ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, আজ শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস, আজ শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যেতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। তার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ বৈঠক করে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন শিক্ষকরা। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে খুব ইতিবাচক মনে হয়েছে। তিনি বলেছেন, তিনি শিক্ষকদের দাবিগুলো বিষয়ে দেখবেন। এজন্য তিনি শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। দাবি পূরণ না হলেও প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের ওপর ভর করেই ক্লাসে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ফেডারেশনের অনেক নেতা। তবে দাবি পূরণের ঘোষণা না আসায় হতাশাও প্রকাশ করেছেন অনেক শিক্ষক। জানা গেছে, শিক্ষকদের ৩ নম্বর গ্রেড থেকে ১ নম্বর গ্রেডে উন্নীতের জন্য পদোন্নতির সোপান তৈরির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ১ নম্বর গ্রেডে যেতে অন্যান্য দাবি-দাওয়াও বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন। এদিকে টানা আট দিন ধরে শিক্ষক আন্দোলনে পুরোপুরি অচল হয়ে আছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবারও কর্মবিরতি পালন করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া দেশের ৩৭ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা কর্মবিরতির সঙ্গে পালন করেছেন অবস্থান ধর্মঘট। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক চলছিল। এ বৈঠকে শিক্ষকদের প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক কোন সিদ্ধান্ত দিতে পারেন বলে আশা করছেন শিক্ষকরা। এদিকে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো শর্তহীনভাবে বেতন কাঠামো কার্যকর করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের মতো সর্বাত্মক ধর্মঘটে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এমপিওভুক্ত বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা। সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন গণভবনে বৈঠকের আগে আন্দোলনরত বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষক নেতাদের দাওয়াত দিয়েছেন। সেখানে তার মাধ্যমে একটা কিছু ঘোষণা আসতে পারে বলে তারা আশা করেন। সকালে ঢাবি ক্যাম্পাসে কর্মবিরতি পালনকালে গণভবনে পিঠা উৎসবে দাওয়াতের মধ্য দিয়ে বরফ গলতে শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এ দাওয়াত থেকে ভাল কিছু হতে পারে বলে আশা শিক্ষার্থীদেরও। সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ধরছি না যে এ ব্যাপারে আলাপ হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলে আমরা সব সময় বলতে প্রস্তুত। এ দাওয়াতের মাধ্যমে বরফ গলতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে না পারলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যেভাবে কাজ চলছে, আশা করছি দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে। তাহলে শিক্ষকেরা দাবি-দাওয়া থেকে পিছিয়ে আসছেন কী না? জানতে চাইলে এ শিক্ষক নেতা বলেন, দাবি-দাওয়া থেকে পিছিয়ে আসা নয়। হয়তো পথ ভিন্ন হতে পারে। রবিবার সন্ধ্যায় শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইনের কাছে একটি প্রস্তাব দেন শিক্ষক নেতারা। যেখানে বলা হয়েছে, সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট অধ্যাপকের মধ্য থেকে ৫ শতাংশকে ডিস্টিংগুইশড (বিশিষ্ট) অধ্যাপক করতে হবে। এ পদের মূল বেতন হবে জ্যেষ্ঠ সচিবের সমান। একই সঙ্গে আগের মতো মোট অধ্যাপকদের মধ্য থেকে ২৫ শতাংশকে গ্রেড-১ করারও প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, সবাই মিলেমিশে সমাধানের চেষ্টা চলছে, যাতে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং শিক্ষকদের মর্যাদাও অক্ষুণœ থাকে।
×