ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এক যে হলো

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ২১ জানুয়ারি ২০১৬

এক যে হলো

‘ভাবি এখন কোথায়?’ নতুন জুটির হালচাল জানতে অভিনন্দনসমেত এ প্রশ্ন যখন করা হলো সোমবার বিকেলে নাঈমকে, তিনি হাসতে হাসতে বললেন, ‘ঘুরতে বের হয়েছি।’ বিয়ে হয়েছে মাত্র ক’দিন হলো। এখনই তো ঘোরার সময়! কোথায়? ঢাকার বাইরে? ‘আরে, নাহ’সহযোগে তিনি ঢাকার বাইরে ঘোরাঘুরির ‘সময় নেই’ বুঝিয়ে দেন। তারপর যেটা বললেন নাঈম, সেটা এক দুর্দান্ত রোমান্টিকতা। তারা বের হয়েছেন জ্যাম দেখতে! এ-ও মানা যায়! শহর ঢাকার জ্যামে-ঘামে, গলিতে-রাস্তায় যানবাহনের সীমাহীন কালক্ষেপণে অতিষ্ঠ মানুষ; খুব জরুরী প্রয়োজন না হলে রাস্তায়ই বের হতে চায় না মানুষ- আর তারা কিনা জ্যাম দেখতে বের হয়েছেন! তা-ও ফার্মগেটের জ্যাম! বলেন তিনি, ‘বহুদিন ফার্মগেটের জ্যাম দেখিনি। বিকেল তিনটা-চারটার দিকে রোদটা ভাল থাকে তো এ সময়ে। রোমান্টিক লাগে!’ সবারই অবাক লেগেছিল যারাই খবরটা শুনেছিলেন ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায়। বিয়ে করছেন নাঈম! কাকে? নাদিয়াকে! এটা কল্পনাও করতে পারেননি কেউ। কখনও। পারার সুযোগই বা ছিল কই! যে কোন কাজের আগে তো পূর্বাভাষা বলে একটা কথা থাকে। আলামত পাওয়া যায়। কিন্তু নাঈম-নাদিয়া বিয়ে করবেন, সম্পর্কে আছেন; এটা কখনও ঘুণাক্ষরে টেরও পায়নি কেউ। একসঙ্গে বিয়ের আগে তাদের কেউ ঘুরতে দেখেনি, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও অন্তরঙ্গতা চোখে পড়েনি, এমনকি একসঙ্গে অভিনয়ও যে খুব একটা করেছেন; তাও নয়। তাদের বিয়ের খবরটা যখন শুনলেন সবাই, এমনকি নাটকপাড়ার লোকজনও, এককথায় ‘সারপ্রাইজড’! বিয়ের পর অবশ্য অনেক রকম কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ কেউ দিন-তারিখ উল্লেখ করে বলে দিচ্ছেন- ওইদিন তাদের সম্পর্কটা হয়েছে, ওইদিন থেকে তারা বিয়ের পরিকল্পনা করেছেন ইত্যাদি। নাদিয়ার কানে তাই উড়োসংবাদ পৌঁছে দেয়া হয়, আপনাদের সম্পর্ক তো একবছর আগে থেকে, নাকি? নাঈমের কণ্ঠে সুর মিলিয়ে তিনি নাচক করে দেন, এবং বলেন, ‘অতদিন থেকে হলে তো হয়েই গিয়েছিল!’ প্রসঙ্গ দখলে নিয়ে নাঈম শুনিয়ে দেন বাকিটা, ‘আমার আর নাদিয়ার পরিবারের মধ্যে খুবই ভাল সম্পর্ক। আমার আর তার বাবা একই ক্যাম্পাসে পড়াশোনা করেছেন। বন্ধুত্বটা ছিল। আর বিয়েটা হয়েছে খুবই অল্পদিনের নোটিশে। এত দ্রুত সবকিছু হয়ে যাবে, এটা আমরা নিজেরাও ভাবিনি। সবকিছু আয়োজন করতে কী যে চাপ গেছে!’ কাছের অনেককেই তাই জানানো হয়নি। আমন্ত্রণ করা হয়নি বিয়ের অনুষ্ঠানে। গাল ফুলিয়ে অভিমান করে বসে আছেন অনেকেই। নাঈম-নাদিয়ার নিজেদেরও আফসোস হচ্ছে! ‘আসলে সবকিছু এত দ্রুত হয়ে গেল! কী করব না করব, গুলিয়ে ফেলেছিলাম’- অজুহাত দেন নাদিয়া। সঙ্গে এ আশ্বাসও, ‘রিসিপশনে সবাইকে বলব।’ এরপর তো একটা বিষয় নিয়েই কথা বলা বাকি থাকেÑ মধুচন্দ্রিমা! পছন্দ কোন দেশ? নাঈম হতাশ করেন, ‘যাচ্ছি না।’ এ কেমন কথা! নাদিয়ার দিকে চোখ ফেরানো হয়। বরের সিদ্ধান্তে তারও পূর্ণ সম্মতি। এমন কাঠখোট্টা তারা কবে থেকে হলেন! নাঈম জানান এমন সিদ্ধান্তের কারণ, ‘আমাদের দু’জনেরই ভালোবাসা দিবসের প্রচুর নাটকে অভিনয়ের কথা আছে। কাজগুলো করতে হবে আগে।’ তাই হানিমুন প্লান আপাতত বাদ। তারা এখন শহর ঢাকায় জ্যাম দেখে বেড়াচ্ছেন। ওহ, খবর আরও তো একটা আছে। খুশি হয়ে নাঈমের বাবা নব পুত্রবধূকে কী উপহার দিয়েছে জানেন? মার্সিডিস বেঞ্জ!
×