ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রোকাইয়া হাসিনা নিলির গানে মুগ্ধ আইজিসিসির শ্রোতা

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

রোকাইয়া হাসিনা নিলির গানে মুগ্ধ আইজিসিসির শ্রোতা

গৌতম পাণ্ডে ॥ অনুষ্ঠানের শুরুটা ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে’ গানটি দিয়ে। শ্রোতা শুরুতে এ গানটির প্রত্যাশা না করলেও রোকাইয়া হাসিনা নিলি তার সুরেলা কণ্ঠে অতি যতœ করে গানটি পরিবেশন করেন। এ গানটি বেশিরভাগ পরিবেশন করা হয় কোন বিয়োগান্তক মুহূর্তে। গুলশানের ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পী রোকাইয়া হাসিনা নিলি একে একে বেশকিছু রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ করেন। শিল্পীর একক গানের এ আয়োজন করে ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। শিল্পীর পরিবেশনায় কয়েকটি হারানো দিনের বাংলা গানও ছিল। শুরুতে শিল্পী নিজেই বলেছিলেন, আমি মূলত রবীন্দ্রসঙ্গীতেরই শিল্পী, সখের বসে কোন কোন সময় বাংলা গানও করি। আজ আপনাদের সেখান থেকে কিছু বাংলা গানও শোনাব। শিল্পীর দ্বিতীয় পরিবেশনা ছিল পূজা পর্যায়ের ‘আরো আরো প্রভু আরো আরো’ গানটি। পরে ‘ভগ্নহৃদয়’ গীতিনাট্যে ব্যবহৃত ‘সখী ভাবনা কাহারে বলে’ গানটি পরিবেশন করেন। রবীন্দ্রনাথ ৬৮ বছর বয়সে লিখেছিলেন প্রেম পর্যায়ের গান ‘কাঁদালে তুমি মোরে ভালবাসারই ঘায়ে’। শিল্পী রোকাইয়া হাসিনা নিলি খুব যতœ নিয়ে শোনালেন এ গান। তার পরের পরিবেশনা ছিল ‘আহা তোমার সঙ্গে প্রাণের খেলা’। কবিগুরুর কোন কোন গানে পাশ্চাত্য সুরের আভাস পাওয়া যায়। তেমনই সুরের গান ‘আমি চিনি গো চিনি তোমারে ওগো বিদেশিনী’। গানটি পরিবেশনার সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই সুর মেলাতে লাগলেন। এর পরের পরিবেশনা ছিল ‘অনেক দিনে আমার এ গান আমার কাছে ফিরে আসে’। ভানু সিংহের পদাবলী থেকে ‘গহন কুসুম কুঞ্জ মাঝে’ গানটি অসাধারণ লাগছিল শিল্পীর কণ্ঠে। শিল্পী ফিরে এলন প্রকৃতি পর্যায়ের গানে। সুরেলা কণ্ঠে শোনালেন ‘রোদন ভরা এ বসন্তে’। রবীন্দ্রনাথের ৬১ বছর বয়সে লেখা ‘যতক্ষণ তুমি আমায় বসিয়ে রাখো বাহির পানে’ কীর্তন অঙ্গের এ গানটিও সকলকে মুগ্ধ করে। এরপর আসলেন বাউল অঙ্গের গানে। ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙা মাটির পথ আমার মন ভুলায় রে’ গানটির সঙ্গে প্রায় সবাই সুর মেলালেন। এরপর গেয়ে শোনান রবীন্দ্রসঙ্গীতের স্বদেশ পর্যায়ের গান ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে’। এরপর শিল্পী তার পছন্দের কিছু হারানো দিনের বাংলা গান পরিবেশন করলেন। গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের লেখা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সুরে ‘এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যায় একি বন্ধনে জড়ালেগো বন্ধু’ গানটি পরিবেশনের সঙ্গে সঙ্গে মিলনায়তন ভর্তি শ্রোতাদের মধ্য থেকে গানের অনুরোধ আসতে শুরু করে। শিল্পী বিনয়ের সহিত বলেন, আমি হারানো দিনের বাংলা এসব গান শুধুমাত্র আমার মনের সখের জন্য করি। পরের পরিবেশনা ছিল ‘তুমি যে আমার’ ও উৎপলা সেনের গাওয়া ‘পাখি আজ কোন সুরে গায়’। রবীন্দ্রনাথের ‘দূরে কোথায় দূরে’ গানটি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শিল্পী রোকাইয়া হাসিনা নিলির একক এ গানের আসর। শিল্পীর গানের সঙ্গে তবলা বাজান সুবীর ঘোষ, কী বোর্ডে ছিলেন বিনোদ রায়, এসরাজে অসিত বিশ্বাস ও গিটারে ছিলেন মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন।
×