অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের দুই পুঁজিবাজারেই বুধবার সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এইদিন প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লেনদেন হয়েছে ৬৬৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার। একদিন বিরতির পর আবারও লেনদেন ও দরবৃদ্ধির শীর্ষে ফিরে এসেছে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। বুধবারে খাতটির মোট লেনদেনের ২৪ দশমিক ১৬ ভাগ দখল করেছে। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি টাকার শেয়ার। সেখানেও বস্ত্র খাতের আধিপত্য বজায় ছিল। এদিন উভয় বাজারেই লেনদেন কমেছে আগের দিনের তুলনায়।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সকালে ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরু হলেও বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে সূচকের তীর নিচে নামতে থাকে। এরপর সূচকের ওঠানামা চলার পর ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্যসূচক ২৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৬৬৯ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ১২২ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৫৫ পয়েন্টে।
শুরুতে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতার কারণে লেনদেনের গতিও কিছুটা ভাল ছিল। কিন্তু পরে সূচক কমতে থাকলে লেনদেনের গতিও শ্লথ হয়ে যায়। দিনশেষে ডিএসইতে ৬৬৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৫০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক ০৪ শতাংশ কম। আগের দিন এ বাজারে লেনদেন হয়েছিল ৭২০ কোটি টাকার শেয়ার।
বুধবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয় ৩২৭টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৯৯টির, কমেছে ১৯৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির শেয়ার দর।
খাতভিত্তিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বুধবারে ডিএসইতে ছোট-বড় ধরনের বস্ত্র খাতের কোম্পানির প্রতি আলাদা আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। দিনশেষে খাতটির মোট ১৫৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল, যা মোট লেনদেনের ২৪ দশমিক ১০ ভাগ। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাতটি। খাতটির মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮৮ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৬৬ ভাগ। লেনদেনের তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ এবং রসায়ন খাতটি। সারাদিনে খাতটির মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩ ভাগ।
আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের বাজার পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রবণতার কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের প্রতি বিদেশীদের আগ্রহ বাড়বে এমন আশাবাদে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে। তবে সার্বিকভাবে অন্যান্য খাতের দর কমার কারণে সার্বিক সূচকটি মোট ২৭ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমেছে। সূচক কমার কারণে সার্বিক লেনদেনও কিছুটা আগের দিনের চেয়ে কমেছে। তবে দিনটিতে বস্ত্র, ওষুধ এবং রসায়ন খাতের কোম্পানিগুলোর দর বেড়েছে। বিশেষভাবে এ্যাক্টিভ ফাইন নামের কোম্পানিটির নতুন প্লান্ট স্থাপনের অনুমোদন পাওয়ায় লেনদেনের তৃতীয় অবস্থানে ছিল।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হলো- ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, বেক্সিমকো ফার্মা, এ্যাক্টিভ ফাইন, এমারেল্ড অয়েল, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মা, আইটিসি, বিডি থাই, রিজেন্ট টেক্সটাইলস মিলস এবং জেনারেশন নেক্সড ফ্যাশনস।
এদিন সিএসই সার্বিক সূচক ৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২৭২ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৪৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৫৮টির, কমেছে ১৫৯টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির।
সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : রিজেন্ট টেক্সটাইল, ইউনাইটেড পাওয়ার, আইটিসি, এ্যাক্টিভ ফাইন, ডেল্টা স্পিনার্স, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ম্যাকসন্স স্পিনিং, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, ইউনাইটেড এয়ার ও বিডি ওয়েল্ডিং।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: