ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে যত্রতত্র ফিলিং স্টেশন স্থাপনের হিড়িক

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২০ জানুয়ারি ২০১৬

কুড়িগ্রামে যত্রতত্র ফিলিং  স্টেশন স্থাপনের হিড়িক

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ বিপিসি ও বিস্ফোরক পরিদফতর কোন যাচাই বাছাই না করে বিধি ভেঙ্গে একের পর এক ফিলিং স্টেশনের অনুমতি দেয়ায় চ্যঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। কিছু অসাধু কর্মকর্তা যোগসাজশ করে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে বিধি লঙ্ঘন করে এসব ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন দেয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক সীমান্তের শূন্য লাইনের অভ্যন্তরে বিধি ভেঙে প্রস্তাবনা পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। জানা যায়, ফিলিং স্টেশন স্থাপনে যৌক্তিকতা যাচাই করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোারেশন (বিপিসি) ও বিস্ফোরক পরিদফতর। বিদ্যুত জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এর ২০১৪ সালের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী যে কোন জেলা শহরে ফিলিং স্টেশন স্থাপনে নির্দিষ্ট দূরত্ব, আকার-আয়তন, সার্ভিসিং, টয়লেট সুবিধা ও অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও ফিলিং স্টেশনে থাকতে হবে মানসম্পন্ন ডিজিটাল ডিসপেন্সিং ও সাইট-ফ্লো ইউনিট, টেলিফোন সংযোগ ব্যবস্থা। বৈদ্যুতিক লাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বের কথা বলা হলেও ঝুঁকিপূর্ণ বৈদ্যুতিক লাইনের ভিতরে স্থাপন করা হয়েছে বেশিরভাগ ফিলিং স্টেশন। নেয়া হয়নি কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ফলে দুর্ঘটনা হলে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও বেশিরভাগ ফিলিং স্টেশন প্রাঙ্গণের পরিমাপ ত্রিশ মিটারের কম। কুড়িগ্রামের মতো ছোট জেলা শহরে ইতোমধ্যে ২৩টি ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন দেয়া হলেও যৌক্তিতা বিবেচনা না করে আরও ৭/৮টি ফিলিং স্টেশনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বিশেষ করে জেলার ভুরুঙ্গামারীতে আন্তর্জাতিক সীমান্তের ৬ কিলোমিটারের মধ্যে ফিলিং স্টেশন স্থাপনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। অথচ বিধিতে ৮ কিলোমিটারের মধ্যে স্থাপন করা যাবে না বলে নির্দেশনা রয়েছে। জেলা ফিলিং স্টেশন ডিলার সমিতির সভাপতি পনির উদ্দিন আহমদ জানান, কুড়িগ্রামে ২৩টি ফিলিং স্টেশন থাকার পরও সরকারী নিয়মনীতিকে পাশকাটিয়ে আরও ৭/৮টি প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক সীমান্ত নীতিমালাও ভঙ্গ করে সীমান্তের শূন্য লাইনে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীসহ একাধিক স্টেশনের অনুমতি দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে ডিলারদের মধ্যে চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। সীমান্ত উপজেলাগুলোতে বর্তমানে পাঁচটি ফিলিং স্টেশন রয়েছে। এরমধ্যে নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারীতে তিনটি, ফুলবাড়ীতে একটি এবং রৌমারীতে একটি। এছাড়াও ভুরুঙ্গামারীতে ২টি ফিলিং স্টেশনের প্রস্তাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিস্ফোরক পরিদফতরের পরিদর্শক ড. আসাদুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তা বিবেচনা করে বৈদ্যুতিক লাইনের নিচে ফিলিং স্টেশনের অনুমোদন দেয়া হয় না। তবে ফিলিং স্টেশন স্থাপনের পরে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করা হলে আমাদের কিছু করার থাকে না। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ডিরেক্টর ম্যানেজার মীর আলী রেজা জানান, আমরা জেলা প্রশাসন থেকে রিপোর্ট নেই। বিধি মেনেই কাজ করা হয়। ক্ষেত্রবিশেষে সরকার মনে করলে মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।
×