ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কালিহাতীতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিভক্ত আ’লীগ

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

কালিহাতীতে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিভক্ত আ’লীগ

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ জেলার কালিহাতীতে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম পর্যায়ে উঠেছে। বিভক্ত হয়ে পড়েছে দলীয় নেতাকর্মীরা। অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর কালিহাতীতে আওয়ামী লীগের কোন্দল প্রকট হয়ে উঠেছে। তার প্রভাব পড়েছে পৌর নির্বাচনে। লতিফ সিদ্দিকীর অনুপস্থিতিতে দলের নেতৃত্ব নিয়ে দেখা দিয়েছে দ্বন্দ্ব। এছাড়া দলীয় সমন্বয়হীতা, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর নিষ্ক্রয়তা ও পুলিশ প্রশাসনের বৈরী আচরণের কারণেও আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী আনছার আলী বিকম হেরেছেন বলে মনে করেন দলের নেতাকর্মীরা। টাঙ্গাইলের আটটি পৌরসভায় ৭টিতেই আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী জয় পেলেও শুধু কালিহাতীতে নেতাদের বিভক্তির কারণে নৌকার পরাজয় হয়েছে। এখানে আগামী সংসদ উপ-নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে দলীয় নেতাকর্মীরা। পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মেয়র মনোনয়ন পান দলের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী বিকম। মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন হুমায়ুন খালিদ। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডুর সঙ্গে উপ-নির্বাচনে এমপি প্রার্থী সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল হাজারীর রয়েছে চরম বিরোধ। দলের সাধারণ সম্পাদক আনছার আলী সভাপতির অনুসারী। এ কারণে সোহেল হাজারীর সঙ্গে একটা দূরত্ব রয়েছে। এছাড়াও সোহেল হাজারী উপ-নির্বাচনে এমপি মনোনয়ন পাওয়ায় ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ বিরাজ করছে ঠান্ডুর অনুসারীদের মধ্যে। উপ-নির্বাচনে সোহেল হাজারীর পক্ষে ঠান্ডুর অনুসারীরা ওইভাবে কেউ মাঠে নামেনি। আদালতের নির্দেশে নির্বাচন আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রয়েছে। পৌর নির্বাচনে সুযোগ আসে সোহেল হাজারীর অনুসারীদের। তারা পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হুমায়ুন খালিদের পক্ষে কাজ করে বলে জানায়, আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মালেক তালুকদার বলেন, সবাই প্রকাশ্যে নির্বাচন করলেও ভেতরে ভেতরে ক্ষোভ ছিল। তার বহির্প্রকাশ ঘটেছে পৌর নির্বাচনে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নুরনবী সরকার জানান, কালিহাতীতে মোজাহারুল ইসলাম ঠান্ডু ও আনছার আলী দীর্ঘ এক যুগ ধরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ দখল করে রয়েছে। দলের মধ্যে ও সাধারণ জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতার অনেক ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া যারা মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়ে পাননি। তাদের সঙ্গে বৈঠকে না বসে সভাপতি একগুঁয়েমি করেছে। এটাও দলীয় প্রার্থীর হারের অন্যতম কারণে বলে তিনি মনে করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু বলেন, আমাদের প্রার্থীর অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল ছিল না। এছাড়া পুলিশ প্রশাসন আমাদের বিপক্ষে কাজ করেছে। স্থানীয় পুলিশের কয়েক অফিসার বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে। নাম প্রকাশ না করে বলেন, দলের অনেকেই বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় আমরা হেরেছি।
×