ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পাল সম্রাট ধর্মপালের নিদর্শনের সন্ধান ॥ দর্শনার্থীর ঢল

প্রকাশিত: ০৪:২৭, ১৯ জানুয়ারি ২০১৬

পাল সম্রাট ধর্মপালের নিদর্শনের সন্ধান ॥ দর্শনার্থীর ঢল

তাহমিন হক ববী, নীলফামারী ॥ এই প্রথম প্রতœতত্ত্বের নিদর্শনের সন্ধান পেলেন প্রতœতত্ত্ব সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়। নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গড় ধর্মপাল ইউনিয়নের পূর্ব খেরকাটি গ্রামে নিদর্শনের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনদিন থেকে খনন কাজ শুরু করার পর সোমবার পাল সম্রাট ধর্মপালের প্রতœতত্ত্বের সন্ধান মেলে। এছাড়াও খনন এলাকা থেকে দুই শত গজ দূরে সবুজপাড়ায় আরেকটি প্রতœতত্ত্বের সন্ধান মিলেছে। যার খনন কাজ আর কিছুদিনের মধ্যে শুরু করা হবে। প্রতœতত্ত্ব নিদর্শনের সন্ধান মেলায় সেখানে নেমে আসে হাজারো মানুষের ঢল। উৎসুক জনতা এক নজর দেখার জন্য অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে সেখানে ভিড় করছে। এর আগে এলাকাবাসীর আবেদনে স্থানটিতে ১৯৯০ সালে প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর খনন কাজ পরিচালনা করেছিল। কিন্তু তারা সফলতা পায়নি। এবার বিষয়টি হাতে নেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি। তার মন্ত্রণালয়ের পক্ষে খনন কাজ শুরু করায় এটির সফলতা প্রকাশ পেল। জানা যায়, পাল সম্রাট ধর্মপাল ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের বাংলা অঞ্চলের পাল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় শাসক। তিনি ছিলেন পাল রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের পুত্র ও উত্তরাধিকারী। তিনি পৈত্রিক রাজত্বের সীমানা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেন এবং পাল সাম্রাজ্যকে উত্তর ও পূর্ব ভারতের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেন। ধর্মপালের সুদীর্ঘ রাজত্বকালের (আনুমানিক ৭৮১Ñ৮২১ খ্রি.) সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ত্রিপক্ষীয় যুদ্ধ। উত্তর ভারতের মধ্যদেশে আধিপত্য বিস্তারের জন্য দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট এবং মালব ও রাজস্থানের গুর্জর-প্রতীহারদের সঙ্গে বাংলার পালগণ দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ললিতাদিত্য ও যশোবর্মণের বিজয়াভিযানের পর উত্তর ভারতের মধ্যমণি কনৌজে শূন্যস্থান পূরণের জন্য তিন শক্তির মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ধর্মপাল উত্তর ভারতীয় রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার মতো যথেষ্ট শক্তির অধিকারী বলে নিজেকে মনে করেন এবং এক্ষেত্রে তিনি কিছু সাফল্যও অর্জন করেন। পাল রাজা ধর্মপাল এবং প্রতীহার রাজা বৎসরাজের মধ্যে সংঘর্ষের মাধ্যমে ৭৯০ খ্রিস্টাব্দের দিকে ত্রিপক্ষীয় যুদ্ধের প্রথম পর্ব শুরু হয়। এতে প্রথমোক্তজনের পরাজয় ঘটে এবং পরে উভয়েরই অভিন্ন শক্র দাক্ষিণাত্য থেকে আগত রাষ্ট্রকূট রাজা ধ্রুব ধারা বর্ষের হাতে দুজনেই পরাজিত হন। সে সময় থেকে নীলফামারীর ওই স্থানটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। সেখানকার অবকাঠামো মাটির নিচে তলিয়ে যেতে থাকে। তার নাম অনুসারে এলাকাটির নাম গড় ধর্মপাল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। এদিকে চলমান খনন কাজে ধর্মপাল গড়ের দুর্গ প্রাচীরগুলো আবিষ্কার করে পূর্ণাঙ্গরূপ দিতে যাচ্ছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
×