ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারী চাকুরেদের পে স্কেল সমন্বয় করা হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ২১ জানুয়ারি ২০১৬

সরকারী চাকুরেদের পে স্কেল সমন্বয় করা হবে ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন বৈষম্য নিরসনে পে স্কেল সমন্বয় করা হবে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রকৌশলী-কৃষিবিদ-চিকিৎসক (প্রকৃচি) বিসিএস ক্যাডারদের বেতন কাঠামো নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল তা দূর হবে বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে ক্লাসে ফিরে গেছেন। এছাড়া অষ্টম পে স্কেলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করছে সচিব কমিটি। শীঘ্রই নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে চলমান সঙ্কটের অবসান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে নিজ মন্ত্রণালয়ে এক ব্রিফিংয়ে নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রকৃচি বিসিএস ক্যাডারদের বেতন স্কেল নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা সমন্বয় করা হবে। তবে পে স্কেল সংশোধনের কোন সুযোগ নেই। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, শিক্ষকদের বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। শিক্ষকদের আন্দোলনের সমাধান হবে কিনা সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করছেন, নেগোসিয়েশন চলছে। দেখা যাক কী হয়? তিনি বলেন, প্রকৃচির কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল, আমাদের একটু দোষ ছিল। যাহোক, অর্থ সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে, বিষয়টি সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে। তবে আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাব সমন্বয় হতে পারে। নতুন বেতন কাঠামো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের বিষয়ে মুহিত বলেন, এখানে আমাদের কিছু দোষ ছিল। এটা ইতোমধ্যে সংশোধন হয়ে গেছে। সেজন্য তারা আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন। চীনের নেতৃত্বে গঠিত এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সদস্য হওয়ার জন্য সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী বেজিং গিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সদস্য হতে গেলে আমাদের সদস্যদের সম্মতি লাগবে। বাংলাদেশ চীনের বিভিন্ন কোম্পানির বিনিয়োগ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, তারা এখন আমাদের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য খুব বেশি আগ্রহী। তবে তাদের প্রকল্প দেয়ার আগে মন্ত্রণালয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। জানা গেছে, বেতন বৈষম্য নিয়ে সৃষ্ট চলমান সঙ্কট নিরসনে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। এর অংশ হিসেবে তিন সচিবকে নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কোর কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ রয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে বিষয়টির একটি সম্মানজনক সমাধান হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আগামী এপ্রিলের মধ্যে বিভিন্ন পেশাজীবীর বেতন বৈষম্যের নিরসন হবে। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড তুলে দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট ক্যাডারদের পদোন্নতি নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তারও সমাধান হবে। নতুন পদ সৃষ্টি না করে পুরনো পদ সমন্বয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট সঙ্কট দূর করার পাশাপাশি পদোন্নতির বিষয়টিও স্পষ্ট করা হবে। এ ক্ষেত্রে ২৬ ক্যাডারের কয়েকটি পদকে আপগ্রেড করে গ্রেড-১ এবং গ্রেড-২-এর পদ বাড়ানো হতে পারে। পাশাপাশি ক্যাডার-নন ক্যাডারদের এন্ট্রি পদের বেতন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার নিরসন হবে।
×