ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিজ জিততে না পারায় আফসোস মাশরাফিদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৩ জানুয়ারি ২০১৬

সিরিজ জিততে না পারায় আফসোস মাশরাফিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে প্রথম দুই ম্যাচ একতরফাভাবে জিতে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে চলে গিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। আত্মতৃপ্তি ভর করা দলটি তৃতীয় ম্যাচ থেকেই বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। আর সেটাই হিতে বিপরীত হয়ে গেল। টানা দুই ম্যাচ জিতে গেল জিম্বাবুইয়ে। ফলে বছরের প্রথম সিরিজ জিততে না পারার আফসোস সঙ্গী হয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দলের। তৃতীয় ম্যাচের পর শুক্রবার চতুর্থ টি২০ ম্যাচেও জয় তুলে নেয় জিম্বাবুইয়ে। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে জিম্বাবুইয়ে জিতেছে ১৮ রানে। প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৮০ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল জিম্বাবুইয়ে। জবাব দিতে নেমে ১৯ ওভারে ১৬২ রান করে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। হারের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি প্রত্যয় জানিয়েছেন আসন্ন এশিয়া কাপের আগেই ভুলত্রুটি শুধরে পরিস্থিতি পাল্টানোর। তবে পরাজয়কে হতাশাজনক আখ্যা দিয়ে তিনি পরিকল্পনা কাজে লাগাতে না পারাটাকেই দুষেছেন। ধারাবাহিকভাবেই এবার ৪ ম্যাচের টি২০ সিরিজে ভাল খেলেছেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। চতুর্থ ম্যাচে দলকে নেতৃত্ব দেয়ার চাপটাও কেটে যাওয়ায় নির্ভার হয়ে খেলেছেন তিনি। তৃতীয় ম্যাচে খেলানো একাদশে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে নেমেছিল উভয় দল। কিন্তু মাসাকাদজা শুরু থেকেই চড়াও হন বাংলাদেশী বোলারদের ওপর। যদিও প্রথম ওভারেই ভুসি সিবান্দাকে (৪) সাজঘরে ফিরিয়ে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন মাশরাফি। কিন্তু দ্বিতীয় উইকেটে মাসাকাদজা-রিচমন্ড মুতুম্বামি ৮০ রানের জুটি গড়েন বাংলাদেশী বোলারদের ওপর তা-ব চালিয়ে। মুতুম্বামি ২৫ বলে ৩২ রান করে ফিরে যান। তবে তৃতীয় উইকেটে ম্যালকম ওয়ালারের সঙ্গে জুটি বেঁধে মাত্র ৫ ওভারে ৬১ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহ পাওয়ার ভিত দেন মাসাকাদজা। ওয়ালার ১৮ বলে ১ চার ৩ ছক্কায় ৩৬ রানে বিদায় নিলেও মাসাকাদজা শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং ঝড় চালিয়ে গেছেন। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলার পথে জিম্বাবুইয়ের পক্ষে টি২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ৭৯ রানের নিজের রেকর্ডটা ভেঙ্গেছেন তিনি। ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করে ৫৮ বলে ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ৯৩ রান করেন মাসাকাদজা। ৪ উইকেটে ১৮০ রান তোলে জিম্বাবুইয়ে। একটি করে উইকেট নেন মাশরাফি, আবু হায়দার রনি, তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসান। জবাব দিতে নেমে মাত্র ১৭ রানেই চার টপঅর্ডার- সৌম্য সরকার (১১), তামিম ইকবাল (১), সাব্বির রহমান (১) ও সাকিবের (৪) উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তবে ৬ নম্বরে নেমে ঝড় তোলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। টানা তিন ম্যাচে ব্যর্থ হলেও এ ম্যাচে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় অর্ধশতক পান তিনি। বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্নটাও বাঁচিয়ে রাখেন। কিন্তু অন্যপ্রান্তে বেশিক্ষণ কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি তাকে। দারুণ বোলিং করেছেন বাঁহাতি স্পিনার তেন্ডাই চিসোরো ও পেসার নেভিল মাদজিভা। দু’জনেই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে বাংলাদেশের জয়ের আশা ধূলিসাৎ করে দেন। মাহমুদুল্লাহ ষষ্ঠ উইকেটে নুরুল হাসান সোহানের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটি গড়ে দলকে কক্ষপথে রেখেছিলেন। কিন্তু তিনি ৪১ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৪ রান করে ফিরে যাওয়ার পর আশা শেষ হয়ে যায়। মাশরাফি ১২ বলে ১ চার ২ ছক্কায় ২২ রান করে নতুন করে স্বপ্ন জাগিয়ে তোলেন। কিন্তু তার বিদায়ের পর আর সেটা সম্ভব হয়নি। ১ ওভার বাকি থাকতেই ১৬২ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। মাদজিভা ৩৪ রানে ৪টি ও চিসোরো ১৭ রানে ৩টি উইকেট নেন। বছরের শুরুটা সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে নামা বাংলাদেশ দলের সঙ্গী হয় আফসোস। এটিকে হতাশাজনক আখ্যা দিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য খেলতে নামলে হারটা অবশ্যই হতাশাজনক। বাংলাদেশের জার্সি গায়ে হারতে কারও ভাল লাগে না, দেখতেও ভাল লাগে না। তবে একটা ব্যাপার যে, সময় যেহেতু আছে, আমরা এ ব্যাপারটি কাটিয়ে উঠতে পারব। ভুলগুলো ঠিক করার চেষ্টা করব।’
×