ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মুনতাসীর মামুন

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সেনা কর্মকর্তাদের বয়ান

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২০ জানুয়ারি ২০১৬

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সেনা কর্মকর্তাদের বয়ান

(১৯ জানুয়ারির পর) শফিউল্লাহরা যখন ৪৬ ব্রিগেডের বিষয় আলোচনা করছেন তখন সদর দফতরের বাইরে ট্যাঙ্ক এবং ভারি যানবাহনের শব্দ শোনা গেল। তার পরই দুটি গাড়ি অফিসের সামনে থামল। এর কিছুক্ষণ পরই তার অফিসের দরজা জোর করে খুলে মেজর ডালিম ১৫ থেকে ১৮ জন সৈন্য নিয়ে ঢুকল। তারা চিৎকার করে বলছিল, ‘চীফ কোথায়?’ শফিউল্লাহর অফিসে ঢুকে তারা তার দিকে বন্দুক তাক করে ধরল। ডালিমের অস্ত্র ছিল তার দিকে তাক করা। ক্রুদ্ধ হয়ে তর্জনী দিয়ে অস্ত্র স্পর্শ করে শফিউল্লাহ বললেন, “ডালিম আমি এসব অস্ত্র দেখেছি এবং ব্যবহার করেছি। তুমি যদি অস্ত্র ব্যবহার করতে এসে থাক তাহলে এখনই তা কর। আর যদি আমার সঙ্গে কথা বলতে এসে থাক, তাহলে তোমার ট্রুপস আর অস্ত্র আমার অফিসের বাইরে নিয়ে যাও। তার পর কথা বল।” শফিউল্লাহ জানাচ্ছেন, তার বিপরীত দিকে জিয়া আর খালেদ বসেছিলেন। কর্নেল নাসিম তার ডানদিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু ডালিম অস্ত্র শুধু তার দিকে তাক করেছিলেন। শফিউল্লাহর কথা শুনে ডালিম বন্দুক নামিয়ে বললেন, “স্যার, রাষ্ট্রপতি আপনাকে রেডিও স্টেশনে দেখা করতে বলেছেন। আমি বললাম, তুমি কার কথা বলছ? আমি জানি রাষ্ট্রপতি মারা গেছেন। সে তখন বলল, ‘স্যার, আপনার এর মধ্যে জানা উচিত খন্দকার মোশতাক এখন রাষ্ট্রপতি।’ আমি বললাম, ‘খন্দকার মোশতাক তোমার রাষ্ট্রপতি হতে পারে, তিনি আমার রাষ্ট্রপতি নন।’ সে প্রত্যুত্তরে বলল, ‘স্যার, আমি আপনাকে রেডিও স্টেশনে নিতে এসেছি। কিন্তু আপনি এমন কিছু করতে আমাকে বাধ্য করছেন যার জন্য আমি আসিনি।’ আমি বললাম, ‘তুমি যা খুশি করতে পারো। কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে কোথাও যাব না। আমি আরও বললাম, আমি আমার ট্রুপসের কাছে যাচ্ছি এবং সেখানে গিয়ে ঠিক করব কী করব।” বঙ্গবন্ধুকে যারা খুন করেছে, পরে মনে হয়েছে শফিউল্লাহর, তারা তাকেও তখন খুন করতে পারত। করেনি বরং তাকে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছে, যাতে এই ধারণা হয় পুরো সেনাবাহিনী এর পক্ষে এবং খালেদ যে গুজবের কথা বলছিলেন তা এরাই ছড়িয়েছে। যা হোক, তিনি ডালিমের সঙ্গে কথা শেষ করে তাদের ঠেলে বাইরে বেরুলেন এবং নিজ গাড়িতে ৪৬ ব্রিগেডের দিকে রওনা হলেন। ডালিমরা তার পিছে আসতে লাগল। শফিউল্লাহ ভেবেছিলেন সেখানে গিয়ে বলবেন, তিনি এর সঙ্গে জড়িত নন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে দেখেন সৈন্যরা যেন উৎসবে মেতেছে। তার ভাষায় ''I noticed that all the troops were in a mood of carnival as if something great had happened. The troops on seeing me became more jubilant and their jubilation was quite noisy and to some extent rowdy.'' শফিউল্লাহ কিছুই বলতে পারলেন না। একজন অফিসার তাকে অফিসে নিয়ে গেলেন। সেখানে বসে আছেন ব্রিগেড মেজর হাফিজ এবং মেজর রশীদ। তিনি শাফায়াত জামিলের খোঁজ জানতে চাইলেন। তারা তা জানেন না জানালেন। ওই সময় মেজর রশীদই বেশি কথা বলছিলেন। শফিউল্লাহ লিখেছেন, তিনি ভাবতে পারেননি মেজর রশীদ এর সঙ্গে জড়িত। রশীদ জড়িত হলে যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে সেই হাফিজের সঙ্গে বসে কী করছে? তারা দু’জন আবার শফিউল্লাহকে রেডিও স্টেশনে যেতে অনুরোধ করলেন। শফিউল্লাহ জানালেন, অফিসে গিয়ে তিনি অন্যান্য চিফের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা তখনই বাকি দুই প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। তারা জানালেন, তারা ৪৬ ব্রিগেডে আসছেন। অফিসে বসে তিনি বিমান ও নৌপ্রধানের সঙ্গে আলোচনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তার মনে হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু নিহত। তার সামনে দুটি পথ খোলাÑ এক. কিছু সৈন্য জোগাড় করে লড়াই করা। কিন্তু ঢাকায় তার অধীনস্থ কোনো সৈন্য ছিল না আর ডালিমরা তাকে নজরে রাখছিল। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এই লড়াই করা যেত কিন্তু তিনি তো নেই। দুই. রক্তপাত, গৃহযুদ্ধ ও সেনাবাহিনীকে বিভক্ত না করা। ইতোমধ্যে সৈন্যরা জেনে গেছে খোন্দকার মোশতাক হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। বিমান ও নৌপ্রধান এলেন। তাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হলো। এরপর সৈন্যরা তাদের রেডিও অফিসে নিয়ে গেল। সেখানে মোশতাক তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। রুমে ঢুকে তিনি দেখলেন, মোশতাক ‘ন্যাশনাল ড্রেস’ পরে টেবিলের সামনে বসে [ন্যাশনাল ড্রেস বা জাতীয় পোশাক বলতে শফিউল্লাহ কী বুঝিয়েছেন তা স্পষ্ট হলো না। তখন কোনো জাতীয় পোশাক ছিল না]। তার বাঁয়ে তাহেরউদ্দিন ঠাকুর দাঁড়িয়ে। মোশতাক বললেন, ‘অভিনন্দন শফিউল্লাহ, তোমার সৈন্যরা দারুণ এক কাজ করেছে। এখন ফিরে বাকি কাজ সম্পন্ন কর।’ ‘বাকি কাজটি কী’ জানতে চাইলেন শফিউল্লাহ। ‘আমার থেকে তোমার ভালো জানা উচিত’Ñ বললেন মোশতাক। ‘তা হলে তার ভার আমার ওপর ছেড়ে দিনÑ এ কথা বলে শফিউল্লাহ বেরিয়ে এলেন। রুম থেকে বেরুবার মুহূর্তে তাহেরউদ্দিন ঠাকুর মোশতাককে বললেন, তাকে [শফিউল্লাহ] যেন স্টেশনের বাইরে যেতে না দেয়া হয়। মেজর ডালিম তার সৈন্য নিয়ে পথ আটকে ছিল। তাদের তিনজনকে অন্য একটি রুমে নেয়া হলো। সরকারের প্রতি আনুগত্যের একটি বক্তব্য ঠাকুর লিখলেন। তা তাদের পড়তে বাধ্য করা হলো এবং তা প্রচারিত হলো। অফিসে ফিরে তিনি অন্য অফিসারদের ডাকলেন। তিনি দেখাতে চাচ্ছিলেন যে তিনি এখনও কমান্ডে আছেন। অফিসারদের কাছে আদ্যোপান্ত ঘটনা তুলে ধরলেন। তিনি জানালেন যা ঘটেছে তা তিনি প্রতিহত করতে পারেননি, “shedding more blood there after would not have served any useful purpose. Therefore, before we lost grip on our men and destroyed everything that we worked for, we should first of all strive to establish proper channel of command and bring back discipline in the army. শফিউল্লাহ লিখেছেন, তিনি বিব্রতবোধ করছিলেন। কারণ তখন কারো প্রশংসা আমার কাম্য ছিল না, জেনারেল ওসমানীর তো নয়ই। তার মনে হলো ওসমানী তাকে বিদ্রƒপ করছেন। তিনি বললেন, ‘স্যার, আমার কি এই প্রশংসা প্রাপ্য?’ ওসমানী বললেন, ‘ওল্ড বয়, তুমি কি জান না বিপর্যয় থেকে তুমি দেশকে রক্ষা করেছ।’ এ কথার অর্থ তিনি বুঝলেন না, নিশ্চুপ রইলেন। ওসমানীর সঙ্গে ফোনে আলাপ করে হলরুমে ফিরে দেখলেন কর্নেল এমএ মনজুরকে। তাকে দেখে তিনি অবাক হলেন। নয়াদিল্লীতে তখন তিনি প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, তাকে সেখানে শফিউল্লাহ আশা করেননি। তার প্রশ্নের জবাবে মনজুর জানালেন, তিনি কিছুক্ষণ আগে ঢাকায় ফিরেছেন। শফিউল্লাহ জানতে চাইলেন, কে তাকে ঢাকা আসতে বলেছে? তিনি জানালেন, খবর পেয়েই তিনি ছুটে এসেছেন। খবর পেয়ে তিনি দিল্লী থেকে ঢাকা এলেন কিভাবে যেখানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। যখন ‘অপারেশন সিলভার লাইনিং’ চলছে তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যশোর গ্যারিসন থেকে মনজুরকে অপসারণ করা হয়। শফিউল্লাহ তখন দিল্লীতে তার পোস্টিং দেন। এ কারণে মনজুর বঙ্গবন্ধু ও শফিউল্লাহর ব্যাপারে অসন্তুষ্ট ছিলেন। মনজুরের সঙ্গে কথা শেষ করলেন। তখনই মেজর ফারুক এসে দাঁড়ালেন, বললেন, ভারতীয় সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করা হচ্ছে। শফিউল্লাহ জানতে চাইলেন, খবরের উৎস কী? ফারুক জানালেন, খবর বিশ্বস্ত সূত্রের। শফিউল্লাহ ফারুকের কথার সঙ্গে সকালে জিয়ার সঙ্গে আলাপের প্রতিফলন পেলেন। ফারুকের কথা শুনে তিনি বুঝলেন, ফারুক তার নজর আসল ঘটনা থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন। ফারুককে তিনি নির্দেশ দিলেন খালেদ মোশাররফকে তা জানাতে। সম্মেলন কক্ষে ঢুকে শফিউল্লাহ দেখলেন মোশতাকের সঙ্গে মনজুর গভীর আলোচনায় মগ্ন। তার মনে হলো, আগে থেকেই মনজুর এ ঘটনা জানতেন, না হলে তার পক্ষে এই সময় ঢাকায় থাকা সম্ভব নয়। জিয়াও সকাল থেকে তার সঙ্গে নমনীয় ও শ্রদ্ধাপূর্ণ ব্যবহার করছেন। সকালে জিয়া যখন তার বাসায় আসেন তখন ফিটফাট হয়ে সরকারী গাড়িতে এসেছেন। একই সময় খালেদ এসেছেন রাতের পোশাক পরে নিজের গাড়িতে। মোশতাকের শপথের আগে তারা বঙ্গভবনের হলরুমে বসেছিলেন। এমন সময় ভারপ্রাপ্ত সামরিক সচিব লে. কর্নেল আমিন আহমেদ চৌধুরী তাকে এসে জানালেন জেনারেল ওসমানী তার সঙ্গে কথা বলতে চান। ফোন তোলামাত্র ওসমানী তাকে অভিনন্দন জানালেন। তার অ্যাকশনে সন্তোষ প্রকাশ করলেন এবং তাকে বললেন, not to lose heart. He also commended me for my handling the situation.Ó শফিউল্লাহ লিখেছেন, তিনি বিব্রতবোধ করছিলেন। কারণ তখন কারো প্রশংসা আমার কাম্য ছিল না, জেনারেল ওসমানীর তো নয়ই। তার মনে হলো ওসমানী তাকে বিদ্রƒপ করছেন। তিনি বললেন, ‘স্যার, আমার কি এই প্রশংসা প্রাপ্য?’ ওসমানী বললেন, ‘ওল্ড বয়, তুমি কি জান না বিপর্যয় থেকে তুমি দেশকে রক্ষা করেছ।’ এ কথার অর্থ তিনি বুঝলেন না, নিশ্চুপ রইলেন। ওসমানীর সঙ্গে ফোনে আলাপ করে হলরুমে ফিরে দেখলেন কর্নেল এমএ মনজুরকে। তাকে দেখে তিনি অবাক হলেন। নয়াদিল্লীতে তখন তিনি প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, তাকে সেখানে শফিউল্লাহ আশা করেননি। তার প্রশ্নের জবাবে মনজুর জানালেন, তিনি কিছুক্ষণ আগে ঢাকায় ফিরেছেন। শফিউল্লাহ জানতে চাইলেন, কে তাকে ঢাকা আসতে বলেছে? তিনি জানালেন, খবর পেয়েই তিনি ছুটে এসেছেন। খবর পেয়ে তিনি দিল্লী থেকে ঢাকা এলেন কিভাবে যেখানে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। যখন ‘অপারেশন সিলভার লাইনিং’ চলছে তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে যশোর গ্যারিসন থেকে মনজুরকে অপসারণ করা হয়। শফিউল্লাহ তখন দিল্লীতে তার পোস্টিং দেন। এ কারণে মনজুর বঙ্গবন্ধু ও শফিউল্লাহর ব্যাপারে অসন্তুষ্ট ছিলেন। মনজুরের সঙ্গে কথা শেষ করলেন। তখনই মেজর ফারুক এসে দাঁড়ালেন, বললেন, ভারতীয় সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ করা হচ্ছে। শফিউল্লাহ জানতে চাইলেন, খবরের উৎস কী? ফারুক জানালেন, খবর বিশ্বস্ত সূত্রের। শফিউল্লাহ ফারুকের কথার সঙ্গে সকালে জিয়ার সঙ্গে আলাপের প্রতিফলন পেলেন। ফারুকের কথা শুনে তিনি বুঝলেন, ফারুক তার নজর আসল ঘটনা থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন। ফারুককে তিনি নির্দেশ দিলেন খালেদ মোশাররফকে তা জানাতে। সম্মেলন কক্ষে ঢুকে শফিউল্লাহ দেখলেন মোশতাকের সঙ্গে মনজুর গভীর আলোচনায় মগ্ন। তার মনে হলো, আগে থেকেই মনজুর এ ঘটনা জানতেন, না হলে তার পক্ষে এই সময় ঢাকায় থাকা সম্ভব নয়। জিয়াও সকাল থেকে তার সঙ্গে নমনীয় ও শ্রদ্ধাপূর্ণ ব্যবহার করছেন। সকালে জিয়া যখন তার বাসায় আসেন তখন ফিটফাট হয়ে সরকারী গাড়িতে এসেছেন। একই সময় খালেদ এসেছেন রাতের পোশাক পরে নিজের গাড়িতে। মোশতাকের শপথ অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর খালেদ এসে জানালেন, সাভারে রক্ষীবাহিনীর ক্যাম্পে সিরিয়াস ঘটনা ঘটেছে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর খবর পেয়ে একজন রক্ষী আত্মহত্যা করেছেন। সেখানে এখন টানটান উত্তেজনা। ফারুক, রশীদ, ডালিম মোশতাককে পরামর্শ দিলেন শফিউল্লাহকে সাভার পাঠাতে। খন্দকার মোশতাক রক্ষীবাহিনীর সঙ্গে আলোচনার জন্য শফিউল্লাহকে সাভার যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। শফিউল্লাহর সাভার যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। তিনি বিডিআর প্রধান ব্রিগেডিয়ার খলিলুর রহমানকে নিয়ে সাভার গেলেন। প্যারেড গ্রাউন্ডে রক্ষীবাহিনীকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানালেন। ফের বঙ্গভবনে ফিরে শুনলেন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামানকে গ্রেফতার করে বঙ্গভবনে আনা হয়েছে। মোশতাক তাঁদের বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু সরকারকে ফবহড়ঁহপব করতে। এবং মোশতাকের কেবিনেটে যোগ দিতে। তাঁরা রাজি হননি। মনসুর আলীকে দুদিন ধরে চাপে রাখা হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর পদের অফার দেয়া হয়। তিনি নতিস্বীকার না করে একটি কথাই বলেছেন, খারাপ হোক ভালো হোক তাঁরাও এসবের জন্য দায়ী। বঙ্গবন্ধুকে একা দোষ দিলে চলবে না। মন্ত্রিসভায় তাঁরাও ছিলেন। He asserted that we all should have the courage to accept this fact. মোশতাককে তিনি আরো বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় তিনিও ছিলেন। তাঁদের জেলে পাঠানো হয়। আবদুস সামাদ আজাদকেও। কারণ তাজউদ্দীন মোশতাককে সরিয়ে আজাদকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করেছিলেন। মোশতাক তা ভোলেননি। বঙ্গবন্ধুর সরকারের অনেককে মন্ত্রী বানালেন মোশতাক। তাদের শপথ অনুষ্ঠান হলো। এ ধরনের অনুষ্ঠানে সবাই সস্ত্রীক আমন্ত্রিত হয়। তখন সে ধরনের আমন্ত্রণ সম্ভব ছিল না; কিন্তু মেজর রশীদের বউ ছিলেন। ‘who was quite active and prominent on that occasion. ওইদিন শফিউল্লাহ মোশতাকের কাছে জানতে চাইলেন, বঙ্গবন্ধুকে কোথায় সমাহিত করা হবে। সংসদ চত্বরে নাকি তিন নেতার কবরে? তবে তার প্রস্তাব সংসদ চত্বরে সমাহিত করার। এ কথা শুনে মোশতাক ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, ‘প্রতিদিন কত লোক মারা যায়, সবার ব্যবস্থা আমাকে করতে হবে। ঢাকা ছাড়া যেখানে খুশি কবর দাও।’ শফিউল্লাহ ও খোন্দকার তাঁকে টুঙ্গিপাড়া সমাহিত করার বন্দোবস্ত করলেন। শফিউল্লাহ লিখেছেন, এ প্রস্তাব যা তিনি খোলা মনে করেছিলেন, আজ সে প্রস্তাব করার জন্য তার দুঃখ হয়। এ প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুর পিতা মারা গেছেন। বঙ্গবন্ধু নৌপথে যাবেন টুঙ্গিপাড়া, ভারাক্রান্ত মনে তারা পাগলাঘাটে গেছেন তাঁকে বিদায় জানাতে। সেখানে মোশতাক উচ্চৈঃস্বরে কাঁদছিলেন। পরদিন তিন বাহিনীপ্রধান টুঙ্গিপাড়া গিয়েছিলেন জানাজা পড়তে। খোন্দকার মোশতাককে মনে হলো তিনি শোকাহত। এ সেই মোশতাক আগের দিন যার ব্যবহার ছিল অন্যরকম। “It was sad to see that an immoral person like Khandaker Moshtaque became a close associate of Bangabandhu! চলবে...
×