ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

না’গঞ্জে এক পরিবারের পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যা

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

না’গঞ্জে এক পরিবারের পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা না’গঞ্জ ॥ নারায়ণগঞ্জে বাবুরাইলে একটি ফ্ল্যাটে ঢুকে দুই শিশু ও দুই নারীসহ একই পরিবারের পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার রাত পৌনে দশটার দিকে ওই বাসা থেকে পুলিশ তাদের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহতরা হলেন তাসলিমা (৪০), তাঁর ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলিমার জা লামিয়া (২৫) ও তাসলিমার ভাই মোরশেদুল (২৫)। ঘটনাস্থলে উপস্থিত তসলিমার ননদ হাজেরা বেগম নিহতের নাম পরিচয় নিশ্চিত করেন। রাত বারোটার দিকে সিআইডির একটি টিম ঢাকা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত লামিয়ার স্বামী শরীফ মিয়াসহ দুজনকে আটক করেছে। নিহত তাসলিমার খালাত বোন নয়নতারা জানান ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ভেলাবাড়ি গ্রামে তাসলিমাদের বাড়ি। বাবার নাম বারেক মিয়া। শুক্রবার বিকেলে তাসলিমার ভাই মোরশেদুল বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসে। মা মুর্শিদা বেগম রাতে বেশ কয়েকবার ফোন করেও তাদের খবর পাচ্ছিলেন না। সকালে নারায়ণগঞ্জে থাকা তাদের আত্মীয়দের তাসলিমাদের বাসায় গিয়ে খবর নিতে বলেন। দুপুরের পরে স্বজনদের কয়েকজন ওই বাসায় গিয়ে দরজায় তালা দেখে ফিরে আসেন। সন্ধ্যায় ঘর থেকে গন্ধ বের হলে এলাকাবাসী আত্মীয় ও পুলিশকে খবর দেয়। রাত আটটায় পুলিশ তালা ভেঙ্গে ঘরে ঢোকে। দেখতে পায় তাসলিমার ছেলে শান্ত বিছানায় ও নিচে সুমাইয়াসহ কয়েকজনের লাশ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। পাশের ফ্ল্যাটের বাসিন্দা রহিমা খাতুন জানান, আগের রাত দশটা পর্যন্ত তারা তাসলিমাদের ফ্ল্যাটে লোকজনের যাওয়া-আসা ও কথাবার্তার শব্দ শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু কোন চিৎকার-চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পাননি। নয়নতারার স্বামী মিলন জানান, নিহত মোরশেদুলের সঙ্গে সুদের টাকা নিয়ে ঢাকার একটি পক্ষের বিরোধ ছিল। ওই বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। নিহত তাসলিমার স্বামী শাহীন ঢাকায় একটি প্রাইভেট গাড়ির চালক। সে পলাতক নাকি কর্মস্থলে রয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের এসপি খন্দকার মহিদ উদ্দিন, র‌্যাব-১১-এর সিও আনোয়ার লতিফসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন। তবে পুলিশ, র‌্যাব ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়া কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর ওবায়েদউল্লাহ জানান, এককক্ষে দুটি এবং অন্য কক্ষে ৩ জনের লাশ তিনি দেখেছেন। প্রতিটি লাশই ছিল রক্তাক্ত। এলাকাবাসী জানান, নারায়ণগঞ্জ নগরের উত্তর প্রান্তে ২ নম্বর বাবুরাইল এলাকার পাঁচতলা একটি বাড়ির নিচ তলায় এ পরিবারটি ভাড়া থাকত। শনিবার রাত দশটার দিকে ওই বাসার সামনে গিয়ে দেখা যায় বাসাটি পুলিশ ঘিরে রেখেছে। পুলিশ ছাড়া ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছিল না। তখন বাসার সামনে কয়েক শ’ উৎসুক মানুষের ভিড় দেখা যায়। নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ শাহজালাল বলেন, ওই পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তবে কী কারণে কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
×