ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে চার মন্ত্রীর মন্তব্য

বোমা মেরে মানুষ হত্যার রাজনীতি এদেশে চলতে দেয়া হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২২ জানুয়ারি ২০১৬

বোমা মেরে মানুষ হত্যার রাজনীতি এদেশে চলতে দেয়া হবে না

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ এ দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ জঙ্গীবাদ জ্বালাও-পোড়াও এবং মানুষ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না উল্লেখ করে সিরাজগঞ্জে সরকারের চার প্রভাবশালী মন্ত্রী একই সুরে বললেন- বোমা মেরে মানুষ হত্যার রাজনীতি এদেশে চলতে দেয়া হবে না। ১৪ দল একসঙ্গে আছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বর্তমান সরকার জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি বিশ্বাস করে না। গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পালাবদলে বিশ্বাস করে। বৃহস্পতিবার সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে বিশাল জনসভা ও সিরাজগঞ্জ শহরের নাগরিক সংবর্ধনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ তাদের বক্তৃতায় এ কথা বলেন। বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের দুই বছর পর চার প্রভাবশালী মন্ত্রীর আগমনে সিরাজগঞ্জ এবং আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কাজীপুর নতুন সাজে সজ্জিত হয়েছিল। তৈরি করা হয়েছিল রঙ-বেরঙের শতাধিক তোরণ। সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাজারও উৎসুক জনতা চার মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। সিরাজগঞ্জ এবং কাজীপুরের চার মন্ত্রী ঐক্যবদ্ধভাবে পর্যটন কেন্দ্র, শিল্পপার্ক, বিসিক স্টেট, সারের বাফার গুদামসহ নানামুখী উন্নয়ন কাজের প্রতিশ্রুতি দেন। দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যের প্রতীক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জ ও কাজীপুরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ এবং কাজীপুরের বিশাল জনসভা দেখে অপর তিন মন্ত্রী উৎফুল্ল হয়ে তাদের বক্তৃতায় মোহাম্মদ নাসিমের প্রতি এ অঞ্চলের মানুষের ভালবাসার কথা বার বার তুলে আনেন। কাজীপুরের উপজেলা পরিষদ মাঠ ছাপিয়ে আশপাশের রাস্তায় গণমানুষের উপস্থিতিতে জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল। সরকারের দুই মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ সড়ক পথে প্রথমেই আসেন বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে ইকোপার্ক এলাকায় ও পরে যমুনা নদীর ক্রসবাঁধ এলাকায়। এরপর শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু শিল্পপার্ক এলাকায় অবতরণ করেন এবং শিল্পপার্ক পরিদর্শন করেন। পরে তিন মন্ত্রীকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে সিরাজগঞ্জ শহরের হার্ডপয়েন্টে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হয়। ফুলে ফুলে ভরে ওঠে নাগরিক সংবর্ধনার স্থল। হার্ডপয়েন্টে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেনÑ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া, চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট আবু ইউসুফ সূর্য, সিরাজুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, আমজাদ হোসেন মিলন এমপি, সেলিনা বেগম স্বপ্না এমপি, সিরাজগঞ্জ পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা ও আব্দুস সামাদ তালুকদার প্রমুখ। বিকেলে কাজীপুরে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল জনসভা। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন। বক্তব্য দেন সাবেক এমপি তানভীর শাকিল জয়, মোজাম্মেল হক বকুল, জান্নাত আরা হেনরী, খলিলুর রহমান প্রমুখ। জনসভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল। জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষ হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তিনি বিএনপিকে জ্বালাও-পোড়াও ছেড়ে গণতন্ত্রের পথে রাজনীতি করার আহ্বান জানান। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বেগম খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেছেন, নির্বাচন চান? নির্বাচন হবে ২০১৯ সালে সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনে। জ্বালাও-পোড়াও করে জনগণের রায় পাওয়া যায় না। জনগণ এখন শেখ হাসিনার উন্নয়নের সঙ্গে আছে। সরকারকে সহযোগিতা করুন। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হোন। বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দেশ যখন উন্নয়নের পথে অগ্রসর হয়, তখন জঙ্গীবাদের মদদদাতা একটি দল নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে দেশকে পিছিয়ে দিতে চায়। তাদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বিএনপির শাসনামলে জঙ্গীদের উত্থান হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আবারও জঙ্গীদের মদদ দিচ্ছে। পৌর নির্বাচন নিয়ে বিদেশীদের কাছে নালিশ করছে। পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, এ দেশের উন্নয়ন করতে হলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। জ্বালাও-পোড়াওয়ের রাজনীতি এদেশের মানুষ দেখতে চায় না। মানুষ মেরে হত্যার রাজনীতি এদেশে চলতে দেয়া হবে না।
×