ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘জটিল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে ওবামার এশীয় নীতি বিভ্রান্তির বেড়াজালে’

এশিয়ায় শক্তি হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ২১ জানুয়ারি ২০১৬

এশিয়ায় শক্তি হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

চীন ভূখণ্ড বিস্তারে পদক্ষেপ নেয়ায় এশিয়াতে সামরিক শক্তির ভারসাম্য পরিবর্তিত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে চলে যাচ্ছে। এক গুরুত্বপূর্ণ স্বতন্ত্র রিপোর্টে বুধবার এ হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ‘এশিয়ার দিকে দৃষ্টি’ দেয়ার নীতি স্পষ্টতই জটিলতর আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিভ্রান্তির বেড়াজালে পড়েছে। ওবামা আগের মার্কিন নীতি পাল্টে ২০১১ সালে প্রথম নতুন নীতিটি ঘোষণা করেছিলেন। সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) সমীক্ষায় অতিরিক্ত পরমাণু এ্যাটাক সাবমেরিন মোতায়েন এবং উন্নত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে এশিয়াতে সামরিক শক্তি দেখাতে আমেরিকার প্রতি আহ্বান জানানো হয়। সিএসআইএস ওয়াশিংটনের এক প্রসিদ্ধ গবেষণা সংস্থা। কংগ্রেসের নির্দেশে প্রতিরক্ষা দফতরের আনুকূল্যে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়। এটি নিয়ে সিনেটের সশস্ত্র বাহিনী কমিটির এক শুনানিতে আলোচনা করা হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পদপ্রার্থীরা এ রিপোর্টকে সম্ভবত তাদের কাজে লাগাবেন। তারা চীনের উত্থান, রাশিয়ার পুনরুত্থান এবং উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রসজ্জার মুখে দুর্বল নেতৃত্বের দায়ে ওবামাকে দোষারোপ করে থাকেন। রিপোর্টে বলা হয়, চীনা ও উত্তর কোরীয়দের তৎপরতা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষার প্রতিশ্রুতির বিশ্বাসযোগ্যতার প্রতি নিয়মিত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সামর্থ্য বর্তমানে যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে ওই অঞ্চলে সামরিক শক্তির ভারসাম্য যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে মোড় নিচ্ছে। ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে শক্তিশালী অর্থসংস্থানের প্রয়োজন। এশিয়াকে পররাষ্ট্র নীতির লক্ষ্যস্থল করা হলে নতুন নতুন মৈত্রী গড়ে উঠবে, অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগানো যাবে এবং সংঘাতকবলিত মধ্যপ্রাচ্যের গুরুতর চাপ এড়ানো যাবে বলে ওবামা আশা করেছিলেন। কিন্তু সেটি ভারসাম্য পুনর্বিন্যাসের কঠিন কাজ বলে প্রমাণিত হয়। ২০১২ সালের এক রিপোর্টের পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে সিএসআইএসের তৈরি এখনকার রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এর ঐতিহাসিকভাবে সম্পর্কযুক্ত তিনটি স্বার্থ সাধন করা : আমেরিকা ও এর মিত্রদের রক্ষা করা, আমেরিকা ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো এবং গণতন্ত্রকে সমর্থন করা। এরপর রিপোর্টে কয়েকটি ক্ষেত্রকে ভিত্তি হিসেবে কাজে লাগাতে বলা হয়। প্রথমত, ওয়াশিংটনের মার্কিন সরকারের ভিতর এবং মিত্র ও অংশীদারদের সঙ্গে এশিয়া কৌশল সঠিকভাবে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সমীক্ষায় দেখা যায় যে, ওবামা প্রশাসন এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য পুনর্বিন্যাস সম্পর্কে কিছু বিবৃতি ও দলিলপত্র জারি করেছে, কিন্তু মার্কিন সরকারের এশিয়ায় শক্তির ভারসাম্য পুনর্বিন্যাস সম্পর্কিত কোন মূল বিবৃতি নেই। দ্বিতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও অংশীদারদের সামর্থ্য, প্রতিরোধ ক্ষমতা ও তথ্য বিনিময়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির চেষ্টা ত্বরান্বিত করা উচিত। তৃতীয়ত, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এর সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখা ও সম্প্রসারিত করা। -গার্ডিয়ান অনলাইন
×