ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাব্বিরের অলরাউন্ড নৈপুণ্য

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬

সাব্বিরের অলরাউন্ড নৈপুণ্য

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে প্রথম টি২০তে যেমনটি হয়েছে, দ্বিতীয় টি২০তেও তাই হয়েছে। সাব্বির রহমান রুম্মন ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটিং ঝলকে কোন পরিবর্তন ঘটেনি। দুইজনই আবারও ব্যাট হাতে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। আর সেই নৈপুণ্যে দলও ১৬৭ রানের লড়াকু ইনিংসও গড়তে পেরেছে। এবার তো বল হাতেও ঝলক দেখিয়েছেন সাব্বির। ২.১ ওভার বল করে ১১ রান দিয়ে একাই ৩ উইকেট নিয়েছেন। হ্যামিল্টন মাসাকাদজা, রিচমন্ড মুটুমবামি ও গ্রায়েম ক্রেমারের উইকেট নেন সাব্বির। প্রথম টি২০তে ৪৬ রান করেছিলেন সাব্বির। এবার দ্বিতীয় টি২০তে অপরাজিত ৪৩ রান করেছেন। ৩০ বলে ১টি চার ও ৩টি ছক্কা মেরে এ রান করেছেন সাব্বির। ওয়ানডাউনে যে একজন যোগ্য ব্যাটসম্যানের অভাব ছিল, তা যেন দূর হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বোলার হিসেবেও নিজেকে উপস্থাপন করেন সাব্বির। সাকিব তো সবসময়ই অনন্য। ব্যাট ও বল হাতে সবসময়ই উজ্জ্বল। যখন প্রতিপক্ষ দলটি জিম্বাবুইয়ে, তখন সাকিব তো ‘যম’ হয়ে ওঠেন। তাই প্রমাণ হচ্ছে আবারও। প্রথম টি২০তে ব্যাট হাতে অপরাজিত ২০ রান করে দলকে জেতানোর পর দ্বিতীয় টি২০তেও অপরাজিত ২৭ রান করেছেন। মাঝখানের ব্যাটিংয়ে সাকিব যে কতটা ভরসাবান ব্যাটসম্যান তার প্রমাণ আবারও দিচ্ছেন। ১৭ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় এ ২৭ রান করেছেন সাকিব। শুরুতে তামিম ইকবাল (২৩) ও সৌম্য সরকার (৪৩) দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন। এরপর আহত হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে মুশফিকুর রহীমও (২৪) অসাধারণ ব্যাট করেন। তবে সাব্বির যে একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকেন এবং শেষে গিয়ে রানের গতি আরও বাড়িয়ে দেন সাকিব, সেটিই দলের সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে। প্রথম টি২০তে দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ৪৬ রান করার পর নিজের ব্যাটিং নিয়ে সাব্বির বলেছিলেন, ‘আমি এর আগেও টি২০তে তিনে ব্যাটিং করে সফলতা পেয়েছি। আমি চেষ্টা করছি তিনে ব্যাট করার জন্য। পেস বোলিং ফেস করার জন্য। মিডলে স্পিন বল খেললে তখন ফ্রি থাকব। এ রকম প্ল্যান আমার তিনে খেলার।’ নৈপুণ্যও দেখানোর কথা বলেছিলেন সাব্বির। আর যেভাবে হোক দলের জয়ই মুখ্য বলে জানিয়েছিলেন। আর ৪ রানের জন্য অর্ধশতক করতে না পারার আক্ষেপও নেই সাব্বিরের। দলের জয়ই যে আসল কথা। তাহলে তো দ্বিতীয় টি২০তে ৭ রানের জন্য যে অর্ধশতক করতে পারেননি, তাতেও হতাশ নন সাব্বির। আগেই আক্ষেপ না থাকার কথা বলে দিয়েছিলেন, ‘এ রকম কোন আক্ষেপ আমার নেই। হাফসেঞ্চুরি কিংবা সেঞ্চুরি করব। সব সময়ই চাই টিম জিতুক। যেন আমি দলের জন্য ভাল একটা কন্ট্রিবিউশন করতে পারি সেটাই লক্ষ্য আমার।’ সেই কন্ট্রিবিউশনটা এবারও ভালভাবেই করেছেন সাব্বির। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে চার ম্যাচের টি২০ সিরিজ শুরুর আগে গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলেছিলেন সাকিব। যেমনটি বরাবরই বলে থাকেন। সবসময়ই বাস্তব কথা বলেন সাকিব। এবারও তাই বলেছিলেন, ‘লক্ষ্য ভাল পারফর্ম করা, দলকে জেতাতে সাহায্য করা, জয়ে অবদান রাখা। চ্যালেঞ্জটা আমাদের ক্রিকেটারদেরও আছে যে কিভাবে উন্নতি করা যায়, কিভাবে আগের দিনের চেয়ে আরও ভাল করা যায়।’ সবকিছুর উর্ধে জয়টাকেই গুরুত্ব দিয়েছিলেন সাকিব। বলেছিলেন, ‘জেতাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। জিততে থাকলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। চেষ্টা থাকবে জিততে থাকা ও একইসঙ্গে উন্নতি করতে থাকা। কারণ সামনে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দুটি টুর্নামেন্ট। এই সিরিজটা আসাদের সুযোগ দলীয়ভাবে এবং ব্যক্তিগতভাবেই পারফর্ম করে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেয়ার। আমাদের বোলিং আক্রমণ অনেক ভাল, বোলারদের ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি। গত বছর দেখেছি ভাল উইকেটে খেললে আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভাল করে। আমরা ম্যাচজয়ী সংগ্রহের কথাই চিন্তা করব।’ সেই কাজ করে যাচ্ছেন সাকিব। সঙ্গে সাব্বিরও দেখাচ্ছেন ব্যাটিং ঝলক। দ্বিতীয় টি২০তে দেখালেন বোলিং ঝলকও। প্রথম টি২০তে ২ ওভার বল করে ১৬ রান দিয়ে কোন উইকেট পাননি। এবার অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখালেন সাব্বির। তার নৈপুণ্যে বাংলাদেশও অনায়াসে জয় পেল।
×