ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

খুলনায় আজ তৃতীয় টি২০, সিরিজ বাঁচানোর লড়াই জিম্বাবুইয়ের

সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় টাইগাররা

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২০ জানুয়ারি ২০১৬

সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় টাইগাররা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ বছরের শুরুতেই সিরিজ জয়ের সুযোগ। আজ সফরকারী জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি২০ ম্যাচ স্বাগতিক বাংলাদেশের। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম আরেকবার টাইগারদের জয়ের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের আবাসস্থল সুন্দরবন এবং বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী এ স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশের জন্য বেশ পয়া। সত্যিকারের টাইগারের মতোই এখানে গর্জে ওঠে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এ ভেন্যুতে তাই মাত্র একটি টেস্ট হারলেও এখন পর্যন্ত কোন ওয়ানডে বা টি২০ হারেনি টাইগাররা। আজ চার ম্যাচের টি২০ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের তাই লক্ষ্য জয়যাত্রা ধরে রাখা। টি২০ ক্রিকেটের বড় দুটি আসন্ন টুর্নামেন্ট এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের জন্য সঠিক সমন্বয় খুঁজে পেতে এবার দল নিয়ে বেশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচে হবে আরও বড় পরীক্ষা। অপরিহার্য বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে ছাড়াই নামবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। তাই সিরিজ জয়ের চেয়েও এ অগ্নিপরীক্ষায় উতরে যাওয়াটাই বড় চ্যালেঞ্জ। অপরদিকে সিরিজ বাঁচানোর জন্য আজ জিততেই হবে সফরকারী জিম্বাবুইয়েকে। তাই বাঁচা-মরার লড়াই তাদের। গত বছরের শেষদিকে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজে পারেনি টাইগাররা, মানে সিরিজ জয়টা হয়নি। প্রথম ম্যাচে জিতে গেলেও দ্বিতীয় টি২০তে হেরে গেছে দল। ড্র সিরিজ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। টি২০ ক্রিকেটে বরাবরই তেমন শক্ত কোন অবস্থান তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ। তাই র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক পিছিয়ে থাকতে হয়েছে। পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে টি২০ ক্রিকেটে এখনও নিজেদের ধাতস্থ করে নিতে পারেনি টাইগাররা। গত বছর জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ওই সিরিজটি ছিল বাংলাদেশের তৃতীয় টি২০ সিরিজ ড্র। সবমিলিয়ে ১৮টি দ্বিপাক্ষিক টি২০ সিরিজ খেলে জয় এসেছে মাত্র চারটি সিরিজে। এরমধ্যে একবারই মাত্র প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করতে পেরেছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ড সফরে ২০১২ সালে ৩-০ ব্যবধানে জিতে এসেছিল। আর বাকি তিনটি ছিল ১ ম্যাচের টি২০। হারতে হয়েছে ১১ সিরিজ। তবে খুলনার এই ভেন্যুতেই বাংলাদেশ দল টি২০ অভিযান শুরু করেছিল জয় দিয়ে। প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুইয়ে। ৯ বছর পর আবারও সেই জিম্বাবুইয়ে এবং ভেন্যুটাও এক। ২০০৬ সালে ভেন্যুটির নাম ছিল খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়াম। মাঝে হয়েছিল শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়াম। এখন এ দুই নামের কোনটিই নেই, কিন্তু ভেন্যু ঠিকই আছে এবং নাম পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশের সাফল্যে পরিবর্তন আসেনি। খুলনায় ২০১২ সালে প্রথম টেস্ট খেলা হয়েছিল। ওই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারতে হয়েছে ১০ উইকেটে। ব্যর্থতা ওই একটিই। এরপর আর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোন পরাজয় আসেনি। সবমিলিয়ে এ ভেন্যুতে ৩ টেস্ট খেলে ১টি করে জয়, পরাজয় ও ড্র আছে। আর ৪ ওয়ানডে খেলে সবগুলোতেই জয়, এখন পর্যন্ত ৩ টি২০ ম্যাচেই জয়। এ কারণে সবচেয়ে পয়মন্ত ভেন্যুতে পরিণত হয়েছে খুলনার এ স্টেডিয়ামটি বাংলাদেশের জন্য। এবার সেই ধারাবাহিকতা রাখার চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে অবশ্য মাশরাফির সতীর্থ পরিবর্তন হয়েছে। দলে নেই অপরিহার্য দুই পেসার মুস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন এবং মিডলঅর্ডার ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহীম। এছাড়া পরীক্ষার অংশ হিসেবে প্রথম দুই ম্যাচে খেলা অলরাউন্ডার শুভাগত হোম তেমন ভাল না করায় ছিটকে গেছেন। দলে এসেছেন তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ শহীদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও মুক্তার আলী। এছাড়া আগে থেকেই অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন তরুণ পেসার আবু হায়দার রনি। সে কারণে আজ অভিষেক হতে পারে একই সাথে তিন ক্রিকেটারের। মিডল অর্ডারের শক্তি ঠিক রাখতে মোসাদ্দেকের অভিষেক হতে পারে মুশফিকের জায়গায়। আর বোলিংয়ে নিশ্চিতভাবেই মাশরাফির সঙ্গী হিসেবে থাকবেন অপেক্ষায় থাকা রনি। এর সঙ্গে যোগ হতে পারেন মুক্তার, শহীদ ও তাসকিনের মধ্যে আরেকজন। মঙ্গলবার শেষবারের মতো অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। এবার এই তরুণদের নিয়েই লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া বাকি মাশরাফির। জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫ টি২০ জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে মাত্র দুটি। তবে ২০০৬ সালেই শুধু সিরিজ জয় এসেছে। ৯ বছর পর একই ভেন্যুতে আবার সিরিজ জয়ের সুযোগ। বছরটাও সাফল্য দিয়ে শুরুর হাতছানি বাংলাদেশের। অপরদিকে এ সিরিজ হারের চেয়ে নিজেদের জন্যও বড় পরীক্ষা হিসেবে নিয়েছে জিম্বাবুইয়ে। আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য একটি উপযুক্ত সমন্বয় গড়ার লক্ষ্যেই দ্বিতীয় টি২০তে অধিনায়ক এলটন চিগুম্বুরাকে পর্যন্ত বিশ্রাম দিয়েছে তারা। তবে এবার ফিরছেন তিনি। সিরিজ বাঁচানোর জন্য জয়ের বিকল্প নেই। সেজন্য সেভাবেই নিজেদের প্রস্তুত করেছে সফরকারীরা। টানা দুই ম্যাচ হারলেও মুস্তাফিজ-আল-আমিন ও মুশফিকের অনুপস্থিতির সুযোগটা নিতে আত্মবিশ্বাসী জিম্বাবুইয়ে। আর গত নবেম্বরে ১-১ সমতায় সিরিজ শেষ করার অনুপ্রেরণা তো আছেই।
×