ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কমেছে শীতকালীন সবজির দর ;###;স্থিতিশীল অন্যান্য নিত্যপণ্য মূল্য

খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমানোর কোন প্রভাব পড়েনি

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমানোর কোন প্রভাব পড়েনি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ লিটারপ্রতি ভোজ্যতেলের দাম ৫ টাকা কমানো হলেও খুচরা বাজারে এর তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। সয়াবিন ও পামওয়েলসহ সব ধরনের ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে প্রায় আগের দামেই। সপ্তাহের ব্যবধানে আরও কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। চিকন চাল ছাড়া ডাল, আটা, চিনি, পেঁয়াজ, আলুসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বেড়েছে রসুনের দাম। মাছ ও মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, ফার্মগেট কাঁচা বাজার ও মোহাম্মদপুর টাউন হলো মার্কেট ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে, গত সপ্তাহে বাণিজ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা লিটারপ্রতি ৫ টাকা দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও খুচরা বাজারে এর তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। এতে করে ভোজ্যতেল কিনতে এসে ভোক্তারা বিরক্ত। তারা জানতে চান দাম কমানোর ঘোষণা আদৌ কার্যকর হবে কি না? ফার্মগেট বাজারের খুচরা ভোজ্যতেল বিক্রেতা সবুজ বলেন, তারা প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ৮৮ টাকায়, পামঅয়েল ৬০ টাকায় ও সুপার পামঅয়েল ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। মৌলভী বাজারের পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী ভুট্টো জানিয়েছেন, খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন তেল ৭৪ টাকায় টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। পাইকারিতে দাম আগেও কম ছিল। বর্তমানে ৭৪ টাকা করে পাইকারি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে দাম কমেছে কি না-বলতে পারছি না। তবে রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির তথ্যমতে, খোলা সয়াবিন তেল খুচরা বাজারে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা। পামওয়েল লুজ ১ টাকা কমে ৫৬-৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পামওয়েল সুপার মাত্র ২ টাকা কমে ৬০-৬৩ টাকায় বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। অর্থাৎ ব্যবসায়ীদের ঘোষণা দামে দেশের কোথাও ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে না। যদিও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিনিয়ত কমছে ভোগ্যপণ্যের দাম। গত কয়েক মাসে ভোজ্যতেলের দামও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এদিকে, সরবরাহ বাড়ায় কমেছে টমেটো, কাঁচা মরিচ, শিম, বাঁধাকপিসহ সব ধরনের সবজির দাম। চলতি মৌসুমের সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে কারওয়ান বাজারে। প্রতিকেজি দানাদার শিম ২৫ টাকায়, টমেটো ২০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ৩০ টাকায়, আমদানি করা পেঁয়াজ ২৫ টাকায়, দেশী পেঁয়াজ ২৮ টাকায়, দাম বেড়ে প্রতিকেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫৫ টাকায়। প্রতিটি ফুলকপি ১৫ টাকায়, বাঁধাকপি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে নতুন আলু মিলেছে ১৮ থেকে ২২ টাকা কেজিতে, যা চলতি মৌসুমে ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এছাড়া চালবাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি মিনিকেট ৪৬ টাকায়, নাজিরশাইল মানভেদে ৪৫ থেকে ৬০ টাকায় এবং বিআর-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়। টাউন হল মার্কেটের চালের খুচরা বিক্রেতা রায়হান মিয়া জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় নাজিরশাইল বস্তায় এক থেকে দেড় শ’ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারেও এর প্রভাব পড়ছে। তবে মোটা চালের দাম বাড়েনি। বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৩৮০ টাকায়, খাসির মাংস ৬৫০ টাকায়, ফার্মের মুরগি ১৩৫ টাকায় এবং পাকিস্তানী মাঝারি সাইজের মুরগির জোড়া ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যদিও বিয়েশাদী, পিকনিক এবং সামাজিক অনুষ্ঠানাদি বেড়ে যাওয়ায় গরুর মাংসসহ সব ধরনের মুরগির দাম বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত ডিসেম্বরে প্রতিকেজি গরুর মাংস ৪২০ টাকায় ও ফার্মের মুরগি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হয়। পাতিহাঁসের জোড়া ৫০০ টাকায়, চীনাহাঁসের জোড়া ১১০০ টাকায় ও রাজহাঁস প্রতিটি ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। শীতে হাঁসের মাংসের চাহিদা বাড়ে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও দাম কমেনি। মিঠাপানির মাছের দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
×