ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সিলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের গোলবন্যা

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

বার্সিলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদের গোলবন্যা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একই রাতে জ্বলে উঠলেন ‘বিবিসি’ ও ‘এমএসএন’। আর তাতেই প্রতিপক্ষকে গোলবন্যায় ভাসিয়েছে দুই স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা। রবিবার রাতে স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে বার্সিলোনা ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত করে দশজনের এ্যাথলেটিক বিলবাওকে। নুক্যাম্পে কাতালানদের হয়ে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করেন উরুগুইয়ান তারকা লুইস সুয়ারেজ। একটি করে গোল করেন এমএসএন ত্রয়ীর অপর দুই সদস্য লিওনেল মেসি ও নেইমার। বার্সার অপর গোলটি করেন মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচ। রিয়াল মাদ্রিদ ৫-১ গোলে উড়িয়ে দেয় স্পোর্টিং গিজনকে। সান্টিযাগো বার্নাব্যুতে গ্যালাক্টিকোদের হয়ে দু’টি করে গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও করিম বেনজেমা। অপর গোলটি করেন বিবিসি ত্রয়ীর আরেক সদস্য গ্যারেথ বেল। দুই পরাশক্তির গোলবন্যার রাতে সহজ জয় পেয়েছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও। এ্যাওয়ে ম্যাচে লাস পালমাসকে ৩-০ গোলে হারায় দিয়াগো সিমিওনের দল। বিজয়ী দলের ফরাসী তারকা এ্যান্টোনিও গ্রিয়েজম্যান করেন জোড়া গোল। এই জয়ে ২০ ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার শীর্ষে এ্যাটলেটিকো। সমান ম্যাচে ৪৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রিয়াল। এক ম্যাচ কম খেলা বার্সিলোনার সংগ্রহ ৪৫ পয়েন্ট, অবস্থান দ্বিতীয়। পঞ্চমবারের মতো ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার ব্যালন ডি’অর জয়ের পর প্রথমবার বার্সার মাঠ ন্যুক্যাম্পে খেলেছেন লিওনেল মেসি। ম্যাচ শুরুর আগে প্রায় ৭০ হাজার দর্শকের সামনে ট্রফিটি উঁচিয়ে ধরেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। এ সময় গ্যালারির দর্শকরা দাঁড়িয়ে মেসিকে সম্মান জানান। প্রিয় তারকাকে শুভেচ্ছা জানাতে মেসিকে উদ্দেশ করে লেখা ছিল ‘শুভেচ্ছা লিও’। বার্সা ডায়মন্ড ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখেন শুরুতেই গোল করে। তবে পরবর্তীতে তিনি চোট পান। কাতালান শিবিরে দুশ্চিন্তা ভর করে। এ কারণে ৪৫ মিনিটে তাকে তুলে নেন কোচ লুইস এনরিকে। ম্যাচ শেষে বার্সিলোনার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডান পায়ের পেশীতে কিছুটা ব্যথা অনুভব করেছিলেন মেসি। তাই বিরতির পর তাকে আর মাঠে নামানো হয়নি। এ প্রসঙ্গে এনরিকে বলেন, মেসির চোট পরীক্ষা করা হবে। তার ওপর একটু বেশি চাপ পড়েছে। এই অবস্থায় ঝুঁকি নেয়াটা ঠিক হতো না। আমি কাউকে নিয়েই ঝুঁকি নিতে চাই না। মেসির চোট গুরুতর নয় বলেই আমাদের বিশ্বাস। ম্যাচের সপ্তম মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিক বার্সা। অতিথি বিলবাওয়ের গোলরক্ষক গোর্কা ইরাইসোসকে কাটিয়ে গোল করতে চলেছিলেন সুয়ারেজ। তবে পারেননি, ইরাইসোস ফাউল করায় মাটিতে পড়ে যান উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার। তাতে অবশ্য ক্ষতি হয়নি স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নদের। বার্সা পেনাল্টি তো পেয়েছেই, লালকার্ড দেখে বেরিয়ে যেতে হয়েছে ইরাইসোসকে। বদলি গোলরক্ষক ইয়াগো হেরেরিনকে ঠা-া মাথায় পরাস্ত করে দলকে এগিয়ে দিতে সমস্যা হয়নি মেসির। ৩১ মিনিটে বার্সার দ্বিতীয় গোলেও বড় অবদান সুয়ারেজের। তার পাস থেকেই মৌসুমের ১৯ নম্বর গোলের আনন্দে মেতে ওঠেন নেইমার। বিরতির পর হ্যামস্ট্রিং সমস্যার কারণে মাঠে নামেননি মেসি। তবে তাতে গোলজোয়ার থেমে যায়নি। ৪৭, ৬৮ ও ৮২ মিনিটে সুয়ারেজের তিন গোল বিশাল জয় উপহার দেয় বার্সিলোনাকে। মাঝে ৬২ মিনিটে অপর গোলটি করেন ইভান রাকিতিচ। ১৮ গোল নিয়ে সুয়ারেজই এখন লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতা। নতুন কোচ জিনেদিন জিদানের অধীনে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জ্বলে উঠে গোল পেয়েছেন বিবিসি। জিদানের অধীনে প্রথম দুই ম্যাচে রিয়াল প্রতিপক্ষের জালে গোল করেছে ১০টি। দারুণ ছন্দে থাকা আক্রমণভাগের নৈপুণ্যে প্রথম ১৮ মিনিটেই ৪-০ গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ঘরের মাঠের এই ম্যাচে রিয়ালের গোল উৎসবের শুরু সপ্তম মিনিটে। টনি ক্রুসের কর্নারে হেডে দলকে এগিয়ে নেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা গ্যারেথ বেল। গত সপ্তাহে লা করুনার জালে হ্যাটট্রিক করা ওয়েলসের এই ফরোয়ার্ডের শেষ আট ম্যাচে এটি ১১ নম্বর গোল। লীগে এই মৌসুমে তার গোল হলো ১৩টি। দুই মিনিট বাদে করিম বেনজেমার দুর্দান্ত পাসে প্রায় ১৬ গজ দূর থেকে জোরালো হাফ ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন রোনাল্ডো। ১২ মিনিটে বেলের দারুণ ক্রসে চমৎকার সাইড ভলিতে গোল করেন বেনজেমা। ১৮ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোলে রিয়ালের জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলেন সি আর সেভেন। চলমান লীগে রোনাল্ডোর এটা ১৬ নম্বর গোল। ম্যাচের ৪১ মিনিটে বেনজেমা দ্বিতীয় ও রিয়ালের হয়ে পাঁচ নম্বর গোল করেন। এটি ছিল রিয়ালের জার্সিতে সবধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বেনজেমার ৩০০ নম্বর ম্যাচ। ম্যাচটিতে জোড়া গোল করে স্মরণীয় করে রাখেন ফরাসী তারকা। বিরতির পর ৬২ মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে স্পোর্টিং গিজন। পাল্টা আক্রমণে গোলটি করেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ইসমায়েল লোপেজ। এর পরের মিনিটেই চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান বেনজেমা। একই কারণে আগেই মাঠ ছাড়েন বেল।
×