ্ছিন্ন দ্বীপমালায়। যে জনপদে আজও বিজ্ঞানের সব সুফল না পৌঁছালে বায়ু তরঙ্গের মোবাইল ফোন পৌঁছেছে। এ যন্ত্রটি বিলাসিতা নয়। এটি তাদের কাছে জীবন রক্ষার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন। উপকূলের দ্বীপ-চরগুলো বছরের প্রায় বারো মাস নানা ধরনের দুর্যোগ লেগেই থাকে। বর্ষায় যা ভয়াবহ আকার নেয়। ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস আঘাত হানে দ্বীপগুলোতে। অধিকাংশ দ্বীপ-চরে নেই রেডিও কিংবা টেলিভিশন। যে কারণে সময়মতো অনেক দ্বীপে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সঙ্কেত পৌঁছে না। সে সময় খবর পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হয়ে ওঠে হাতের মোবাইল ফোন। পটুয়াখালীর গলাচিপা ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় চরআগুনমুখার মতো বিচ্ছিন্ন চর-দ্বীপ রয়েছে শ’ খানেক। যার অধিকাংশতে মানুষ বসবাস করে। এসব দ্বীপগাঁয়ের মানুষের কাছে মোবাইল ফোন কতটা প্রয়োজনীয়, তা জানতে সম্প্রতি চর আগুনমুখায় গেলে শাহিনুর বেগমের মতো বেশ কয়েক নারী এর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, দ্বীপটিতে দেড় শ’য়ের মতো পরিবার বাস করে। অধিকাংশের পেশা সাগর-নদীতে মাছ ধরা। দ্বীপটির ৬০ পরিবারেই মোবাইল সেট রয়েছে। Ñশংকর লাল দাশ, গলাচিপা থেকে
×