ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ ম্যাচে চ্যালেঞ্জ মাশরাফি বাহিনীর, জিম্বাবুইয়ের সুযোগ সমতা আনার

সিরিজ জয় না সমতা, ফয়সালা আজ

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২২ জানুয়ারি ২০১৬

সিরিজ জয় না সমতা, ফয়সালা আজ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ তৃতীয় ম্যাচে হেরে যাওয়াতে আর সিরিজ জেতা হয়নি। তবে সুযোগ শেষ হয়নি মাশরাফি বিন মর্তুজার দলের। চতুর্থ টি২০ জিতলেই সিরিজ নিজেদের পক্ষে চলে আসবে বাংলাদেশের। কারণ ইতোমধ্যেই চার ম্যাচের টি২০ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে দল। আজ খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টি২০ ম্যাচ। আজকের ম্যাচ জিতলেই বছরের প্রথম সিরিজই নিজেদের পক্ষে রাখতে পারবে বাংলাদেশ। তবে সিরিজ হাতছাড়া হওয়ার সুযোগ নেই এবং আগেভাগেই চতুর্থ টি২০ ম্যাচের দল ঘোষণা করার কারণে ‘আসল’ সমন্বয় নিয়ে এ ম্যাচেও নামতে পারছে না টাইগাররা। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে আবারও মুখোমুখি হবে ‘পরীক্ষামূলক’ স্কোয়াড। এ কারণে সফরকারী জিম্বাবুইয়ের জন্য দারুণ সুযোগ আেেরকটি ম্যাচ জিতে সিরিজে সমতা আনার। গত নবেম্বরে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিল বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে। সেবারও প্রথম ম্যাচ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হেরে যাওয়া জিম্বাবুইয়ে টানটান উত্তেজনার দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছিল নাটকীয়ভাবে। এবারও সেই একই স্বপ্ন সফরকারীদের। টানা দুই ম্যাচে সহজেই আত্মসমর্পণ করার পর তৃতীয় ম্যাচ ছিল তাদের জন্য বাঁচা-মরার। সেই ম্যাচে সব বিভাগেই বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থেকেই জয় তুলে নিয়েছে জিম্বাবুইয়ে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিজেদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়েছে ৬ উইকেটে ১৮৭ রান করেছে তারা। টি২০ ক্রিকেটে সেটি ছিল তাদের তৃতীয় সর্বাধিক রানের ইনিংস। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২ উইকেটে ২০০ ও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৭ উইকেটে ১৯০ রান করেও জিততে পারেনি জিম্বাবুইয়ে। কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৩১ রানের সহজ জয় তুলে নিয়েছে। এ সিরিজটাকে সফরকারীরাও পরীক্ষার একটি সিরিজ হিসেবেই নিয়েছে। দলের কোচ ডেভ হোয়াটমোর এমনটাই জানিয়েছেন। কারণ আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপের জন্য একটি সঠিক সমন্বয় খুঁজে বের করার পরিকল্পনা আছে তাদেরও। আর জয়ের পর উজ্জীবিত জিম্বাবুইয়ের এখন লক্ষ্য সিরিজে সমতা আনার। আজ শেষ ম্যাচে তাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কঠিন চ্যালেঞ্জই জানাবে জিম্বাবুইয়ে। বাংলাদেশ দল সিরিজের শুরু থেকেই পরীক্ষা করছে। প্রথম টি২০ ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারে উত্থান-পতন ঘটানো ছাড়াও দুজনের অভিষেক করানো হয়েছেÑ শুভাগত হোম চৌধুরী ও নুরুল হাসান সোহান। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য এমন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায়নি টাইগাররা। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচ ছিল একটি বড় পরীক্ষা। ম্যাচজয়ী সমন্বয় ভাঙ্গার ক্ষেত্রে অন্যরকম এক নজিরই সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশ। একসঙ্গে ৫টি পরিবর্তন আনা হয়। নিয়মিত ক্রিকেটারদের মধ্যে বিশ্রাম দেয়া হয় মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন ও তামিম ইকবালকে। আর হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে মিডলঅর্ডারের স্তম্ভ মুশফিকুর রহীম ও তেমন সুবিধা করতে না পারায় শুভাগত ছিটকে যান। তৃতীয় ম্যাচে তাই ৫ পরিবর্তন! একই সঙ্গে চারজনের অভিষেক। অভিষিক্তদের মধ্যে আবু হায়দার রনি, শহীদ বেশ ভাল করলেও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মুক্তার আলী তেমন একটা আলো ছড়াতে পারেননি। তাদের জন্য আজ আরেকটি সুযোগ নিজেদের মেলে ধরে জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা ও সামর্থ্য প্রমাণের। গত বছর জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ওই সিরিজটি ছিল বাংলাদেশের তৃতীয় টি২০ সিরিজ ড্র। সব মিলিয়ে ১৮টি দ্বিপাক্ষিক টি২০ সিরিজ খেলে জয় এসেছে মাত্র চারটি সিরিজে। এর মধ্যে একবারই মাত্র প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ড সফরে ২০১২ সালে ৩-০ ব্যবধানে জিতে এসেছিল। আর বাকি তিনটি ছিল ১ ম্যাচের টি২০। হারতে হয়েছে ১১ সিরিজ। এবার অবশ্য পরাজিত হওয়ার কোন সুযোগ নেই, তবে ভবিষ্যতের জন্য একটি ভাল ও সঠিক সমন্বয় খুঁজে বের করার পরীক্ষাটা থাকছেই। কারণ ঘোষিত দলে আর পরিবর্তন আনার সুযোগ নেই। প্রথম দুই ম্যাচে ওপেনার তামিম ইকবাল দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন। তবে তাকে বিশ্রাম দিয়ে তৃতীয় ম্যাচে ইমরুল কায়েসকে সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। ইমরুল সেই সুযোগটার সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। মাত্র ১ রান করেই ফিরে গেছেন। এই সিরিজে রানে ফিরেছেন তরুণ সাব্বির রহমান রুম্মান। টানা তিন ম্যাচেই তিনি ছিলেন উজ্জ্বল। আজ সিরিজ জয়ের ম্যাচেও সাব্বিরের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। আর মাশরাফির সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ওপর বিশেষ নির্ভরতা থাকছেই। সিরিজ জয় দিয়ে বছরের শুরুটা করতে পারলে বছরের বাকিটা সময় দারুণ অনুপ্রেরণা ও আত্মবিশ্বাস নিয়েই প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে পারবে টাইগাররা। আর আসন্ন এশিয়া কাপ টি২০ ও টি২০ বিশ্বকাপের আগে সেটাই হবে বড় পাওয়া।
×