স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আফ্রিদি ‘বুম বুম’, আধুনিক ক্রিকেটের আকর্ষণীয় অলরাউন্ডার। সেই আফ্রিদিকেই ব্যাটিংয়ের রুদ্রমূর্তি দেখালেন কোরি এ্যান্ডারসন। যিনি এক সময় এই ‘বুম বুম’-এর কাছ থেকে দ্রুততম ওযানডে সেঞ্চুরির রেকর্ডটা ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। ৪২ বলে ৮২ রানের ঝড়ের পর বল হাতে ২ উইকেটÑ একই সঙ্গে অলরাউন্ড নৈপুণ্য কাকে বলে? সেটিও দেখালেন কিউই তারকা। মূলত এ্যান্ডারসনের ধুরন্ধর নৈপুণ্যে ধরাশায়ী পাকিস্তান। ওয়েলিংটনে অঘোষিত ফাইনাল হয়ে ওঠা তৃতীয় ও শেষ টি২০তে ৯৫ রানের লজ্জার হার আফ্রিদিদের। জয় দিয়ে শুরুর পরও ২-১এ সিরিজ হার ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিদের! একই ভেন্যুতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে সোমবার । ১ জানুয়ারি ২০১৪Ñ ঘুম থেকে উঠেই একটা ধাক্কা খেয়েছিলেন আফ্রিদি। সকালে ভাতিজার চেচামেচিতে আড়মোড়া দিয়ে উঠেই শুনেছিলেন দুঃসংবাদ, দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা আর নেই! ‘ব্ল্যাক-ক্যাপস’ তরুণ সেদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৬ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছিলেন আফ্রিদির ১৮ বছরের পুরনো দ্রুতগতির সেই সেঞ্চুরির রেকর্ড। ভাতিজার প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানী তারকা বলেছিলেন, কোরি এ্যান্ডারসনকে নাকি তিনি চেনেনই না! নিশ্চই পরমুহূর্তে নামটা শুনেছেন। ওয়েলিংটনে সিরিজ নির্ধারণী টি২০তে কাল প্রতিপক্ষ অধিনায়ক হিসেবে মাঠে দাঁড়িয়ে সেই এ্যান্ডারসনের আসল রূপটাও দেখলেন ‘বুম বুম! ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা এ্যান্ডারসনের ৪২ বলে ৮২ রানের ঝড়ে ভর করে ২০ ওভারে ১৯৬ রানের চূড়ায় ওঠে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ১৬.১ ওভারে ১০১ রানে অলআউট পাকিস্তান। এ্যান্ডারসনের সেই রেকর্ডটি পরে ভেঙ্গে দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স (৩১ বলে সেঞ্চুরি)। কিন্তু তাতে তো আর এ্যান্ডারসনের ঝড় তোলার ক্ষমতা মিথ্যা হয়ে যায়নি! নিউজিল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার এর পরেও বেশ কয়েকবার ঝড় তুলেছেন। তবে আফ্রিদির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছিল না। এর আগে আফ্রিদির সঙ্গে একই ম্যাচে খেলেছেন পাঁচটি ইনিংসে, কিন্তু তেমন কিছু করতে পারেননি। এই সিরিজের প্রথম টি২০তে তো শূন্য রানে আউট হন। দ্বিতীয় ম্যাচে দুই ওপেনার খেলা শেষ করে দেয়ায় তিনি ব্যাটিংয়ের সুযোগই পাননি। নিজের জাত উপস্থাপনের জন্য তাই অঘোষিত ‘ফাইনাল’টাকেই বেছে নিলেন এ্যান্ডারসন। সবচেয়ে বড় ঝড় গেছে মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজের ওপর দিয়ে। আমিরের ৯ বলে ২১, আর রিয়াজের ১৪ বল থেকে নিয়েছেন ৩১ রান। সঙ্গে আফ্রিদির ৭ বল থেকে ১৩। ৪২ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৮২ রান করে অপরাজিত এ্যান্ডারসন।
অবশ্য কেবল এ্যান্ডারসনের কথা বললে গাপটিলের প্রতি অন্যায় করা হবে। ফর্মের তুঙ্গে থাকা ওপেনার ১৯ বলে ৪২ রান করেছেন ৬ চার ও ২ ছক্কায়। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ৩৪ বলে ৩৩ ও গ্রান্ট ইলিয়টের ১৪ বলে ১৯ উল্লেখ্য। সফল পেসার ওয়াহাব রিয়াজ নেন ২ উইকেট। জবাবে জয়ের জন্য ১৯৭ রানের বিশাল লক্ষ্য মাথায় নিয়ে হারার আগেই যেন হেরে বসে পাকিস্তান! পঞ্চম ওভারে ৩৬ রান জমা করতেই তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় অতিথিরা। উমর আকমল যখন সাজঘরে ফেরেন দলের রান তখন ৫৫। ৩.৫ ওভার আগেই ১০১ রানে অলআউট আফ্রিদিরা। সর্বোচ্চ ৩৬ বলে ৪১ সরফরাজ আহমেদের। এগারো ব্যাটসম্যানের মধ্যে দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল শোয়েব মালিক (১৪)। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৮ আফ্রিদির। এ্যাডাম মিলনে ও গ্রান্ট ইলিয়ট নেন ৩টি করে উইকেট।
শীর্ষ সংবাদ: